স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ২২ ডিসেম্বর: ইউরোপিয়ান কোর্ট অব জাস্টিস বৃহস্পতিবার এক রায়ে বলেছে, সুপার লিগ আয়োজনের ক্ষেত্রে ফিফা ও উয়েফার বাধা দেওয়া বেআইনি। এর পরপরই পুরুষ ও নারীদের আলাদা ক্লাব প্রতিযোগিতার প্রস্তাবনা দিয়েছে সুপার লিগের পৃষ্ঠপোষক সংস্থা এ-টোয়েন্টিটু স্পোর্টস ম্যানেজমেন্ট। স্পেনের সফলতম দুই ক্লাব রেয়াল ও বার্সেলোনা ছাড়া এখন পর্যন্ত কোনো ক্লাবই সুপার লিগে অংশ নেওয়ার পক্ষে কোনো মত দেয়নি। আয়োজকরাও আগ্রহী কোনো ক্লাবের নাম উল্লেখ করেনি। পিএসজি, বায়ার্ন মিউনিখের মতো অনেক ক্লাবই সুপার লিগে অংশ না নেওয়ার কথা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে।
এসবের মধ্যেই একটি ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে সুপার লিগকে খোঁচা মারলেন ইউরোপীয় ফুটবলের নিয়ন্তা সংস্থা- উয়েফার প্রধান চেফেরিন। “আমরা ওদের থামানোর চেষ্টা করব না। আশা করি, ওরা তাদের অসাধারণ প্রতিযোগিতা যত দ্রুত সম্ভব শুরু করবে, দুটি ক্লাবকে নিয়ে। আশা করি, কী করছে সেটা তারা জানে। তবে এই ব্যাপারে আমি নিশ্চিত নই। ফুটবল বিক্রির জন্য নয়, সেটা আমরা বহুবার দেখিয়েছি।”আদালতের রায়কে নিজেদের কিছু নিয়মে পরিবর্তন আনার সুযোগ হিসেবে দেখছেন চেফেরিন। “তবে সবসময়ই ঐক্যবদ্ধ থাকব। এর প্রমাণ আপনারা দেখেছেন, সংশ্লিষ্ট সবাই আজ সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেছে। দেশগুলোর সরকার ও প্রতিষ্ঠানগুলো আমাদের সাথেই আছে।” আদালতের রায়ে সুপার লিগের ব্যাপারে কোনো সবুজ সংকেত দেওয়া হয়নি। তারা বলেছে, “সুপার লিগ প্রকল্পের মতো প্রতিযোগিতাকে অবশ্যই অনুমোদন দিতে হবে, ব্যাপারটি এমন নয়।” এটাকেই বড় করে দেখছেন পিএসজি ও ইউরোপিয়ান ক্লাব অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান নাসের আল খেলাইফি।
“তারা রায়কে জয় হিসেবে দেখছে, আমি মোটেও সেভাবে দেখছি না। সুপার লিগের সঙ্গে রায়ের কোনো সম্পর্ক নেই। ইউরোপে সব স্টেকহোল্ডার একই লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ। (এই রায়) আমাদের আরও ভালো ও শক্তিশালী করবে।”২০২১ সালে মূলত চ্যাম্পিয়ন্স লিগের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবেই ইউরোপিয়ান সুপার লিগের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছিল শুরুতে এতে যোগ দেওয়া ১২টি ক্লাব। কিন্তু ফিফা ও উয়েফাসহ এর বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের প্রবল বাধা ও সমর্থকদের কড়া সমালোচনার মুখে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সরে দাঁড়ায় ৯টি ক্লাব। টিকে থাকে কেবল রেয়াল, বার্সেলোনা ও ইউভেন্তুস। গত জুলাইয়ে প্রতিযোগিতাটি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ইচ্ছার কথা জানায় ইউভেন্তুসও। সুপার লিগ আয়োজনের ঘোষণা দেওয়ার পরপরই চারিদিক থেকে এতে সম্পৃক্ত ক্লাবগুলোর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিতে থাকে ফিফা ও উয়েফা। সুপার লিগের বিরুদ্ধে আগাম নিষেধাজ্ঞা এড়ানোর ব্যবস্থা করতে শুরুতেই আদালতের আশ্রয় নেয় এর কর্তৃপক্ষ। আগামীর পথচলা মসৃণ করার লক্ষ্যে পরে ইউরোপিয়ান কোর্ট অব জাস্টিস (ইসিজে)- এ আবেদন করে তারা, যার রায় আসে বৃহস্পতিবার। সেখানে বলা হয়, সুপার লিগ আয়োজনের ক্ষেত্রে ফিফা ও উয়েফার বাধা দেওয়াটা বেআইনি। এক্ষেত্রে দুটি সংস্থাই তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে।