স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ১৩ জুন : ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসেও বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি-র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে লন্ডনের বৈঠকে এমনটাই জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। তবে তার জন্য ওই সময়ের মধ্যে পর্যাপ্ত সংস্কার এবং বিচারের বিষয়ে অগ্রগতি প্রয়োজন। সে কথাও খালেদা জিয়ার পুত্রকে জানিয়ে দিয়েছেন ইউনূস। শুক্রবার লন্ডনের ডরচেস্টার হোটেলে তাঁদের মধ্যে বৈঠক হয়। বৈঠকের পর যৌথ ভাবে একটি বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। সেখানেই ফেব্রুয়ারিতে ভোটের বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো।
গত ৫ অগস্ট বাংলাদেশে গণবিক্ষোভের জেরে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। তার পর ৮ অগস্ট ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। বাংলাদেশে রাজনৈতিক সেই পালাবদলের পর তারেকের সঙ্গে ইউনূসের এটাই প্রথম বৈঠক। বাংলাদেশে প্রয়োজনীয় কিছু সংস্কারের পর সাধারণ নির্বাচন আয়োজন করাই ছিল অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল চলতি বছরের মধ্যেই নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানিয়েছিল। কিন্তু কিছু দিন আগে ইউনূস ঘোষণা করেন, ২০২৬ সালের এপ্রিল মাসের আগে নির্বাচন সম্ভব নয়। এপ্রিলের প্রথমার্ধে ভোট হবে বাংলাদেশে। ইউনূসের এই সিদ্ধান্তে বিস্তর বিতর্ক হয়েছে। বিএনপি এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে। সেই আবহে তারেকের সঙ্গে ইউনূসের এই বৈঠক অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। বৈঠকে যে ভোট নিয়ে আলোচনা হবে, তা একপ্রকার নিশ্চিত ছিল।
লন্ডনের স্থানীয় সময় অনুযায়ী সকাল ৯টা নাগাদ তারেক-ইউনূসের বৈঠক শুরু হয়েছিল। তা চলেছে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত। দেড় ঘণ্টার এই বৈঠকে ছিলেন বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম এবং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। বৈঠক শেষে যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ইউনূস এবং তারেকের বৈঠক হয়েছে অত্যন্ত সৌহার্দ্যমূলক পরিবেশে। প্রধান উপদেষ্টার কাছে রমজানের আগে ভোট করানোর প্রস্তাব দেন তারেক। বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদারও তেমনই ইচ্ছা। ইউনূস জানিয়েছেন, সব প্রস্তুতি সম্পূর্ণ হলে রমজান মাসের আগের সপ্তাহে নির্বাচনের আয়োজন করা যেতে পারে। তবে সে ক্ষেত্রে ওই সময়ের মধ্যে সংস্কার এবং বিচারের পর্যাপ্ত অগ্রগতি প্রয়োজন। ইউনূসের এই অবস্থানকে স্বাগত জানিয়েছেন তারেক।
এপ্রিলে নির্বাচনের বিরোধিতা করে বিএনপি মূলত তিনটি কারণ তুলে ধরেছে। তাদের দাবি, এপ্রিল মাসের আবহাওয়া নির্বাচনের অনুকূল নয়। সে সময়ে যেমন গরম বেশি থাকে, তেমন নিম্নচাপ এবং ঝড়বৃষ্টির আশঙ্কাও থাকে। এ ছাড়া, ভোটের জন্য যে সময় নির্ধারণ করা হয়েছে, তা রমজান মাসের পরপরই। ফলে রোজার মধ্যে নির্বাচনী প্রচার চালাতে হবে। যাতে রাজনৈতিক দলগুলির সমস্যা হতে পারে। এ ছাড়া, এপ্রিল মাসে বাংলাদেশে একাধিক পরীক্ষা চলে। সে বিষয়টিও মাথায় রাখতে বলা হচ্ছে বিএনপি-র তরফে।