স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ২০ মে : ভারতের বিজ্ঞান বলয়ে ইন্দ্রপতন, প্রয়াত মহান ভারতীয় বিজ্ঞানী জয়ন্ত নারলিকর। বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর। জ্যোতির্পদার্থবিজ্ঞানে অগ্রণী অবদানের জন্য দেশ চিরকাল মনে রাখবে পদ্মভূষণ এই বিজ্ঞানীকে। আজীবন বিজ্ঞানকে জনপ্রিয় করার ব্রতে সচেষ্ট ছিলেন তিনি। বিজ্ঞান গবেষণার জন্য গড়েছেন একাধিক প্রতিষ্ঠান।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার ভোরে নিজের বাড়িতে ঘুমের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে অধ্যাপক নারলিকরের। সম্প্রতি শহরের একটি হাসপাতালে তাঁর নিতম্বের অস্ত্রোপচার হয়েছিল। এছাড়াও বার্ধক্যজনিত একাধিক শারীরিক অসুস্থতা ছিল। তিন মেয়ে রয়েছে কিংবদন্তি ভারতীয় জ্যোতির্পদার্থবিজ্ঞানীর।
১৯৩৮ সালের ১৯ জুলাই মহারাষ্ট্রে জন্ম জয়ন্ত নারলিকরের। বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় এবং কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী তিনি। বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়েই গণিত বিভাগের কৃতি অধ্যাপক ছিলেন জয়ন্ত নারলিকরের বাবা বিষ্ণু বাসুদেব নারলিকর। কেমব্রিজে গণিতশাস্ত্রে অসামান্য ব্যুৎপত্তির জন্য র্যাংলার এবং টাইসন পদক পান জয়ন্ত নারলিকর। দেশে ফিরে মুম্বইয়ের টাটা ইনস্টিটিউট অফ ফান্ডামেন্টাল রিসার্চে যোগ দেন। নারলিকর স্থিতাবস্থা তত্ত্বের অন্যতম প্রবক্তা। ইংরেজি ও মারাঠি ভাষায় একাধিক বিজ্ঞান বিষয়ক গ্রন্থের রচয়িতা। ভারতের একজন বিশিষ্ট কল্পবিজ্ঞানের কাহিনির লেখকও। মাতৃভাষা মারাঠিতে রচিত তাঁর কল্পবিজ্ঞান কাহিনিগুলি বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে।
১৯৮৮ সালে জ্যোতির্পদার্থ বিজ্ঞান চর্চার জন্য ইন্টার-ইউনিভার্সিটি সেন্টার ফর অ্যাস্ট্রোনমি অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোফিজিক্স (IUCAA) গড়ে তোলেন নারলিকর। আইইউসিএএ-র প্রতিষ্ঠাতা পরিচালকও ছিলেন তিনি। ১৯৬৫ সালে পদ্মভূষণ পান ড. জয়ন্ত নারলিকর। বিজ্ঞানকে সর্বস্তরে জনপ্রিয় করায় ১৯৯৬ কালে ইউনেস্কো কলিঙ্গ সম্মান দেয় তাঁকে। ২০১২ সালে পান ওয়ার্ল্ড একাডেমি অফ সায়েন্স পুরস্কার। মারাঠি ভাষায় লেখা আত্মজীবনী গ্রন্থের জন্য ২০১৪ সালে সাহিত্য একাডেমি পুরস্কার পান বিশ্ববরেণ্য এই বিজ্ঞানী।