স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ১৩ জুন : ইজ়রায়েল-ইরান সংঘাতের জেরে বিশ্ব জুড়ে ব্যাহত হল বিমান পরিষেবা। ইতিমধ্যেই দেশের আকাশসীমা (এয়ারস্পেস) বন্ধ করে দিয়েছে ইরান। সে দেশে বিমান পরিষেবাও আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। ইরানে ইজ়রায়েলি বিমানহানার পরেই আকাশসীমা বন্ধ করেছে পড়শি দেশ ইরাক এবং জর্ডন। এই দুই দেশের আকাশপথ ব্যবহার করে গন্তব্যে যেতে পারছে না কোনও উড়ান। পরবর্তী নির্দেশ না-দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে ইজ়রায়েলের রাজধানী তেল আভিভের বেন গুরিয়ন বিমানবন্দর।
তিনটি দেশের আকাশসীমা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ব্যাহত হয়েছে বিশ্বের নানা প্রান্তের বিমান পরিষেবা। ইরানের সীমান্তবর্তী পূর্ব ইরাক বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত ‘এয়ার করিডর’। প্রতি মুহূর্তে এই আকাশপথ ধরে পশ্চিমের কোনও দেশে কিংবা ইউরোপে যায় এশিয়ার কোনও দেশের বিমান। আবার ফিরতি পথেও এই করিডর ব্যবহার করে এই বিমানগুলি। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তা অবরুদ্ধ হয়ে যাওয়ায় বিকল্প পথে গন্তব্যে যেতে হচ্ছে বিমানগুলিকে। এর ফলে বাড়ছে জ্বালানির খরচও।
ইজ়রায়েলি বিমান সংস্থা এল আল এয়ারলাইন্স আপাতত ইজরায়েল বিমান ওঠা-নামা বন্ধ রেখেছে। সে দেশের আর এক বিমান সংস্থা ইসরেয়ার তেল আভিভ বিমানবন্দর থেকে বিমান সরিয়ে নিচ্ছে। কারণ, সংস্থাটি মনে করছে, আপাতত এক সপ্তাহ বেন গুরিয়ন বিমানবন্দর বন্ধ থাকবে। বিমান সংস্থা লুফৎহংস জানিয়েছে, আপাতত তারা তেহরানমুখী সমস্ত বিমানের পরিষেবা বন্ধ রাখছে। আর এক বিমান সংস্থা এমিরেটস জানিয়েছে, তারা ইরাক, জর্ডন, লেবানন এবং ইরানে পরিষেবা দেওয়া বন্ধ রাখছে।
এয়ার ইন্ডিয়ার ইউরোপগামী বিমানগুলি পশ্চিম এশিয়ার ওই বহুল প্রচলিত এবং জনপ্রিয় করিডর ধরেই যাতায়াত করত। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে বিকল্প পথ ধরে গন্তব্যে যাচ্ছে বিমানগুলি। এয়ার ইন্ডিয়ার তরফে একটি বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, ইরানের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য সে দেশের আকাশসীমা বন্ধ রয়েছে। ফলে সেই আকাশসীমা অতিক্রম করে ইউরোপের দেশগুলিতে পৌঁছোতে পারছে না বিমানগুলি। এই পরিস্থিতিতে বহু বিমানের যাত্রাপথ বদলানো হচ্ছে। অনেক বিমানকে মাঝপথ থেকেই ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। এয়ার ইন্ডিয়া জানিয়েছে, ১৬টি বিমানের যাত্রাপথ বদলানো হয়েছে কিংবা বিমানগুলিকে ফের ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
বিমান চলাচলকারী একাধিক বিমানসংস্থার দাবি, বিকল্প পথ হিসাবে এশিয়া থেকে ইউরোপের দিকে যাওয়া বিমানগুলি মিশর এবং সৌদি আরব হয়ে গন্তব্যে পৌঁছোতে পারে। অথবা অশান্ত পশ্চিম এশিয়ার আকাশসীমা এড়িয়ে তুরস্ক, আজ়ারবাইজান এবং তুর্কমেনিস্তান হয়ে গন্তব্যের উদ্দেশে যেতে পারে। তবে দু’টি ক্ষেত্রেই উড়ানের সময় এবং বিমানের জ্বালানি খরচ বাড়বে।