স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১ আগস্ট : কংগ্রেসের দলীয় কর্মসূচীকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে চড়িলাম এলাকা। অভিযোগ পুলিশের সামনেই সংঘর্ষে লিপ্ত হয় দুই দলের কর্মী সমর্থকেরা। ব্যাপক ভাংচুর চালানো হয় চরিলাম কংগ্রেস ভবনে। বাধ্য হয়ে পুলিশকে লাঠি চার্জ করতে হয়। জারি করা হয় ১৪৪ ধারা। এই ঘটনায় আহত হয়েছে দুই পক্ষের বেশ কয়েকজন। পরিস্থিতি থমথমে। জানা যায়, সোমবার পূর্বের কর্মসূচী অনুযায়ী দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকা চড়িলামের কংগ্রেস কার্যালয় খোলা হয়।
সামনেই রয়েছে দলীয় কর্মসূচী। আর এই কর্মসূচীকে সামনে রেখে দলীয় কার্যালয় খোলার উদ্যোগ নেয় কংগ্রেস কর্মী সমর্থকরা। দলীয় কার্যালয় খোলার পর থেকেই আশ পাশে বাড়তে থাকে ভীড়। পরিস্থিতির অবনতি ঘটার বিন্দু মাত্র আঁচ পায়নি আরক্ষা প্রশাসন। পুলিশ ও টি এস আর মোতায়েন করা হলেও তা ছিল কোন সামান্য। একটা সময় দলীয় কার্যালয়ে আসেন বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মণ, প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি গোপাল রায়, প্রাক্তন বিধায়ক আশীষ কুমার সাহা সহ প্রদেশ ও স্থানীয় নেতৃত্ব। একই সঙ্গে ভীড় জমায় কংগ্রেসের দলীয় কর্মীরা। এদিকে কংগ্রেস ভবনে ভীড় বাড়ার সাথে সাথেই জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিজেপি-র কর্মী সমর্থকেরা। একটা সময় দুই দলের কর্মী সমর্থক সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। অভিযোগ ভাংচুর চালানো হয় চড়িলাম কংগ্রেস ভবনে। নষ্ট করা হয় কংগ্রেসের প্রচার সজ্জা। পুড়িয়ে দেওয়া হয় অফিসটি। পরিস্থিতি রণক্ষেত্রের আকার ধারন করে। নিয়ন্ত্রনের বাইরে যেতে দেখে পুলিশ ও টি এস আর বাড়ানো হয়। উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে পুলিশকে বাধ্য হয়ে লাঠি চার্জ করতে হয়। বৃষ্টির মধ্যেই চলতে থাকে এই রাজনৈতিক উত্তাপের ঘটনা।
তবে এদিনের ঘটনায় আহত হয় দুই পক্ষের বেশ কয়েকজন কর্মী সমর্থক। কংগ্রেস দলের অভিযোগ পুলিশের সামনেই তাদের উপর আক্রমণ সংগঠিত করা হয়েছে। অন্যদিকে পুরনো দিন ফিরতে দেওয়া হবে না বলে শ্লোগান দেয় শাসক দলীয় কর্মী সমর্থক। দুই দলের কর্মী সমর্থকদের ছত্রভঙ্গ করে পুলিশ। এদিকে বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মণ অভিযোগ করেন অরাজগতার আরেক নাম বিশালগড় মহকুমা। গোটা মহকুমা জুরে সমাজ দ্রোহীদের অগাধ বিচরণ। বহু মানুষ বিজেপি দল ত্যাগ করে কংগ্রেসে যোগদান করতে চায়। কিন্তু এই যোগদান সভা করতে দেওয়া হচ্ছিল না। এদিন যোগদান করার সিদ্ধান্ত নেয় তারা। এই যোগদান সভা বানচাল করতে ছক কষে শাসক দল। তাঁর ফলেই এই ঘটনা। এদিকে পথ অবরোধ করে বিজেপি কর্মীরা। দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে তারা অনড় থাকে। রাস্তার দুধারে আটকে পড়ে বহু যান বাহন। আতঙ্ক নগরীতে পরিণত হয় চরিলাম। খবর পেয়ে যান উপ মুখ্যমন্ত্রী। তিনি গিয়ে অবরোধ তুলে দেন। পরে জেলা শাসকের কার্যালয়ে গিয়ে বৈঠক করেন। গোটা ঘটনার জেরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে চরিলাম। পুলিশ , টি এস আর মোতায়েন থাকলেও থমথমে রয়েছে পরিস্থিতি।এদিকে গোটা ঘটনা সম্পর্কে অবগত করতে রাজ্য পুলিশের সদর কার্যালয়ে যান কংগ্রেস নেতৃত্বরা। একটি প্রতিনিধি দল আইন শৃঙ্খলা বিভাগের আই জি সাথে দেখা করেন। পরে পুলিশের সদর কার্যালয় থেকে বের হয়ে প্রাক্তন বিধায়ক আশীষ কুমার সাহা জানান,
এদিন কংগ্রেস নেতৃবৃন্দরা চড়িলাম থেকে ফেরার পর কংগ্রেস অফিস জ্বালিয়ে দেয় বিজেপি দুর্বৃত্তরা। এবং পুলিশ আশ্বস্ত করার পরেও কংগ্রেস কর্মী সমর্থকদের মারধর করেছে। এ বিষয়ে আইন-শৃঙ্খলা বিভাগের আইজির সাথে কথা বলা হয়েছে। বিশেষ করে এদিনের ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে হবে। তিনি আরো বলেন, আগামী আগস্ট মাস ব্যাপী কংগ্রেসে কর্মসূচি রয়েছে। বিভিন্ন ব্লক এলাকায় এই কর্মসূচি সংগঠিত করা হবে। তখন যদি বিজেপি কংগ্রেসের কর্মসূচিতে বাধা সৃষ্টি করে তাহলে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। এর জন্য দায়ী থাকবে প্রশাসন বলে জানান শ্রী সাহা। এদিকে সুদীপ রায় বর্মন বলেন, পুলিশ আধিকারিকদের সাথে কথা হয়েছে। পুলিশকে বলা হয়েছে যাতে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করে। এবং পুলিশ আধিকারিকদের কাছ থেকে আশ্বাস পাওয়া গেছে আগামী দিনে এ ধরনের ঘটনা সংগঠিত হবে না বলে জানান তিনি।
অনুমতি নিয়ে এদিনে কর্মসূচি শুরু হয়েছিল। কিন্তু এতে বিজেপি বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে রাস্তা অবরোধ করে রাখে। যোগদান কর্মসূচিতে এসেছিলেন তাদের পরবর্তী সময় নিরাপত্তা রক্ষী দিয়ে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু তারপরও পুলিশের সামনে আট থেকে ১০ জন কংগ্রেস কর্মীকে মারধর করেছে বিজেপির কর্মী সমর্থকরা। বিষয় হলো পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে এদিন যে ভূমিকা গ্রহণ করা হয়েছে তা অত্যন্ত নিন্দাজনক বলে জানান প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বীরজিৎ সিনহা।