স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ২২ জানুয়ারি: রেয়াল বেতিসের মাঠে রোববার রাতে ৬ গোলের রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ে লিগ ম্যাচটি ৪-২ ব্যবধানে জিতেছে বার্সেলোনা। হ্যাটট্রিক করে তাদের জয়ের নায়ক ফেররান তরেস।তরেসের জোড়া গোলের পর দ্বিতীয়ার্ধে দুই গোল শোধ করেন ইসকো। ৯০তম মিনিটে জোয়াও ফেলিক্স বার্সেলোনাকে ফের এগিয়ে নেওয়ার পর হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন তরেস।পঞ্চম মিনিটে গোল খেতে বসেছিল বার্সেলোনা। ইসকোর ক্রস বক্সে পান লুইস এনরিকে। এগিয়ে আসা গোলরক্ষক ইনাকি পেনার ওপর দিয়ে তরুণ ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডের চিপ শটে ওপরের জালে পড়ে বল।বল দখলে শুরু থেকে একচেটিয়া আধিপত্য করা বার্সেলোনা প্রথম সুযোগ পায় চতুর্দশ মিনিটে। ফ্রেংকি ডি ইয়ংয়ের ক্রস বক্সে খুঁজে পায় পেদ্রিকে। তবে অরক্ষিত স্প্যানিশ মিডফিল্ডারের শট ওপরের জালে পড়ে বাইরে যায়।২১তম মিনিটে এগিয়ে যায় সফরকারীরা। ইলকাই গিনদোয়ানের শটে বল বেতিসের এক খেলোয়াড়ের পায়ে লেগে দিক পাল্টে যায় বক্সে পেদ্রির কাছে। তার পাস ছয় গজ বক্সের মুখে পেয়ে অনায়াসে জালে পাঠান অরক্ষিত তরেস।২৫তম মিনিটে সুযোগ পান রবের্ত লেভানদোভস্কি। সতীর্থের পাস ধরে বক্সে ঢুকে পোলিশ তারকার নেওয়া শট পা দিয়ে ঠেকান বেতিস গোলরক্ষক রুই সিলভা।৩৮তম মিনিটে লক্ষ্যে প্রথম শট রাখতে পারে বেতিস। বক্সের বাইরে থেকে সাবেক রেয়াল মাদ্রিদ মিডফিল্ডার ইসকোর শট অবশ্য গোলরক্ষককে ভাবাতে পারেনি।
শুরু থেকে দারুণ খেলা তরুণ লামিনে ইয়ামাল ৩৯তম মিনিটে ব্যবধান প্রায় দ্বিগুণ করে ফেলছিলেন। বক্সে জায়গা বানিয়ে প্রতিপক্ষের কয়েক জন খেলোয়াড়রের মাঝ দিয়ে তার বাঁ পায়ের শট পোস্টে লাগে। ফিরতি বল তরেস জালে পাঠালেও অফসাইডের কারণে গোল মেলেনি।বিরতির আগে লেভানদোভস্কিও জালে বল পাঠিয়ে গোল পাননি। অফসাইডের পতাকা তোলেন লাইন্সম্যান। ভিএআরেও বহাল থাকে সেই সিদ্ধান্ত।দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ব্যবধান বাড়ান তরেস। ইয়ামাল সঙ্গে লেগে থাকা প্রতিপক্ষের এক ডিফেন্ডারকে পেছনে ফেলে ডান দিক দিয়ে বক্সে ঢুকে পড়েন। বাইলাইনের কাছ থেকে তার শট পোস্টে লাগার পর বাঁ পায়ের শটে জালে পাঠান তরেস।বার্সেলোনার দুই গোলে এগিয়ে যাওয়ার স্বস্তি বেশিক্ষণ থাকেনি। ৫৬ থেকে ৫৯ মিনিট- এই সময়ের মধ্যে তাদের জালে দুবার বল পাঠিয়ে সমতা ফেরান ইসকো।
প্রথমে বেতিসের একটি ক্রস পাঞ্চ করে ঠিকমতো ক্লিয়ার করতে পারেননি পেনা। বক্সের ভেতর থেকে বুলেট গতির হাফ ভলিতে ঠিকানা খুঁজে নেন ইসকো।বার্সেলোনার খেলোয়াড়রা রেফারিকে ঘিরে ধরেন। গোলের আগে পেদ্রি মাঝমাঠে ফাউলের শিকার হয়েছিলেন বলে দাবি জানান তারা। ডি ইয়ং দেখেন হলুদ কার্ড।সেই রেশ না কাটতেই দ্বিতীয় গোলটি করেন ইসকো। অনেকটা ওপরে পা তুলে গোলরক্ষকের মাথার ওপর দিয়ে বল জালে পাঠান তিনি।লাইন্সম্যান শুরুতে অফসাইডের পতাকা তোলেন। ভিএআর রিপ্লেতে দেখা যায়, অফসাইডের ছিলেন বেতিসের একজন, তবে বল ইসকোর কাছে যাওয়ার সময় তিনি স্পর্শ করেননি।২০১৭ সালের অক্টোবরের পর এই প্রথম লা লিগার ম্যাচে জোড়া গোল করলেন ইসকো। সেবার এস্পানিওলের বিপক্ষে রেয়াল মাদ্রিদের ২-০ গোলে জয়ের ম্যাচে দুটিই করেছিলেন তিনি।
এরপরই লেভানদোভস্কিকে তুলে তরুণ ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড ভিতর খককে মাঠে নামান শাভি। ৭১তম মিনিটে সুযোগও পেয়ে যান খক। তবে ১২ গজ দূর থেকে তার শট লক্ষ্যে থাকেনি।৮১তম মিনিটে বদলি নামা ফেলিক্স শেষ পর্যন্ত বার্সেলোনার ত্রাতা হয়ে আসেন। নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে তরেসের সঙ্গে ওয়ান-টু খেলে চমৎকার নিচু শটে পোস্ট ঘেঁষে গোল করে দলকে এগিয়ে নেন পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড। আর যোগ করা সময়ে হ্যাটট্রিক পূরণের পাশাপাশি দলের জয় নিশ্চিত করেন তরেস। যেখানে বড় অবদান রাখেন ইয়ামাল। তার দারুণ থ্রু বল ধরে চিপ শটে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড।২০ ম্যাচে ১৩ জয় ও ৫ ড্রয়ে ৪৪ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে আছে বার্সেলোনা।দিনের আরেক ম্যাচে আলমেরিয়াকে ৩-২ গোলে হারানো রেয়াল মাদ্রিদ ৫১ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে। তাদের সমান ২০ ম্যাচে ৪৯ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে জিরোনা।২১ ম্যাচে ৩১ পয়েন্ট নিয়ে নবম স্থানে আছে রেয়াল বেতিস।