স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ২২ জানুয়ারি: বাণিজ্যিক স্বার্থে চিনের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতি করার চেষ্টা হয়তো করবেন আমেরিকার নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনের বাণিজ্যিক এবং কৌশলগত একাধিপত্যকে যে তিনি খোলা হাতে ছাড় দেবেন না, দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতেই তা স্পষ্ট করে দিলেন তিনি। প্রথম দিন দায়িত্ব নিয়েই আমেরিকার নতুন বিদেশসচিব মার্কো রুবিয়ো চতুর্দেশীয় অক্ষ কোয়াড-এর প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলির বিদেশমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করতে প্রস্তুত। কাল ওই বৈঠক হওয়ার কথা।
কূটনৈতিক সূত্রের খবর, বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর যখন আমেরিকা যাত্রা করেন, তখনও নয়াদিল্লির উদ্বেগ ছিল চিন-বিরোধী এই কোয়াড অক্ষটিকে কতটা গুরুত্ব দেবেন ট্রাম্প। যে কারণে জাপানের পক্ষ থেকে যখন ট্রাম্পের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের পরের দিনই কোয়াড (বিদেশমন্ত্রী পর্যায়ের) বৈঠক করার প্রস্তাব দেওয়া হয়, ভারত তাতে উচ্চবাচ্য করেনি।
সফররত জয়শঙ্কর বুঝতে চাইছিলেন আমেরিকার নতুন প্রশাসনের মনোভাব। প্রসঙ্গত গত কালই তিনি আলাদা করে জাপানের বিদেশমন্ত্রী এবং অস্ট্রেলিয়ার বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে আঞ্চলিক, দ্বিপাক্ষিক এবং কোয়াড সম্পর্কিত বিষয়গুলি নিয়ে বৈঠক করেন। সেখানেই জয়শঙ্কর স্পষ্ট ইঙ্গিত পান যে, সেনেটের কাছ থেকে বিদেশসচিব পদের সিলমোহর পাওয়ার পরই মার্কো রুবিয়ো তাঁর প্রথম কর্মসূচি হিসাবে সমুদ্র নিরাপত্তা ও বাণিজ্য নিয়ে বসবেন তাঁদের সঙ্গে। রাতে নিজের দফতরে বৈঠক করার পরই রুবিয়ো কোয়াডের ‘বন্ধুদের’ সঙ্গে বৈঠক সারবেন।
অস্ট্রেলিয়ার বিদেশমন্ত্রী পেনি ওয়ং জানিয়েছেন, ট্রাম্পের শপথের পরপরই কোয়াড গোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের সঙ্গে এই বৈঠক প্রমাণ করে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা রয়েছে ‘সমমনস্ক বন্ধুদের’। তাঁর বক্তব্য, “কোয়াডভুক্ত সমস্ত রাষ্ট্রের সামগ্রিক দায়বদ্ধতা এটাই প্রমাণ করে, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যখন ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা প্রয়োজন, সেখানে প্রত্যেকেই লৌহ সংকল্পে আবদ্ধ।”
নয়াদিল্লিরও বক্তব্য— চিন নয় বরং ভারতকেই যে এশিয়ার প্রধান ভরকেন্দ্র হিসাবে দেখছে আমেরিকার নতুন জমানা, তার ইঙ্গিত মিলেছে প্রথম দিনই। ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের অনুষ্ঠানে জয়শঙ্করকে আসন দেওয়া হয়েছিল একেবারে প্রথম সারিতে, যাকে ইতিবাচক সংকেত হিসাবেই দেখা হচ্ছে। তাঁর দু’টি সারি পিছনেই বসেন জাপানের বিদেশমন্ত্রী তাকেশি আইওয়া এবং অস্ট্রেলিয়ার বিদেশমন্ত্রী পেনি ওয়ং, অর্থাৎ কোয়াডের আর দুই সদস্য। অর্থাৎ কোয়াডভুক্ত রাষ্ট্রগুলিকে প্রথম দিকেই রেখেছে আমেরিকার নতুন প্রশাসন।
অন্য দিকে, ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও তাঁকে ‘বন্ধু’ হিসাবে সম্বোধন করেছেন। মোদী তাঁর বার্তায় বলেছেন, “অভিনন্দন প্রিয় বন্ধু ডোনাল্ড ট্রাম্প। আমেরিকার ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসাবে আপনার এই পদমর্যাদা ঐতিহাসিক। আমি আবারও আপনার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ভাবে কাজ করতে চাই, যাতে দু’টি দেশেরই উপকার হয় ও গোটা বিশ্ব কল্যাণময় ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যেতে পারে। আপনার নয়া দফার সাফল্য কামনা করি।”