Tuesday, January 14, 2025
বাড়িখেলাইতিহাস গড়ে হলান্ডের ‘স্পেশাল রাত, স্পেশাল মুহূর্ত’

ইতিহাস গড়ে হলান্ডের ‘স্পেশাল রাত, স্পেশাল মুহূর্ত’

স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক,৪ মে: উদযাপনের মঞ্চ প্রস্তুত ছিল আগে থেকেই। একটি গোল করলেই হয়ে যেত রেকর্ড। সেই গোলটি আসতে একটু সময় লেগেছে বটে। তবে ধরা দিয়েছে ঠিকই। ওয়েস্ট হ্যামের বিপক্ষে বুধবার ম্যানচেস্টার সিটির ৩-০ গোলের জয়ে দ্বিতীয় গোলটি করেন হলান্ড ম্যাচের ৭০তম মিনিটে। তার নামও খোদাই হয়ে যায় রেকর্ড বইয়ে।ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে এক মৌসুমে সবচেয়ে বেশি গোলের রেকর্ড এখন শুধুই হলান্ডের। ছাড়িয়ে গেছেন তিনি অ্যান্ড কোল ও অ্যালান শিয়েরারের দীর্ঘদিন ধরে রাখা রেকর্ড। সেই ১৯৯৩-৯৪ মৌসুমে নিউক্যাসল ইউনাইটেডের হয়ে ৩৪ গোল করেছিলেন কোল। পরের মৌসুমে ব্ল্যাকবার্ন রোভার্সকে স্মরণীয় শিরোপা এনে দিয়ে শিয়েরার করেছিলেন ৩৪ গোল। এবার তাদের দুজনকে দুইয়ে ঠেলে দিলেন হলান্ড।

কোল-শিয়েরারের রেকর্ড ছিল ৪২ ম্যাচের লিগ মৌসুমে। হলান্ড অবিশ্বাস্যভাবে ৩৫ গোল করে ফেললেন ৩১ ম্যাচেই। ১৯৯৫-৯৬ মৌসুম থেকেই লিগ নেমে এসেছে ২০ দল আর ৩৮ ম্যাচে। এই ৩৮ ম্যাচের লিগ মৌসুমে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড আগেই নিজের করে নিয়েছেন হলান্ড। ৩২ গোলের আগের রেকর্ড ছিল মোহামেদ সালাহর।ম্যাচের পর স্কাই স্পোর্টসে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় নিজের অনুভূতি প্রকাশের উপযুক্ত ভাষা যেন খুঁজে পাচ্ছিলেন না হলান্ড।“এটা স্পেশাল এক রাত, স্পেশাল মুহূর্ত। আমি সত্যিই দারুণ খুশি ও গর্বিত। জানি না, এছাড়া আর কী বলতে হবে…।”

 “রেকর্ডের কথা অবশ্যই জানতাম আগে থেকে। আমরা গোলের সুযোগ তৈরির চেষ্টাও করছিলাম। তবে কাজটা সহজ ছিল না, কারণ ওরা রক্ষণাত্মক খেলছিল। প্রথমার্ধে আমাদের লড়াই করতে হয়েছে ছন্দ পেতে। তবে গোল আসতোই এবং শেষ পর্যন্ত তা এসেছেই।”হলান্ড গোলটি করেছেন জ্যাক গ্রিলিশের পাস থেক চিপ শটে। হলান্ড জানালেন, ম্যাচের আগেই এই ইচ্ছের কথা জানিয়ে রেখেছিলেন তার এই সতীর্থ।“ম্যাচের আগে জ্যাকের (গ্রিলিশ) সঙ্গে কথা হচ্ছিল আমার এবং সে বলেছিল, রেকর্ড ভাঙা গোলটিতে অ্যাসিস্ট করতে চায় সে। তার পাস থেকে বলটিতে বাউন্স ছিল নিখুঁত। চিপ করার ভাবনা আমার ছিল না। কিন্তু সুযোগটা এলো এবং সেটিই করলাম।”মাঠের বক্সে বসে ছেলের রেকর্ড গড়া উপভোগ করেন একসময় ম্যানচেস্টার সিটির হয়েই খেলা আলফি হলান্ড। রেকর্ডের পর তার মুখে দেখা যায় চওড়া হাসি। আশপাশ থেকে অন্যরা অভিনন্দন জানান গর্বিত বাবাকে।প্রিমিয়ার লিগের জমানা ছাড়িয়ে ইংল্যান্ডের শীর্ষ ফুটবল লিগে এত বেশি গোল কেঋ সবশেষ করতে পেরেছিল ৫৬ বছর আগে। ১৯৬৬-৬৭ মৌসুমে সাউথ্যাম্পটনের হয়ে ৩৭ গোল করেছিলেন ওয়েলসের ফরোয়ার্ড রন ডেভিস। তবে ইংল্যান্ডের শীর্ষ লিগে সবচেয়ে বেশি গোলের রেকর্ডটি আপাতত হলান্ডের ধরাছোঁয়ার বাইরে। সেই ১৯২৭-২৮ মৌসুমে এভারটনের হয়ে ৬০ গোল করেছিলেন ডিক্সি ডিন।

