Friday, November 22, 2024
বাড়িজাতীয়মণিপুরে জঙ্গি হামলায় শহিদ বরিষ্ঠ সাংবাদিক-পুত্র আসাম রাইফেলসের কমান্ডিং অফিসার ও তার...

মণিপুরে জঙ্গি হামলায় শহিদ বরিষ্ঠ সাংবাদিক-পুত্র আসাম রাইফেলসের কমান্ডিং অফিসার ও তার স্ত্রী-পুত্র সহ সাত



ইমফল, ১৩ নভেম্বর (হি.স.) : মণিপুরে অতর্কিত জঙ্গি হামলায় আধা-সেনাবাহিনী ৪৬ নম্বর আসাম রাইফেলসের কমান্ডিং অফিসার ও তাঁর স্ত্রী-পুত্র সহ সাত জওয়ান শহিদ হয়েছেন। ঘটনা আজ শনিবার সকাল প্রায় দশটা নাগাদ চূড়াচাঁদপুর জেলার সিংঘাট মহকুমার এস সেখেন গ্রামে ভারত-মায়ানমার সীমান্তবর্তী ৪৩ নম্বর পিলারের কাছে সংঘটিত হয়েছে। আসাম রাইফেলসের কনভয়ের ওপর ‘কাপুরুষোচিত’ হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

 এছাড়া শোকের পাশাপাশি নিন্দা জানিয়েন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংহ। এদিকে সংগঠিত হামলার দায় এখনও কোনও জঙ্গি সংগঠন নেয়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, এর পিছনে মণিপুরের পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) বা এনএসসিএন-এর কোনও বিচ্ছিন্ন গোষ্ঠীর হাত থাকতে পারে।
প্রাপ্ত খবরে প্রকাশ, আজ সকালে কমান্ডিং অফিসার কর্নেল বিপ্লব ত্রিপাঠী মায়ানমার সীমান্তে তাঁর কর্তব্যস্থল কোয়পোস্ট থেকে কয়েকটি গাড়ির কনভয় নিয়ে ফেরার পথে এস সেখেন গ্রামের ঘন জঙ্গলাকীর্ণ এলাকায় আচমকা হামলা চালায় অজ্ঞাত জঙ্গি দল। এতে ঘটনাস্থলে শহিদ হন কমান্ডিং অফিসার কর্নেল বিপ্লব ত্রিপাঠী (৪০), তাঁর পত্নী অনুজা (৩৮) ও পুত্র আবির (৫) এবং কুইক রিঅ্যাকশন টিমের চার জওয়ান। এছাড়া আরও কয়েকজন জওয়ান আহতও হয়েছেন। হতাহতদের মরদেহ আগামীকাল সকালে বিশেষ বিমানে করে স্ব-স্বগৃহের উদ্দেশ্যে পাঠানো হবে বলে সরকারি সূত্রে জানা গেছে।


ঘটনার পর হতাহতদের নিকটবর্তী বেহিয়াং প্রাইমারি হেল্থ সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়। এদিকে হামলার খবর পেয়ে কয়েকটি স্নিপার ডগ নিয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং আসাম রাইফেলসের পদস্থ আধিকারিক ও জওয়ানরা এলাকা ঘিরে হামলাবাজদের পাকড়াও করতে ব্যাপক অভিযান চালিয়েছেন। ঘটনাস্থলের কাছে সন্দেহজনক স্থানীয় দুই বাসিন্দাকে আটক করা হয়েছে। তাদের লালিয়ানমাং (৩৫) এবং থাংজামাং (৪৫) বলে পরিচয় পাওয়া গেছে। তবে বেশ কিছুক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদের পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।


প্রসঙ্গত, ছত্তিশগড়ের রাজধানী রায়পুরের বরিষ্ঠ সাংবাদিক তথা সান্ধ্য দৈনিক পত্রিকা ‘বয়ার’-এর সম্পাদক সুভাষ ত্রিপাঠীর জ্যেষ্ঠ পুত্র ছিলেন কমান্ডিং অফিসার কর্নেল বিপ্লব ত্রিপাঠী। এছাড়া শহিদ বিপ্লব ত্রিপাঠীর দাদু ছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামী তথা রায়গড়ের প্রথম সাংসদ কিশোরীলাল ত্রিপাঠী। তাঁর ছোট ভাই অনিল ত্রিপাঠীও ভারতীয় সেনার লেফট্যানান্ট কর্নেল। তিনিও মণিপুরেই কর্মরত।


এদিকে আসাম রাইফেলসের কনভয়ে হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। টুইটার হ্যান্ডলে তিনি লিখেছেন, ‘আমি সেই সব সৈনিক ও পরিবারের সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধঞ্জনি জানাই যাঁরা আজ শহিদ হয়েছেন। তাঁদের আত্মত্যাগ কখনও ভোলার নয়। এই দুঃসময়ে শোকসন্তপ্ত পরিবারের সঙ্গে আমার ভাবনা বিরাজমান থাকবে।’


প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং আজকের জঙ্গি হামলার ঘটনাকে কাপুরুষোচিত বলে নিন্দা করে টুইট করেছেন। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং লিখেছেন, ‘মণিপুরের চূড়াচাঁদপুরে আসাম রাইফেলসের কনভয়ের ওপর কাপুরুষোচিত হামলার ঘটনা অত্যন্ত বেদনাদায়ক এবং নিন্দনীয়। দেশ এক কমান্ডিং অফিসার ও তাঁর পরিবারের দুই সদস্য এবং পাঁচ সাহসী বীর সেনাকে হারিয়েছে। অপরাধীদের শীঘ্রই বিচারের আওতায় আনা হবে।’ টুইটারে লিখেছেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ।



মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংহ তাঁর টুইটার হ্যান্ডলে লিখেছেন, ‘আজ চুরাচাঁদপুরে ৪৬ আসাম রাইফেল-এর একটি কনভয়ের ওপর কাপুরুষোচিত হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। ওই হামলায় আসাম রাইফেলসের কমান্ডিং অফিসার ও তাঁর পরিবার সহ কয়েকজন জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে। এতে আমি মর্মাহত।’



টুইটারে মুখ্যমন্ত্রী আরও লিখেছেন, ‘রাজ্য পুলিশ এবং আধাসামরিক বাহিনী ইতিমধ্যেই জঙ্গিদের ধরতে তাদের কাজ শুরু করেছে৷ অপরাধীদের পাকড়াও করে বিচারের আওতায় আনা হবে।’

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য