Friday, March 29, 2024
বাড়িখেলাদূর আকাশের তারাকে পেয়ে আত্মহারা সৌদি আরব

দূর আকাশের তারাকে পেয়ে আত্মহারা সৌদি আরব

স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক,৪জানুয়ারি: বাজারে আসার পর মাত্র দুই ঘণ্টায় বিক্রি হয় রোনালদোর ২০ লাখ নতুন জার্সি। আল নাসেরের মাঠ মারসুল পার্কে তাকে দেখতে উপস্থিত হন হাজার ত্রিশেক দর্শক।   তারা যখন অধীর আগ্রহ নিয়ে উন্মুখ হয়ে অপেক্ষায় ছিলেন তখন ক্লাব প্রেসিডেন্ট ও কোচকে পাশে নিয়ে মঙ্গলবার প্রথমবার গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন রোনালদো। সেখানে সাংবাদিকদের ভীড় দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেন কোচ রুদি গার্সিয়া। এমনিতে ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে যে তিনি পান মোটে জনা চারেক সাংবাদিক!হয়তো ক্যারিয়ারের পড়ন্ত বেলা। তবে সময়ের সেরাদের একজন যখন খেলতে এসেছেন তখন তাকে নিয়ে তুমুল আগ্রহ থাকাই স্বাভাবিক। ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবলে সম্ভাব্য সবকিছুই জিতেছেন রোনালদো। রিয়াল মাদ্রিদের ইতিহাসের সর্বোচ্চ গোলদাতা তিনি। সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ে নয়টি সফল মৌসুমে চারটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, দুটি লা লিগাসহ জিতেছেন অনেক শিরোপা। এরপর ইউভেন্তুসের হয়ে তিন বছরের অধ্যায়ে জিতেছেন দুটি সেরি আ, একটি ইতালিয়ান কাপ। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের জার্সিতে দুই মেয়াদে জিতেছেন তিনটি প্রিমিয়ার লিগ, দুটি লিগ কাপ ও একটি করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও ক্লাব বিশ্বকাপ শিরোপা।আগেও যে কথাটা বলেছেন রোনালদো, সেটাই বললেন আরেকবার। ৩৭ বছর বয়সী তারকা বুঝিয়ে দিলেন স্রেফ কথার কথা নয়, এ যেন তার পণ। “আমার জীবনের এই বড় সিদ্ধান্ত নিতে পেরে আমি গর্বিত। ইউরোপে আমার কাজ শেষ হয়েছে। আমি সবকিছু জিতেছি, ইউরোপের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ক্লাবগুলিতে খেলেছি। এখন এশিয়াতে এটি (আমার জন্য) নতুন চ্যালেঞ্জ।” 

বিশ্ব জুড়ে বেশ কয়েকটি ক্লাব থেকে প্রস্তাব পেয়েছিলেন বলে দাবি করলেন রোনালদো। শেষ পর্যন্ত আল নাসেরকে বেছে নেওয়ার কারণও ব্যাখ্যা করলেন পাঁচবারের বর্ষসেরা ফুটবলার।  “আমাকে তরুণ প্রজন্মের জন্য, নারীদের জন্য ফুটবলের উন্নতির সুযোগ দেওয়ায় আল নাসেরের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। আমার জন্য এটি একটি চ্যালেঞ্জ, তবে আমি খুব খুশি এবং গর্বিতও বোধ করছি। আমি এখানকার তরুণদের মানসিকতায় বদল আনার জন্য কাজ করব।” “আমি এখন বলতে পারি, ইউরোপ, ব্রাজিল, অস্ট্রেলিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে খেলার অনেক সুযোগ আমার ছিল। এমনকি পর্তুগালে অনেক ক্লাব আমাকে দলে টানার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু আমি এই ক্লাবকে কথা দিয়েছিলাম। আর সেটা শুধু ফুটবলের জন্যই নয়, এই দেশের অন্যান্য অংশের উন্নয়নের জন্যও।”রোনালদোর মতো তারকাকে দলে পেয়ে উচ্ছ্বসিত আল নাসেরের কোচ গার্সিয়াও। পর্তুগিজ ফরোয়ার্ডকে দলে নেওয়াকে সৌদি লিগের জন্য বড় পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন তিনি। “আমার জীবনে, আমি দেখেছি যে ক্রিস্তিয়ানোর মতো দুর্দান্ত খেলোয়াড়দের সামলানো সবচেয়ে সহজ, কারণ আমি তাকে শেখাতে পারি না। সে যেমন বলছিল, আমরা এখানে জিততে এসেছি, আর কিছু নয়। আমি চাই সে আল নাসেরের হয়ে খেলা উপভোগ করুক এবং আল নাসেরের সঙ্গে জিতুক।” 

এরপর ক্লাব প্রেসিডেন্ট ও কোচের সঙ্গে রোনালদো যান ড্রেসিংরুমে, যেখানে অধীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন নতুন সতীর্থরা। পর্তুগিজ মহাতারকা জানান, এই অনুষ্ঠান শেষ হলেই তাদের সঙ্গে অনুশীলনে যোগ দেবেন তিনি। প্রতিশ্রুতি দেন, শিরোপা জেতার জন্য উজাড় করে দেবেন নিজেকে।দলের পক্ষ থেকে কথা বলেন অধিনায়ক। হাসি-আনন্দেই নতুন সদস্যকে বরণ করে নেন তারা।এরপর যান মাঠে, আগামী আড়াই বছর যেখানে আলো ছড়ানোর চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন রোনালদো। দুই সারিতে দাঁড়ানো শিশুদের সবার সঙ্গে হাত মিলিয়ে প্রবেশ করেন মাঠে। দর্শকদের তুমুল চিৎকারে শুরুতে কিছুক্ষণ কথাই শোনা যাচ্ছিল না। এমন উষ্ণ অভ্যর্থনার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানান পাঁচবারের ব্যালন দ’র জয়ী তারকা। প্রত্যয় জানান তাদের শিরোপা এনে দেওয়ার। 

মাঠ ঘুরে ঘুরে নিজের স্বাক্ষর করা বেশ কিছু বল লাথি দিয়ে পাঠান গ্যালারিতে। টিকেট কেটে আসা ভাগ্যবান কয়েকজন পেলেন সেগুলো। ছোট্ট একটি মেয়েকে নিজে থেকে গিয়ে একটি বল দিয়ে এলেন রোনালদো। এই উপহার পেয়ে ঘোর যেন কাটছিল না ক্ষুদে সেই দর্শকের।সবার ছোট্ট সন্তান ছাড়া রোনালদোর পরিবারের সবাই আসেন মাঠের মাঝের মঞ্চে। জবাব দেন দর্শকদের অভিবাদনের। যেভাবে সবাই বরণ করে নিয়েছে এর জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে আবার ধন্যবাদ জানিয়ে বিদায় নেন রোনালদো।   ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ার পর মাস দেড়েক দলবিহীন থাকা অভিজ্ঞ এই ফরোয়ার্ড নতুন ঠিকানা বেছে নেন গত শুক্রবার। আড়াই বছরের চুক্তিতে যোগ দেন আল নাসেরে। সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, চুক্তির অঙ্কটা ২০ কোটি ইউরোর বেশি।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য