এখন এই ৩৮ লিগের ম্যাচে ডিনের রেকর্ড ভাঙা অসম্ভবের কাছাকাছি। তবে প্রিমিয়ার লিগের প্রথম ফুটবলার হিসেবে এক মৌসুমে গোলের হাফ সেঞ্চুরির কীর্তি আগেই গড়ে ফেলেছেন হলান্ড। মৌসুমে এখন তার গোল ৫২টি। ২০০২-০৩ মৌসুমে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে রুড ফন নিস্টলরয়ের ৪৪ গোল ছিল আগের রেকর্ড।এই সবকিছু হলান্ড করে ফেলেছেন স্রেফ ২২ বছর বয়সে, ম্যানচেস্টার সিটিতে ও ইংলিশ ফুটবলে তার প্রথম মৌসুমেই। ‘গার্ড অব অনার’ তাই তার প্রাপ্য ছিল বলেই মনে করেন কোচ পেপ গুয়ার্দিওলা।“উপলক্ষ যখন এমন স্পেশাল, তখন বুঝিয়ে দিতে হবে যে এটি আসলেই কতটা স্পেশাল। এজন্যই গার্ড অব অনার। আজকে আর্লিং যা করেছে… অ্যান্ডি কোল ও অ্যালান শিয়েরারকে পেছনে ফেলা… তারা ছিলেন, অবিশ্বাস্য ও শীর্ষ মানের স্ট্রাইকার… তাদেরকে টপকে যাওয়া মানে বিশেষ কিছুই।”“আর্লিংয়ের তাই এটা (গার্ড অব অনার) প্রাপ্যই। গোটা দলেরই আসলে এটা প্রাপ্য, কারণ দল ছাড়া সে এটা করতে পারত না। তার জন্য আমরা সবাই খুব খুশি। সে নিজেই একটা আনন্দের উপলক্ষ, শুধু তার সঙ্গে কাজ করাই নয়… তাকে দলে পেয়ে সবাই খুশি।”এই রেকর্ড হলান্ড নিজেই ভবিষ্যতে ভাঙতে পারে বলে মনে করেন গুয়ার্দিওলা।“অবশ্যই এই রেকর্ড ভাঙতে, আজ হোক বা কাল… হয়তো সে নিজেই ভেঙে দেবে ভবিষ্যতে। সে আরও অনেক গোল করবে।”আপাতত কৌতূহল, এই মৌসুমে কোথায় থামবেন হলান্ড। লিগে এবার ম্যানচেস্টার সিটির ম্যাচ বাকি আছে এখনও ৫টি। আছে এফএ কাপ ফাইনাল, চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেমি-ফাইনালের দুই লেগ (এবং জিতলে ফাইনাল)। নিজের রেকর্ড আরও সমৃদ্ধ করার সুযোগ তাই তার আছে।  

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য