স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ০৭ ফেব্রুয়ারি : আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যদি ভারতীয় অবৈধবাসীদের প্লেনে তুলে নিজেদের দেশে ফেরত পাঠাতে পারেন, তা হলে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের ক্ষেত্রে একই পদক্ষেপ করতে অসুবিধা কোথায়? অসমের ট্রানজ়িট ক্যাম্পে আটক ৬৩ জন বাংলাদেশি নাগরিকের প্রত্যর্পণ সংক্রান্ত মামলায় শুক্রবার এই প্রশ্ন তুলল সুপ্রিম কোর্ট।
বিচারপতি এ এস ওকা এবং বিচারপতি উজ্জ্বল ভূঞার বেঞ্চ দু’সপ্তাহের মধ্যে আটক বাংলাদেশিদের দেশে ফেরত পাঠানোর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র এবং অসম সরকারকে। বেঞ্চের প্রশ্ন, ‘‘ট্রাম্প যদি বেআইনি অভিবাসীদের ক্ষেত্রে এমন দ্রুত পদক্ষেপ করতে পারেন, তা হলে মোদী সরকারের অসুবিধা কোথায়?’’
২০০৯-এর নভেম্বরে জারি হওয়া কেন্দ্রীয় সরকারের বিজ্ঞপ্তির অনুচ্ছেদ ২ (৫) ধারায় স্পষ্ট বলা ছিল, পরিচয় যাচাই এবং প্রত্যর্পণের প্রক্রিয়া ৩০ দিনের মধ্যে সেরে ফেলতে হবে। কিন্তু তা সত্ত্বেও কয়েক বছর ধরে ওই ৬৩ জন বাংলাদেশি নাগরিককে অসমের ট্রানজ়িট ক্যাম্পে আটকে রাখা হয়েছে বলে আবেদনকারী পক্ষের তরফে শীর্ষ আদালতে অভিযোগ করা হয়েছিল। বিনা বিচারে অনির্দিষ্ট কাল ধরে আটকে রাখার ঘটনা যে ভারতীয় সংবিধানের ২১ নম্বর ধারার (মৌলিক অধিকার সংক্রান্ত) পরিপন্থী, সে কথা কেন্দ্র এবং অসম সরকারকে মনে করিয়ে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
বন্দিশিবিরে আটক ৬৩ জনকে কেন্দ্র ‘বাংলাদেশি’ বলে চিহ্নিত করলেও তাঁরা আদতে কোন দেশের, তা প্রামাণ্য ভাবে নির্ধারণ করতে পারেনি সরকার। যাঁদের ‘বাংলাদেশি’ বলা হয়েছে, ঢাকা তাঁদের নিজের নাগরিক বলে মানতে বা ফেরাতে নারাজ। আটকদের ঠিকানাও জানা সম্ভব হয়নি এখনও। শীর্ষ আদালত এ প্রসঙ্গে বলেছে, কাউকে ‘বিদেশি’ বলে চিহ্নিত করলে অবিলম্বে তাঁকে নিজের দেশে ফেরানোর দায়িত্ব সরকারের। ঠিকানা না জানাটা অজুহাত হতে পারে না। আটক অবৈধবাসী যে দেশের নাগরিক, সেখানকার রাজধানীতে ফেরত পাঠাতে হবে।
প্রসঙ্গত, বুধবার দুপুরে অবৈধ ভারতীয় অভিবাসীদের নিয়ে অমৃতসরের শ্রী গুরু রামদাসজি বিমানবন্দরে অবতরণ করে মার্কিন সেনাবাহিনীর সি-১৭ বিমান। বিমানটি মঙ্গলবার টেক্সাস থেকে রওনা দিয়েছিল। এই অবৈধ অভিবাসীদের মধ্যে ২৫ জন মহিলা এবং ১২ জন নাবালকও রয়েছেন। তাদের মধ্যে কনিষ্ঠতম সদস্যের বয়স চার বছর। তাঁদের অনেককে হাতকড়া-শিকল পরিয়ে বিমানে তোলা হয়েছিল বলে অভিযোগ। সুপ্রিম কোর্টে বাংলাদেশি অবৈধবাসী মামলার শুনানিতে এ বার উঠে এল ট্রাম্প সরকারের সেই পদক্ষেপের প্রসঙ্গ।