স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১২ আগস্ট : বৃহস্পতিবার রানীবাজার কর্মসূচিতে গ্রেপ্তার হওয়া কংগ্রেস কর্মীদের আনা সময় শাসক দলের দুর্বৃত্তরা মাঝপথে আক্রমণ সংঘটিত করেছে। কিন্তু সেই স্থানে পুলিশি ব্যবস্থা ছিল না। পুলিশের দায়িত্ব জ্ঞান হীনতার কারণে এ ধরনের আক্রমণ সংগঠিত হয়েছে। তাই জিরানিয়া পুলিশ আধিকারিকের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য আইনজীবীদের পরামর্শ নেওয়া হবে। পাশাপাশি এই ঘটনার জন্য কেবিনেটের একজন মন্ত্রী ষড়যন্ত্র করে বিরোধী দলের একটি কর্মসূচি ভেস্তে দেওয়ার জন্য আক্রমণ সংগঠিত করেছে।
সেই বিষয়টাও মুখ্যমন্ত্রীকে খতিয়ে দেখতে হবে। এবং এর জন্য সেই মন্ত্রী দায়ী নাকি মুখ্যমন্ত্রী দায়ী তা জানাতে হবে মুখ্যমন্ত্রীকে। যদি মুখ্যমন্ত্রী দায়ী হয়ে থাকেন তাহলে তাকে পদত্যাগ করতে হবে, আর নয় তো সেই মন্ত্রীকে মন্ত্রিসভা থেকে বরখাস্ত করতে হবে। শুক্রবার প্রদেশ কংগ্রেস ভবনে সাংবাদিক সম্মেলন করে এই কথা জানান প্রাক্তন বিধায়ক আশীষ কুমার সাহা। তিনি বলেন যারা এ ঘটনার সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে নাম দিয়ে মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ যদি তাদের গ্রেফতার না করে তাহলে কংগ্রেস হাত তুলে বসে থাকবে না। কংগ্রেস রাজ্যজুড়ে বৃহত্তর আন্দোলনে নামবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
ভারত জোড়া আন্দোলন সংগঠিত করার জন্য রাজ্যে যে কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে, তা নির্ধারিত দিনক্ষণ অনুযায়ী নির্ধারিত স্থানে অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু এর জন্য পুলিশ যদি অনুমতি না দেয় তাহলে আইন অমান্য আন্দোলন করা হবে। এর জন্য সংগ্রাম চলছে এবং আগামী দিনও চলবে। এমনটাই হুঁশিয়ারি দিলেন জাতীয় কংগ্রেসের সম্পাদিকা জারিতা লাইফ্রাং। তিনি বলেন, কংগ্রেস দেশকে ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্তি দিয়েছে, তাই কংগ্রেসের কাছে বিজেপি শাসন কিছু নয়। এর থেকেও মুক্তি দেবে বলে জানান তিনি। আরো বলেন রাজ্যে পুলিশকে ব্যবহার করে আইনশৃঙ্খলা অবনতি করছে শাসক দল বিজেপি। পুলিশের মর্যাদাটুকু পর্যন্ত তারা রাখতে চাইছে না। তাই বিজেপিকে হুশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন যদি কংগ্রেসকে ভাঙতে চায়, তাহলে বিজেপি নিজেই ভেঙ্গে গুড়িয়ে যাবে।
সারাদেশে ভারতজোড়ো আন্দোলন সংঘটিত করা হচ্ছে, একমাত্র ত্রিপুরা রাজ্যেই ভারতজোড় আন্দোলন কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে রাজ্য সরকার। এর তীব্র নিন্দা জানায় প্রদেশ কংগ্রেস। কারণ এটা গণতান্ত্রিক অধিকার খর্ব করা। মজলিশপুরে গত ৮ আগস্ট ভারতীয় আন্দোলন সংঘটিত করার জন্য পুলিশের কাছে অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু পুলিশের পক্ষ থেকে কোন অনুমতি পাওয়া যায়নি। পুলিশ জানিয়ে দেয় ৮, ৯ এবং ১০ আগস্ট শাসক দল বিজেপি’র কর্মসূচি রয়েছে। পরবর্তী সময় ১১ আগস্ট কর্মসূচি অনুমতি চাওয়া হয়। তখন পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয় বিষয়টি পরবর্তী সময় কংগ্রেসের নেতৃত্বেদের জানিয়ে দেওয়া হবে। পরে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয় ১৫ আগস্টের আগে কর্মসূচির অনুমতি এলাকায় দেওয়া হবে না। কিন্তু তারপরও কংগ্রেসের পক্ষ থেকে ভারতজোড়ো কর্মসূচি সংঘটিত করতে কংগ্রেস কর্মী সমর্থকরা রানীর বাজারে যায়। কিন্তু সেখানে পুলিশের বাধায় পরে কংগ্রেস কর্মী সমর্থকরা মিছিল করতে চাইলে পুলিশ গ্রেপ্তার করে নেয়। কিন্তু তারপরও পুলিশের সামনেই সমস্ত আক্রমণ সংঘটিত হয় বলে অভিযোগ তুলেন বীরজিৎ সিনহা। কিন্তু তাতে কংগ্রেস কর্মসূচি বন্ধ থাকবে না। আগামীকাল ১৩ আগস্ট বিশালগড়ে কর্মসূচি রয়েছে। এবং এটা মুক্তির সংগ্রাম, বিজেপি সরকারকে উৎখাত করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার লড়াই। এর জন্য কংগ্রেস পুরোপুরিভাবে প্রস্তুত রয়েছে। লড়াই ময়দান থেকে এক ইঞ্চি সরবে না। বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে গোটা রাজ্যে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে বলে জানান প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি।