স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ২ এপ্রিল: সব ইভিএমের ভোটের সঙ্গে ভিভিপ্যাট স্লিপ মিলিয়ে দেখার আর্জি নিয়ে নির্বাচন কমিশনকে নোটিস পাঠাল সুপ্রিম কোর্ট। ইভিএমের সঙ্গে থাকা ভিভিপ্যাট স্লিপ ভোটারদের একটি ব্যালট বক্সে ফেলার অধিকার দেওয়ারও আর্জি জানিয়েছেন এই মামলার আবেদনকারী আইনজীবী অরুণকুমার আগরওয়াল। এই মামলার রায় ভোট মেটার আগে হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ।
বর্তমানে যে কোনও বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে বেছে নেওয়া পাঁচটি ইভিএমে পড়া ভোটের সঙ্গে ভিভিপ্যাট যন্ত্রে বেরোনো স্লিপ মিলিয়ে দেখা হয়।
আবেদনকারীর বক্তব্য, সরকার ২৪ লক্ষ ভিভিপ্যাট যন্ত্র কিনতে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা খরচ করেছে। কিন্তু তার মধ্যে মাত্র ২০ হাজার ভিভিপ্যাটের স্লিপ সংশ্লিষ্ট ইভিএমের ভোটের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হয়।
আবেদনকারীর বক্তব্য, ভিভিপ্যাটের তথ্য ও ইভিএমে পড়া ভোটের মধ্যে পার্থক্যের অনেক অভিযোগ জানা গিয়েছে। তাই সব ভিভিপ্যাট স্লিপ গণনা করা প্রয়োজন। সেই সঙ্গে ভিভিপ্যাট স্লিপ একটি ব্যালট বাক্সে ফেলার অধিকার দেওয়া উচিত ভোটারদের।
নির্বাচন কমিশনের বিধি অনুযায়ী, একটির পরে একটি ইভিএমের সঙ্গে ভিভিপ্যাট স্লিপ মিলিয়ে দেখা হয়। সেই বিধিকেও চ্যালেঞ্জ করেছেন আবেদনকারী। তাঁর বক্তব্য, আরও বেশি সংখ্যক নির্বাচনী আধিকারিক নিয়োগ করে বিধানসভা কেন্দ্রের সব ভিভিপ্যাট স্লিপ ৫-৬ ঘণ্টার মধ্যে মিলিয়ে দেখা যায়।
ভিভিপ্যাট স্লিপের সঙ্গে ইভিএমে পড়া ভোট মিলিয়ে দেখা নিয়ে বিতর্ক দীর্ঘদিনের। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের আগে একটি বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তত ৫০ শতাংশ ইভিএমের সঙ্গে ভিভিপ্যাট স্লিপ মিলিয়ে দেখার আবেদন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় ২১টি বিরোধী রাজনৈতিক দল। তার আগে প্রতি বিধানসভা কেন্দ্রে যে কোনও একটি বেছে নেওয়া ইভিএমের ভিভিপ্যাট স্লিপ সেই ইভিএমের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হত। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সেই ইভিএমের সংখ্যা বেড়ে হয় পাঁচ।
এর আগে সব ইভিএমে পড়া ভোটের সঙ্গে ভিভিপ্যাট স্লিপ মিলিয়ে দেখার আর্জি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল ‘অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস’। গত বছরের জুলাই মাসে সেই মামলার শুনানিতে শীর্ষ আদালত মন্তব্য করে, নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে জনস্বার্থ মামলা অনেক সময়ে নির্বাচন নিয়ে খুব বেশি সন্দেহ তৈরি করে।
জয়রাম রমেশের বক্তব্য, ‘‘১০০ শতাংশ ইভিএমের ভোট ভিভিপ্যাটের সঙ্গে মিলিয়ে দেখার দাবি নিয়ে বারবার নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিল ইন্ডিয়া মঞ্চের প্রতিনিধি দল। কিন্তু কমিশন দেখা করতে অস্বীকার করেছে। এই নোটিস একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রথম পদক্ষেপ। তবে কার্যকর হতে গেলে ভোট মেটার আগে এই মামলার রায় হওয়া উচিত।’’