Sunday, May 25, 2025
বাড়িখেলাহলুদ ঢেউয়ে ডেনমার্ককে হারিয়ে শেষ আটে অস্ট্রেলিয়া

হলুদ ঢেউয়ে ডেনমার্ককে হারিয়ে শেষ আটে অস্ট্রেলিয়া

স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক,৭ আগস্ট: গ্যালারিজুড়ে হলুদ ঢেউ আর হলুদের গর্জন। অস্ট্রেলিয়ান ফুটবলারদের পায়ে বল গেলে সেই গর্জন যেন রূপ নিচ্ছিল ভিন্ন এক উন্মাদনায়। এমন পরিস্থিতিতে জিততে হলে ডেনমার্ককে অতিমানবীয় কিছুই করে দেখাতে হতো। নাহ, তেমন কিছু হয়নি। ডেনিশরা চেষ্টা করেও থামাতে পারেননি অস্ট্রেলীয়দের। স্বাগতিক দর্শকদের গর্জনের মধ্য দিয়েই ২-০ গোলে জিতে কোয়ার্টার ফাইনালে গেল অস্ট্রেলিয়া। এই ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপের এবারের আসরে প্রথমবারের মতো মাঠে নেমেছেন অস্ট্রেলিয়ার তারকা ফুটবলার স্যাম কার। মাঠে এ চেলসি তারকার উপস্থিতিও এদিন আলাদাভাবে উজ্জীবিত করেছে হলুদ জার্সির দলটিকে। ডেনমার্কের বিপক্ষে এ জয়ে বিশ্বকাপ ইতিহাসে চতুর্থবারের মতো দ্বিতীয় রাউন্ডের গণ্ডি পেরোল অস্ট্রেলিয়া। অন্যদিকে চেষ্টা করেও তৃতীয়বারের মতো শেষ আটের টিকিট পাওয়া হলো না ডেনমার্কের।

সিডনির স্টেডিয়াম অস্ট্রেলিয়ায় এদিন শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল উপহার দেয় ডেনমার্ক। আক্রমণ ও বল দখলে এগিয়েই ছিল তারা। অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়া থিতু হতে একটু সময় নেয়। তাদের পাসগুলোও ঠিকঠাক হচ্ছিল না। কিন্তু দ্রুত নিজেদের গুছিয়ে নিয়ে ডেনমার্কের আক্রমণের জবাবগুলো দিতে শুরু করে অস্ট্রেলিয়াও। এদিন ম্যাচের দুই মিনিটেই আক্রমণে গিয়ে গোলের চেষ্টা করে ডেনমার্ক, যদিও সেই প্রচেষ্টা আলোর মুখ দেখেনি।৯ মিনিটে আবারও সুযোগ আসে ডেনমার্কের সামনে। দারুণ একটি ক্রসে সুযোগটা তৈরি করেছিলেন ইয়ান্নি টমসেন কিন্তু ফিনিশিংয়ের দুর্বলতায় গোলের দেখা পায়নি ডেনমার্ক। ডেনমার্ক ফরোয়ার্ড পারনিলে হার্ডার দারুণ খেলে চেষ্টা করছিলেন অস্ট্রেলিয়ার গোলমুখ খুলতে। কিন্তু শেষ শটটাতে গিয়ে বারবার ভুল করছিল তারা। এরপর স্রোতের বিপরীতে দারুণ এক গোলে এগিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। ডেনমার্ক সুযোগ হাতছাড়া করলেও সে ভুল করেনি স্বাগতিকেরা।

ম্যাচের ২৯ মিনিটে দারুণ এক গোলে সমতায় ফেরে তারা। মেরি ফাউলারের বাঁকানো ক্রসে দারুণ ফিনিশিংয়ে লক্ষ্যভেদ করেন কেইটলিন ফোর্ড। এই গোলের পর স্বাগতিক সমর্থকদের গর্জন জাগিয়ে তোলে অস্ট্রেলিয়াকেও। বিশেষ করে ফোর্ডের কাছে বল গেলেই পরীক্ষায় পড়তে হচ্ছিল ডেনমার্ককে। অন্যদিকে হার্ডার চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন ডেনমার্ককে পথ দেখানোর। কিন্তু প্রথমার্ধে আর সমতা ফেরাতে পারেনি ডেনমার্ক।দ্বিতীয়ার্ধেও আধিপত্য বিস্তার করে খেলছিল ডেনমার্ক। কিন্তু অ্যাটাকিং থার্ডে গিয়ে ব্যর্থতা ম্যাচে ফিরতে দিচ্ছিল না তাদের। অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়ার লক্ষ্য ছিল রক্ষণ সুদৃঢ় করে প্রতি-আক্রমণ থেকে সুযোগ নেওয়ার। বিশেষ করে নিজেদের রক্ষণে বিপজ্জনক হার্ডারকে বেশ ভালোভাবেই আটকে রাখতে পেরেছিল তারা। এ সময় ডেনমার্কের আক্রমণাত্মক ফুটবলের সুযোগ নিয়ে প্রতি-আক্রমণ থেকে একাধিকবার ব্যবধান বাড়ানোর কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া।

কিন্তু ফিনিশিংয়ের কারণে বারবার নিরাশ হতে হচ্ছিল তাদের। তবে ম্যাচের ৭০ মিনিটে দুর্দান্ত দলীয় সমন্বয়ে ঠিকই নিজেদের দ্বিতীয় গোলটি আদায় করে নেয় অস্ট্রেলিয়া। ডি-বক্সের ভেতর বল পেয়ে ফন এগমন্ড বল বাড়ান ফাঁকায় থাকা হেইলি রাসোকে। নিখুঁত ফিনিশিংয়ে লক্ষ্যভেদ করে গোটা স্টেডিয়ামকে উদ্‌যাপনের আনন্দে মাতিয়ে তুলেন রাসো। দুই গোলে পিছিয়ে গোলের জন্য আরও মরিয়া হয়ে ওঠে ডেনমার্ক। কিন্তু তাদেরকে কোনো সুযোগই দেয়নি অস্ট্রেলিয়ার রক্ষণসেনানীরা।এর মধ্যে ম্যাচের উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দেন স্যাম কার। চোটের কারণে বিশ্বকাপে আগের ম্যাচগুলোয় মাঠে নামতে পারেননি অস্ট্রেলিয়ান ফুটবলের সবচেয়ে বড় তারকা। তাই প্রথমবারের মতো ৮০ মিনিটে রাসোর বদলি হিসেবে কার যখন মাঠে নামছিলেন, গর্জনে গোটা স্টেডিয়াম মেতে উঠেছিল অন্য রকম এক উন্মাদনায়। ম্যাচ শেষ হওয়ার আগপর্যন্ত চলেছে স্বাগতিক সমর্থকদের এই উল্লাসধ্বনি, যা থামানোর জন্য শেষ পর্যন্ত আর কিছুই করতে পারেনি ডেনমার্ক। ২-০ গোলে হেরে বিদায় নিতে হয়েছে ২০০৭ সালের পর এই প্রথম বিশ্বকাপ খেলা দলটি।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য

error: <b>Alert: </b>Content selection is disabled!!