স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ২৮ জানুয়ারি : শেখ হাসিনাহীন বাংলাদেশে সম্পূর্ণ বদলে গিয়েছে রাজনৈতিক চিত্র। পালটে গিয়েছে কূটনৈতিক নীতিও। পদ্মাপাড়ে এখন ভারত বিরোধী হাওয়া। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়েই আসরে নেমেছে চিন, পাকিস্তান। এবার দিল্লিকে টেক্কা দিতে খুব তাড়াতাড়ি বাংলাদেশিদের জন্য হাসপাতাল বানাবে চিন! এমনটাই জানিয়েছেন বাংলাদেশের বিদেশ উপদেষ্টা মহম্মদ তৌহিদ হোসেন।
হাসিনার পতনের পর মহম্মদ ইউনুসের জমানায় দিল্লি-ঢাকা সম্পর্ক অনেকটাই বদলে গিয়েছে। লাগামছাড়া হিন্দু নির্যাতন, মুজিবকন্যার প্রত্যর্পণ, অনুপ্রবেশ এই রকম একাধিক বিষয়ে দুদেশের সম্পর্কে টানাপড়েন চলছে। এই সুযোগকেই পাখির চোখ করেছে বেজিং। গতকাল তৌহিদ হোসেন জানান, ” চিকিৎসার জন্য ভারতীয় ভিসা পেতে সমস্যায় পড়া বাংলাদেশিদের জন্য চিন ঢাকার নিকটতম চিনা শহর কুনমিংয়ে তিনটি হাসপাতালকে মনোনীত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এছাড়া চিন সরকার ঢাকার উপকণ্ঠে পূর্বাচলে সরকারি মালিকানাধীন জমিতে একটি বৃহৎ সরকারি হাসপাতাল নির্মাণে সম্মত হয়েছে। ভারতে ভিসা সমস্যা অব্যাহত থাকায় আমরা চিকিৎসার জন্য বিকল্প গন্তব্য খুঁজছিলাম। ভারতীয় ভিসার সমস্যার কারণে আমরা বিশ্বাস করি এটি একটি কার্যকর বিকল্প। কুনমিং ইউনানের রাজধানী হওয়ায় ইউনানের ডেপুটি গভর্নর বেজিংয়ে আমার সঙ্গে দেখা করার পর বাংলাদেশি রোগীদের জন্য হাসপাতাল মনোনীত করার সিদ্ধান্ত জানান।”
প্রসঙ্গত, চিনের বিদেশ সচিব ওয়াং ইয়ের আমন্ত্রণে গত ২০ থেকে ২৪ জানুয়ারি বেজিংয়ে সফরে গিয়েছিলেন তৌহিদ হোসেন। ওয়াং ইয়ের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক এবং চিনা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনাও করেন তিনি। বিশ্লেষকদের মতে, এই মুহূর্তে ভারত উপমহাদেশে কৌশলগত অবস্থান মজবুত করছে চিন। বাংলাদেশে ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ জাল ছড়াতে মরিয়া তারা।
সাম্প্রতিক সময়ে ওপার বাংলায় আনাগোনা বাড়িয়ে চিনা আধিকারিকরা। আর এই বিতর্কিত প্রকল্পের একটি অংশ গিয়েছে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের উপর দিয়ে। যা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে ভারত। পরিকাঠামো উন্নয়নের নামে এই প্রকল্প যে আদতে একটা জাল তা নিয়ে বরাবরই দিল্লি সরব হয়েছে। হাসিনা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন চিনের এই প্রকল্প এড়িয়ে গিয়েছেন। কিন্তু এখন ইউনুসের সরকার। তাঁর সঙ্গে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের সুযোগ নিয়ে ফাঁদ পাততে চাইছে বেজিং। তাই তারা বাংলাদেশিদের চিকিৎসাকে হাতিয়ার করেছে।