স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ০৯ ডিসেম্বরঃ অশান্ত মণিপুরে গোষ্ঠীহিংসার ঘটনায় নষ্ট হওয়া সম্পত্তির হিসাব চাইল শীর্ষ আদালত। সোমবার মণিপুর সরকারের কাছে এ বিষয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। মণিপুরে বিগত এক বছরে পুড়ে যাওয়া কিংবা দখলকৃত জমি-বাড়ি ও সরকারি সম্পত্তির হিসাব আগামী বছরের শুরুতেই রাজ্যকে মুখবন্ধ খামে জমা দিতে হবে। পাশাপাশি, সোমবারই ইন্টারনেট পরিষেবা চালু হয়েছে মণিপুরে। প্রায় ২৩ দিন পর পরিস্থিতি খানিক নিয়ন্ত্রণে আসায় মোবাইল ইন্টারনেটের উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে সে রাজ্যের সরকার।
গত এক বছর ধরে রাজ্যে চলতে থাকা হিংসার ঘটনায় কত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, সোমবারই মণিপুর সরকারকে তার হিসাব করতে নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। পাশাপাশি, ওই সব ঘটনায় দোষীদের চিহ্নিত করে কড়া পদক্ষেপ করারও নির্দেশ দিয়েছে প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ। আগামী ২০ জানুয়ারি ওই মামলার পরবর্তী শুনানি।
গত বছরের অগস্ট মাসেও মণিপুর নিয়ে সক্রিয় হয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ বিলি, পুনর্বাসন এবং তাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার গোটা প্রক্রিয়াটির তদারকি করতে হাই কোর্টের তিন জন প্রাক্তন মহিলা বিচারপতিকে নিয়ে একটি কমিটি গঠনেরও নির্দেশ দেওয়া হয়। অন্য দিকে, বিচারাধীন ফৌজদারি মামলাগুলির তদন্ত পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন পুলিশ প্রধান দত্তাত্রেয় পদসালগিকরকে।
গত বছরের মে মাস থেকেই মেইতেই এবং কুকি-জো সম্প্রদায়ের মধ্যে হিংসা ঘিরে উত্তপ্ত মণিপুর। এ পর্যন্ত ২৫০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। গৃহহীন হয়েছেন আরও বহু মানুষ। গত সেপ্টেম্বরে পর পর দু’টি ড্রোন হামলাকে কেন্দ্র করে ফের পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মণিপুরে। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় একাধিক বাড়িঘর। গত মাসেও জিরিবামে কুকি জঙ্গি এবং সিআরপিএফ জওয়ানদের মধ্যে গুলি বিনিময় হয়। অভিযোগ, সেই সময় এক দল কুকি জঙ্গি মেইতেই সম্প্রদায়ের তিন মহিলা এবং তিন শিশুকে অপহরণ করে। দিন কয়েক পরে অপহৃত ছ’জনের দেহ নদীতে ভেসে আসে। প্রকাশ্যে আসে শিউরে ওঠার মতো ময়নাতদন্তের রিপোর্টও। জিরিবামের ওই ঘটনার পর নতুন করে উত্তেজনা ছড়ায় মণিপুরে। বিচার চেয়ে এবং অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে ইম্ফলের রাস্তায় বিক্ষোভ শুরু হয়। রাজ্যের পাঁচ জেলায় জারি করা হয় কার্ফু। ইন্টারনেট পরিষেবার উপরেও নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। তার মাঝেই আবার গত ১৬ নভেম্বর রাজ্যের বেশ কয়েক জন বিধায়কের বাড়িতে হামলা চালায় উত্তেজিত জনতা। হামলার চেষ্টা হয় মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহের পৈতৃক ভিটেতেও। ওই ঘটনায়ও বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।