Sunday, September 8, 2024
বাড়িখেলারেয়াল মাদ্রিদে যোগ দেওয়ার আগে পালমেইরাসে এন্দ্রিকের কান্নাভেজা বিদায়

রেয়াল মাদ্রিদে যোগ দেওয়ার আগে পালমেইরাসে এন্দ্রিকের কান্নাভেজা বিদায়

স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ৩১ মে: এন্দ্রিকের ক্যারিয়ারের রোমাঞ্চকর এক অধ্যায় অপেক্ষায় সামনেই। আগামী জুলাইয়ে বয়স ১৮ পূর্ণ হলেই তিনি যোগ দেবেন রেয়াল মাদ্রিদে। তবে যে ক্লাব তার ছেলেবেলার স্বপ্নযাত্রার সঙ্গী, ১০ বছর বয়সে যে ক্লাবে পা রেখে শাণিত করেছেন নিজের প্রতিভা, যে ক্লাব মিশে আছে তার অস্তিত্ব ও সত্ত্বায়, সেই ক্লাবকে বিদায় বলার মুহূর্তটি তো সহজ নয়!সাও পাওলোতে বৃহস্পতিবার সান লরেন্সোর বিপক্ষে কোপা লিবার্তাদোরেসের গ্রুপ পর্বের ম্যাচটিই ছিল পালমেইরাসের জার্সিতে এন্দ্রিকের শেষ ম্যাচ। আগেই শেষ ষোলো নিশ্চিত করে ফেলা পালমেইরাস এ দিন গোলশূন্য ড্র করে। তবে সব ছাপিয়ে ম্যাচটি হয়ে ওঠে ঘরের দর্শকদের কাছ থেকে এন্দ্রিকের বিদায়ের মঞ্চ।

তাকে বিদায় জানাতেই গুরুত্বহীন ম্যাচে গ্যালারি ছিল ভরা। ম্যাচের ৬৯তম মিনিটে এন্দ্রিককে তুলে নেওয়া হয়। গোটা গ্যালারি দাঁড়িয়ে অভিবাদন জানায় তাদের তরুণ প্রতিভাকে। গান গেয়ে ও স্লোগান দিয়ে শুভ কামনা জানান তারা।কদিন পরই ফ্লোরিডায় কোপা আমেরিকার ব্রাজিল স্কোয়াডে যোগ দেবেন এন্দ্রিক। এরপর শুরু হবে তার রেয়াল অধ্যায়।আনষ্ঠানিকভাবে এখনও তিনি পালমেইরাসের ফুটবলার। ব্রাজিলিয়ান ক্লাবে শেষ ম্যাচের আগে তরুণ ফরোয়ার্ড রয়টার্সকে বললেন, শনিবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে রেয়াল মাদ্রিদ ও বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের ম্যাচে তিনি কেবলই একজন রেয়াল ভক্ত। “বিদায়ী ম্যাচ নিয়ে (পালমেইরাসের হয়ে) আমার এতটাই মনোযাগ ছিল যে, মনেই ছিল না আমাকে ছাড়া রেয়ালের শেষ ম্যাচ এটি (চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনাল)।”

এন্দ্রিক জানালেন, ফুটবল দেখতে তার ভালো লাগে। অনেক খেলা তিনি দেখেন। যদিও সরাসরি সম্প্রচার দেখার সুযোগ পান না অনেক সময়ই। বয়স স্রেফ ১৭ হলেও তিনি অনেক পরিণত এখনই। স্রেফ উপভোগ করার জন্য নয়, খেলা দেখেন তিনি নিজেকে সমৃদ্ধ করার জন্য।“আমি প্রচুর খেলা দেখি। সবসময় সরাসরি দেখতে পারি না। আমাদের সূচির ব্যস্ততার কারণেই এটা সম্ভব নয়। প্রায় সময়ই ফলাফল জেনেই খেলা দেখতে বসি। তাই উল্লাস করার চেয়ে বরং দলের খেলা বিশ্লেষণ করাই বেশি হয়ে ওঠে আমার।”

“আমরা যারা ফুটবলার, অনুশীলন ও ভ্রমণে ব্যস্ত থাকতে হয়, তাদের জন্য খেলা দেখার ব্যাপারটি ভিন্ন। আমরা অন্য কিছু দেখি। অন্যদের তুলনায় আলাদা ব্যাপারগুলিতে আমাদের মনোযোগ থাকে। এজন্যই কোনো ঝামেলা ছাড়া খেলা দেখতে চই। তবে যদি কোনে বড় ম্যাচ বা অর্থপূণ লড়াই থাকে, তখন সরাসরি দেখি। একা খেলা দেখতেই বেশি ভালো লাগে আমার।”চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল ম্যাচটি হয়তো তিনি ঘরে বসে পরিবার ও বান্ধবীকে নিয়ে দেখবেন বলেই জানালেন।ফাইনালের আগে রেয়ালের নতুন সতীর্থদের সঙ্গে তার যোগাযোগ হয়নি বা বার্তা পাঠাননি তিনি। তবে খেলা শেষে শিরোপা উদযাপনে সঙ্গী হওয়ার অপেক্ষায় আছেন।“আমরা সবাই নিজেদের কাজে ব্যস্ত এবং মনোযোগী, সবার সামনে বড় ম্যাচ (এজন্য যোগাযোগ হয়নি)। তবে আমি নিশ্চিত, ফাইনাল শেষে আমাদের কথা হবে, রেয়াল মাদ্রিদের আরও একটি ট্রফি নিয়ে উদযাপন হবে।”

ইউরোপের বেশ কয়েকটি ক্লাবের আগ্রহের কেন্দ্রে থাকা এন্দ্রিককে দেড় বছর আগে ৬ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলারে দলে নেয় রেয়াল। চুক্তি অনুযায়ী, বয়স ১৮ হওয়ার পর স্প্যানিশ ক্লাবটিতে যোগ দেবেন তিনি।এর মধ্যেই অবশ্য ব্রাজিলের হয়ে আন্তর্জাতিক ফুটবলে অভিষেক হয়ে গেছে তার। প্রতিভার ঝলক দেখিয়ে আলোচনার ঝড়ও তুলছেন। ‘বিস্ময় বালক’, ‘নতুন পেলে’ হিসেবে পেয়েছেন পরিচিতি।সেই ১৯৫৭ সালে পেলের পর সর্বকনিষ্ঠ ফুটবলার হিসেবে ব্রাজিলের হয়ে মাঠে নামার কীর্তি গড়েছেন তিনি। গত মার্চে তার গোলেই ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে ইংল্যান্ডকে হারায় ব্রাজিল। ঐতিহ্যবাহী এই স্টেডিয়ামে সবচেয়ে কম বয়সে গোল করার রেকর্ড গড়েন তিনি। এই মাঠে ইংলিশদের ২১ ম্যাচের অপরাজেয় যাত্রা শেষ হয় তাতে। পরে স্পেনেরর বিপক্ষেও তিনি জালের দেখা পান। ব্রাজিলের হয়ে চার ম্যাচেই দুটি গোল তার হয়ে গেছে।তার প্রতিভার ঝলক দেখা যাবে এবারের কোপা আমেরিকাতেও।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য