স্যন্দন প্রতিনিধি। আগরতলা। ২২ জানুয়ারি : বিধানসভায় শোরগোল ফেলে দেওয়ার পর ঊনকোটি জেলার জেলাসদর কৈলাসহর বিধানসভার বিধায়ক বীরজিৎ সিনহা বুধবার কৈলাসহরের বন্যা ও বাঁধ নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেন জেলা কংগ্রেস ভবনে। সাংবাদিক সম্মেলনে বিধায়ক বীরজিৎ সিনহা বলেন, কৈলাসহরের রাঙ্গাউটি গ্রাম পঞ্চায়েতের দেবীপুর এলাকায় বাংলাদেশ সরকার তাদের সীমান্তে বড় ও উঁচু বাঁধ নির্মাণ করার বিষয়টি বিধানসভায় তোলার পরে রাজ্য সরকারের মন্ত্রী সুধাংশু দাস সমর্থন করেন। বিষয়টির গুরুত্ব বোঝে মুখ্যমন্ত্রী কালক্ষেপ না করে দ্রুত পদক্ষেপ নেন।
এর ফলে জেলাশাসক দিলীপ কুমার চাকমা সহ পদস্থ আধিকারিকরা ভারত- বাংলাদেশ সীমান্তে নির্মিত বাঁধটি পরিদর্শন করেন। এখন মূল বিষয় হচ্ছে, কৈলাসহর এলাকা বন্যা কবলিত এলাকা। এখানে মনু নদীর পাড়ে রাজ্যের দীর্ঘ বাঁধ বর্তমান। তিনি বলেন, কয়েক দশক আগে নির্মিত এই বাঁধ মেরামত করা হয়নি। বন্যা এলেই কিছু বোল্ডার ফেলা হয়। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বীরজিৎ বাবু দৃঢ়তার সাথে বলেন, রাজ্য সরকারের উচিত যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে ভারতের অংশের মনু নদীর বাঁধ উঁচু করা ও প্রশস্থ করা। নচেৎ এই বছর কৈলাসহর বন্যায় ডুবতে যাচ্ছে। পাশাপাশি তিনি শহরের বিভিন্ন সুইচ গেটগুলোকে মেরামত করার কথা বলেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বিধায়ক বলেন, জেলা প্রশাসন ও মুখ্যমন্ত্রী ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বাংলাদেশের উঁচু বাঁধ নির্মাণ করার কথা বললেও বিএসএফ সেটাকে বলছে রাস্তা। কোনটা ঠিক তা শুধু বলতে পারবে ভারত সরকার। আর ভারত সরকারের দুর্বলতার জন্যই এই ঘটনা ঘটছে বলে তিনি দাবি করেন। কৈলাসহর বিধানসভার কয়েকবারের বিধায়ক বলেন, কংগ্রেস দল এই ব্যাপার নিয়ে আন্দোলনে যাচ্ছে। আগামী ২৫ তারিখ কৈলাসহরের এয়ারপোর্ট সংলগ্ন স্থানে পথ অবরোধ করা হবে। পরবর্তীতে টিলাবাজারে জমায়েত করে রাঙ্গাউটি গ্রামের দেবীপুর এলাকায় লংমার্চ সংঘটিত করা হবে। অন্যদিকে জেলা কংগ্রেস সভাপতি বদরুজ্জামান বলেন, কৈলাসহরের বিস্তীর্ণ বাঁধের অবস্থা খুবই খারাপ। সামান্য জল হলেই এই বাঁধ ভেঙ্গে যেতে পারে। তিনি উল্লেখ করেন, ২০১৮ সালের বন্যার কথা কেউ ভুলতে পারেনি। বন্যা নিয়ন্ত্রণ দপ্তরকে কোনো কাজ করতেও দেখা যাচ্ছে না। এদিকে বাংলাদেশ সরকার জিরো পয়েন্ট এলাকায় বিশাল উঁচু বাঁধ নির্মাণ করায় আগামীদিনে কৈলাসহরে ভয়াবহ বন্যার পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। বদরুজ্জামান কোনো রাখঢাক না রেখেই বলেন, আগামী পনেরো দিনের মধ্যে বাঁধের কাজ শুরু না হলে, কৈলাসহরের সকল অংশের জনতাকে নিয়ে ৪৮ ঘণ্টার বনধ ডাকা হবে। তারপরেও যদি সরকার বাঁধ নির্মাণে কোনও উদ্যোগ না নেয়, তবে কংগ্রেস দল জোরালো আন্দোলন শুরু করবে।