Friday, July 26, 2024
বাড়িজাতীয়পদ্মশ্রী ফেরাচ্ছেন ছত্তিশগড়ের বৈদ্যরাজ !

পদ্মশ্রী ফেরাচ্ছেন ছত্তিশগড়ের বৈদ্যরাজ !

স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ২৭ মে:   জঙ্গল ঘেরা ছত্তিশগড়ের প্রত্যন্ত গ্রামে চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার পুরস্কার স্বরূপ পদ্মশ্রী সম্মান দেওয়া হয়েছিল আয়ুর্বেদ চিকিৎসক হেমচন্দ মাঝিকে। এক মাস পার হতে না হতেই সোমবার সেই পুরস্কার ফিরিয়ে দেওয়ার ঘোষণা করলেন ‘বৈদ্যরাজ’। মাওবাদীদের হুমকির জেরেই তিনি এই পুরস্কার ফিরিয়ে দিতে চান বলে জানিয়েছেন এদিন। তাঁর প্রদ্মশ্রী ফেরানোর ঘোষণায় স্বাভাবিকভাবেই শোরগোল শুরু হয়েছে ছত্তিশগড়ের প্রশাসনিক মহলে।

পুরস্কার ফেরানো প্রসঙ্গে হেমচন্দ মাঝি জানান, “মাওবাদী হামলায় পরিবারের এক সদস্যকে আগেই হারিয়েছি আমি। মিথ্যা অভিযোগে কোনও কারণ ছাড়াই আমার ভাইপোকে হত্যা করেছিল মাওবাদীরা। পরিবারের কাউকে আর হারাতে চাই না। নতুন করে ফের মৃত্যুর ছায়া ঘনিয়েছে পরিবারের উপর। যার জেরেই ‘পদ্মশ্রী’ পুরস্কার ফিরিয়ে দিতে চাই আমি।” একইসঙ্গে তিনি বলেন, “মাওবাদীরা প্রশ্ন করছে কীভাবে এই পুরস্কার পেলাম আমি? আমি অবশ্য তাঁদের কাছে বলার প্রয়োজন বোধ করিনি যে আমার কাজের জন্যই এই পুরস্কার। মাত্র ২০ বছর বয়স থেকে একাধিক রোগের জড়িবুটি চিকিৎসা করে চলেছি, বিশেষ করে ক্যানসারের।” পরিবারের সঙ্গে আলোচনার পরই পদ্মশ্রী পুরস্কার ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত তিনি নিয়েছেন বলে জানান এদিন।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৬ মে চামেলি ও গৌরদন্দ গ্রামে মাঝির বিরুদ্ধে পোস্টার দেয় মাওবাদীরা। পোস্টারে ছিল রাষ্ট্রপতির হাত থেকে তাঁর পদ্মশ্রী নেওয়ার ছবি। রাষ্ট্রীয় পুরস্কার নিয়ে প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি অভিযোগ করা হয়, ছোটডংরায় লৌহ আকরিক প্রকল্পে কমিশনকে সাহায্য করেছিলেন তিনি। এবং এই কাজের জন্য বিপুল পরিমাণ টাকাও দেওয়া হয় তাঁকে। যদিও আগেই মাওবাদীদের অভিযোগ উড়িয়ে দেন মাঝি। এর আগেও মাওবাদীরা একই অভিযোগ তুলেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। যার জেরে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করায় তাঁকে থাকার জন্য সরকারি বাড়ির পাশাপাশি দেওয়া হয়েছিল নিরাপত্তা। যদিও সেই বাড়িতে পাঁচিল ও জলের পরিষেবা না থাকার অভিযোগে ভাড়া বাড়িতে চলে যান মাঝি। এর পর ফের মাওবাদী হুমকি আসায় পদ্মশ্রী পুরস্কার ফেরানোর ঘোষণা করলেন মাঝি।

উল্লেখ্য, ৭২ বছর বয়সি হেমচন্দ মাঝি দীর্ঘ বছর ধরে জড়িবুটি চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত। জঙ্গলের মধ্যে প্রত্যন্ত গ্রামগুলিতে যেখানে চিকিৎসা পরিষেবা দুর্লভ সেই সব জায়গায় পৌঁছে গিয়ে মানুষকে চিকিৎসা দিতেন তিনি। তাঁর কাজের জন্য এলাকায় ‘বৈদ্যরাজ’ নামেই বেশি পরিচিত ছিলেন হেমচন্দ মাঝি। এই কাজকে স্বীকৃতি দিতেই পদ্মশ্রী পুরস্কারের জন্য এবছর তাঁর নাম ঘোষণা করে সরকার। গত মাসেই রাষ্ট্রপতির হাত থেকে তিনি নিয়েছিলেন দেশের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক পুরস্কার।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য