আগরতলা, ১৩ নভেম্বর (হি. স.) : প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আগামীকাল প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা-গ্রামীণ প্রকল্পে ত্রিপুরার গ্রামীণ এলাকার ১ লক্ষ ৪৭ হাজার ৮০৫ জন সুবিধাভোগীকে একই সঙ্গে গৃহ নির্মাণের জন্য প্রথম কিস্তির টাকা প্রদান করবেন। আগামীকাল দুপুর একটায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তিনি প্রথম কিস্তির ৪৮ হাজার টাকা সরাসরি সুবিধাভোগীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রদান করবেন। এটা ত্রিপুরার জন্য এক ঐতিহাসিক মাইলস্টোন বলে অভিহিত করেন উপমুখ্যমন্ত্রী জিষ্ণু দেববর্মা। আজ সন্ধ্যায় সচিবালয়ের সাংবাদিক সম্মেলনে সাথে তিনি প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (গ্রামীণ) রাজ্যে রূপায়ণ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন।
এদিন উপমুখ্যমন্ত্রী শ্রী দেববর্মা ত্রিপুরার ইতিহাসে গ্রামীণ আবাস যোজনায় এধরণের উদ্যোগ নেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রীকে রাজ্যের জনগণের পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, বর্তমান রাজ্য সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টার ফলেই ত্রিপুরা ও অসমের ক্ষেত্রে এই যোজনায় গ্রামীণ ঘর নির্মাণের সংজ্ঞা পরিবর্তন করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। তিনি জানান, আগামীকাল রাজ্যের ১ লক্ষ ৪৭ হাজার ৮০৫ জনের অ্যাকাউন্টে একসঙ্গে মোট ৭০৯ কোটি ৪৬ হাজার টাকা ঢুকে যাবে। এর ফলে ঘর নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত রাজমিস্ত্রী, কাঠমিস্ত্রী সহ অনেকেই আর্থিকভাবে উপকৃত হবেন। পাশাপাশি গ্রামীণ এলাকার অর্থনৈতিক ব্যবস্থাও স্বচ্ছল হবে বলে উপমুখ্যমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন।
তাঁর কথায়, ত্রিপুরার গ্রামীণ এলাকায় মোট ৬ লক্ষ ৯৭ হাজার পরিবার রয়েছে। ২০১১ সালের এসইসিসি সার্ভে অনুযায়ী ত্রিপুরার ২ লক্ষ ৮ হাজার পরিবার ঘর নির্মাণের নীতি নির্দেশিকার কারণে বাদ পড়ে যায়। বর্তমান রাজ্য সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টায় ঘর নির্মাণের নীতি নির্দেশিকার পরিবর্তন করেছে কেন্দ্রীয় সরকার এবং একসঙ্গে ১ লক্ষ ৫৯ হাজার ঘরের মঞ্জুরী দিয়েছে। সাথে তিনি যোগ করেন, ত্রিপুরা সরকার এছাড়াও অতিরিক্ত ২২ হাজার ৭৫৯ ঘরের জন্য কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের নিকট প্রস্তাব পাঠিয়েছে।
উপমুখ্যমন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় (গ্রামীণ) ঘর প্রদানের কাজটি ত্রিপুরা সরকার মিশন মুডে রূপায়ণ করছে। গত ৫ সেপ্টেম্বর এক দিনেই ১ লক্ষ ৫৯ হাজার সুবিধাভোগীকে ঘর প্রদানের প্রশাসনিক অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। জিও ট্যাগিং ও অনলাইন রেজিস্ট্রেশনও মিশন মুডে সম্পন্ন করা হয়েছে। সুবিধাভোগীদের সচেতন করার লক্ষ্যে কর্মশালারও আয়োজন করা হয়েছে। সুবিধাভোগীদের কি ডিজাইনের ঘর বানালে টেকসই হবে তার জন্য ডিজাইন অপশানও দেওয়া হয়েছে, দাবি করেন তিনি। তাঁর দাবি, ত্রিপুরায় ১ লক্ষ ৫৯ হাজার ঘর নির্মাণের জন্য প্রায় ২২০০ কোটি টাকা ব্যয় হবে। ফলে রাজ্যের গ্রামীণ এলাকায় অর্থনৈতিক ব্যবস্থারও উন্নতি ঘটবে। আজ সাংবাদিক সম্মেলনে তাঁর সাথে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী এবং গ্রামোন্নয়ন দফতরের অতিরিক্ত সচিব টি কে দেবনাথ উপস্থিত ছিলেন।