স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ২৭ জানুয়ারি: ইংরেজিতে ‘Free Fall’ বলে একটি শব্দ রয়েছে। ভারতের শেয়ার বাজারের বর্তমান অবস্থা কার্যত সেটাই। বিরামহীনভাবে লাগাতার নিচের দিকে নামছে ভারতের বিনিয়োগের বাজার। সোমবারও সেই ছবিতে কোনও পরিবর্তন দেখা গেল না। এদিন বাজার খোলার কিছুক্ষণের মধ্যেই ৮০০ পয়েন্ট পড়ল সেনসেক্স। একই অবস্থা নিফটির। যার জেরে মাত্র কয়েক ঘণ্টায় ১০ লক্ষ কোটি টাকার ক্ষতি হল বিনিয়োগকারীদের।
সোমবারের রিপোর্ট বলছে, বিএসই সেনসেক্স এদিন ৮১৮.৩৬ পয়েন্টের বেশি নিচে নামে যার জেরে সর্বনিম্ন ৭৫,৩৭২.১০ পয়েন্ট পর্যন্ত নামে সেনসেক্স। একই অবস্থা নিফটিরও। নিফটি ফিফটি ২৫৭.৩৫ পয়েন্ট নিচে নেমেছে। যার জেরে ২২,৮৩৪.৮৫তে নামে নিফটির সূচক। সবচেয়ে বেশি পতন লক্ষ্য করা গিয়েছে মিড ক্যাপ ও স্মল ক্যাপ সংস্থাগুলিতে। লার্জ ক্যাপ আইআরসিটিসি, জিওফিন্যান্সের মতো শেয়ারগুলি বিরাট ধাক্কা খেয়েছে। ৭ শতাংশের বেশি ধাক্কা খেয়েছে আইডিএফসি ফার্স্ট ব্যাঙ্ক, বিএসই লিমিটেডের মতো সংস্থা। যদিও ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া, ইয়েস ব্যাঙ্কের মতো সংস্থাগুলি এই দুর্ভিক্ষের বাজারে কিছুটা লাভের মুখ দেখেছে।
কিন্তু কেন এই বিরাট ধাক্কা শেয়ার বাজারে? গুরুতর এই পরিস্থিতির নেপথ্যে অবশ্য বেশ কিছু কারণ তুলে ধরছেন বিশেষজ্ঞরা। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, শেয়ার বিক্রির প্রবণতা বেড়েছে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের। এফপিআই শুধুমাত্র জানুয়ারি মাসে ভারতের বাজার থেকে ৬৯ হাজার কোটি টাকা তুলে নিয়েছে। এর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারে ক্রুড অয়েলের দাম বৃদ্ধি, টাকার দামে রেকর্ড পতন ও আমেরিকায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের নীতি ভারতের বাজারে বড় ধাক্কার অন্যতম কারণ। ভারত-সহ একাধিক দেশের উপর অতিরিক্ত শুল্ক চাপানোর হুঁশিয়ারি আগেই দিয়েছেন ট্রাম্প। এর পাশাপাশি তাঁর H1B ভিসা নীতি ভারতের মুশকিল বাড়াবে। আসন্ন সেই বিপদবার্তা অনুধাবন করে এলোমেলো বইতে শুরু করেছে ভারতের বাজার।
আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে এই সব উত্থান-পতনের প্রভাব যেমন বাজারে পড়েছে, তেমনই আভ্যন্তরীণভাবে খুব একটা স্থির নয় দেশের বাজার। একাধিক সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছে ভারতের জিডিপি গ্রোথ কম হতে পারে ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে। এর প্রভাব শেয়ারবাজারে পড়তে শুরু করেছে এখন থেকেই। এই অবস্থায় আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে সংসদে পেশ হবে কেন্দ্রীয় বাজেট। সেখানে সরকার অর্থনৈতিক নীতি বাজারের দুরবস্থা কিছুটা সামাল দিতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে।