স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১১ আগস্ট : আবারো বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মনের উপর আত্মঘাতী হামলা সংগঠিত হয় বৃহস্পতিবার। এবারের ঘটনা মজলিশপুর বিধানসভা কেন্দ্রের রাণীর বাজারে। এদিন ভারত জোড়ো আন্দোলনের পদযাত্রা করতে গিয়ে যুব মোর্চার কর্মীদের হাতে আক্রান্ত হয় ১১ জন কর্মী সমর্থক। বর্তমানে জিবি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন সহ ১০ কর্মী সমর্থক। এর মধ্যে রয়েছেন মহিলাও। গোটা বিধানসভা কেন্দ্র এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ, টি এস আর সহ আধা সামরিক বাহিনী।
পরিস্থিতি থমথমে। জানা যায়, ৯ আগস্ট মজলিশপুর বিধানসভা কেন্দ্রে শিষ্যকে টক্কর দিতে গুরু সুদীপ রায় বর্মনের ডাকে ভারত জড়ো আন্দোলন সংঘটিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু যুব মোর্চার মিছিল থাকায় পুলিশ কংগ্রেস নেতৃত্বদের অনুমতি দেয় নি। কিন্তু দুদিন বাদে বৃহস্পতিবার বিনা অনুমতিতে রানীবাজার এলাকায় যায় কংগ্রেস সমর্থকরা ভারত জোড়ো আন্দোলনের পদযাত্রা সংগঠিত করতে। পদযাত্রাটি রানীবাজার থেকে জিরানিয়া ব্লক চৌমুহনি পর্যন্ত সংগঠিত করা কথা ছিল। কিন্তু পদযাত্রা শুরু হওয়ার আগে পুলিশ বাধা দেয়। তাতে ক্ষুব্ধ হয়ে পড়ে কংগ্রেস কর্মী সমর্থকরা। কংগ্রেস কর্মী সমর্থকরা সাথে সাথে জাতীয় সড়ক অবরোধ করে তীব্র প্রতিবাদে শুরু করে। এদিকে সুদীপ রায় বর্মন বক্তব্য রেখে বললেন, দেশকে জুড়ে রাখতে এদিনের ভারত জোড়ো কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। যদিও কর্মসূচিটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল ৯ আগস্ট। কিন্তু পুলিশ শাসক দলের জন্য অনুমতি না দেওয়া কর্মসূচি অনুষ্ঠিত করা যায় নি। পুলিশ বলছে এলাকায় আইন-শৃঙ্খলার চরম অবন্নতি হয়ে আছে। তাই মিছিল সংঘটিত করা যাবে না। এটা গণতন্ত্রের জন্য মারাত্মক বলে জানান তিনি। এবং এই দিন পুলিশের জন্য বাধার মুখে পড়ায় পুলিশকে তুলোধনু করে বলেন, পুলিশের একটা অংশ বিজেপির গুন্ডাদের সাথে মিশে গণতন্ত্রের উপর আঘাত নামিয়ে আনছে। এর ঘৃণা জানায় কংগ্রেস। কিন্তু বিজেপি জেনে রাখা ভালো বেরিকেড করে মজলিশপুর এলাকায় কংগ্রেসকে আটকে রাখতে পারবে না।
এ ধরনের স্বৈরাচারী মানসিকতার প্রতিবাদ করে কংগ্রেস এলাকায় আন্দোলন সংগঠিত করে ছাড়বে। পাশাপাশি এই দিন তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন এভাবে আন্দোলন রুখতে পারবে না। কার কত শক্তি আছে তা আগামী দিনে দেখা যাবে। পাশাপাশি পুলিশের ভূমিকা নিয়ে আরো বলেন, পুলিশ যেভাবে নত হচ্ছে শাসক দলের কাছে তা চরম নিন্দা জনক। পুলিশ তার পোশাকের মর্যাদা পর্যন্ত করছে না বলে অভিমত ব্যক্ত করেন শ্রী বর্মন। অবশেষে কংগ্রেস কর্মী সমর্থকদের রাস্তা থেকে তুলে আগরতলা পুলিশ লাইনের উদ্দেশ্য নিয়ে আসার সময় পুলিশের সামনে অতর্কিত হামলা চালায় কংগ্রেস কর্মী সমর্থকদের উপর বিজেপি’র দুর্বৃত্তরা। তারপর বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মনের উপর অতর্কিত হামলা শুরু করে যুব মোর্চার কর্মী সমর্থক। চারদিক থেকে শুরু হয় ইট বৃষ্টি। প্রাণ রক্ষার্থে গাড়িতে উঠলেও পিছু ধাওয়া করে শাসক দলের দুর্বৃত্তরা। ভাঙচুর করা হয় সুদীপ রায় বর্মনের গাড়ি সহ কংগ্রেস কর্মী সমর্থকদের অন্যান্য গাড়ি গুলি পর্যন্ত। মাথায় গুরুত্ব আঘাত পান সুদীপ রায় বর্মন।
অন্যান্য কর্মী সমর্থক ও অল্প বিস্তারে আহত হন। তাদের উদ্ধার করে পুলিশ জিবি হাসপাতালে পাঠানো ব্যবস্থা করে। বর্তমানে জিবি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মণ। কংগ্রেসের পক্ষ থেকে পরবর্তী সময়ে অভিযোগ তোলা হয় এদিন পারলে কংগ্রেস পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারত। কিন্তু শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি সম্পন্ন করে ফিরতে চেয়েছিল কংগ্রেস নেতৃবৃন্দ এবং কর্মী সমর্থকরা। তখন হামলা চালায় বিজেপির দুর্বৃত্তরা বলে অভিযোগ। পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলা হয়, এদিন কংগ্রেস কর্মী সমর্থকদের কোন নিরাপত্তা দেয়নি পুলিশ। এস স্কটের মধ্যে প্রবেশ করে বিজেপি দুর্বৃত্তরা কংগ্রেস কর্মী সমর্থকদের মারধর করছে। পুলিশ দুর্বৃত্তদের গ্রেপ্তার করার কোন উদ্যোগ নেয় নি। কংগ্রেসের পক্ষ থেকে আরও অভিযোগ তোলা হয় এদিনের ঘটনা সম্পূর্ণ পরিকল্পিত। তাই জিরানিয়া এলাকায় কোন দোকানপাট খোলা ছিল না। এদিনের ঘটনায় ১১ জন কর্মী আহত হয়েছেন। তাদের বিজেপি দুর্বৃত্তরা নৃশংসভাবে মারধর করেছে। ভাঙচুর করেছে কর্মসূচির জন্য নেওয়া বহু ভাড়া গাড়ি। তাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা ত্যাগ করা হবে বলে জানান প্রাক্তন বিধায়ক আশীষ কুমার সাহা। ঘটনার খবর পেয়ে ছুঁটে যান কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি গোপাল রায় , সিপিআইএম এর প্রাক্তন মন্ত্রী পবিত্র কর । দুজনই বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মণের শারিরীক অবস্থার খোঁজ খবর নেন।