স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১৭ এপ্রিল। মিয়ানমারের নববর্ষ উপলক্ষে সাধারণ ক্ষমার আওতায় ১,৬০০’র বেশি কারাবন্দির মুক্তি ঘোষণা করেছে সামরিক সরকার।জান্তা সরকারের স্বরাষ্ট্র সচিব লেফটেন্যান্ট জেনারেল অং লিন দোয়ের সই করা বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “৪২ জন বিদেশিসহ ১,৬১৯ কারাবন্দিকে সাধারণ ক্ষমার আওতায় মুক্তি দেওয়া হচ্ছে।”
রোববার এই ঘোষণার পর মিয়ানমারের ইনসেইন কারাগারের বাইর ভিড় জমায় বন্দিদের স্বজনরা। গত বছর বন্দিদের বার্ষিক সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় ২৩,০০০ বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। সে তুলনায় এবারে বন্দিমুক্তির সংখ্যা কম।মুক্তি পাওয়াদের মধ্যে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে উৎখাত হওয়া বেসামরিক সরকারের সদস্যরা আছে কিনা তা পরিষ্কার জানা যায়নি। ঘটনাস্থল থেকে স্থানীয় এক সাংবাদিক বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, এখন পর্যন্ত ইনসেইন কারাগার থেকে কোনও রাজনৈতিক বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হয়নি।‘অ্যাসিস্টেন্স অ্যাসোসিয়েশন অব পলিটিক্যাল প্রিজনারস’ (এএপিপি)- এর হিসাবমতে, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের পর থেকে অন্তত ১৩,২৮২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাছাড়া, সরকারের বিক্ষোভ দমন-পীড়নে নিহত হয়েছে ১, ৭৫৬ জন।
আটকদের মধ্যে ক্ষমতাচ্যুত সরকারের নেত্রী নোবেলজয়ী অং সান সু চি এবং তার অস্ট্রেলীয় অর্থনৈতিক উপদেষ্টা শন টারনেলও আছেন। সু চিকে রাজধানী নিপিধোতে বন্দি রাখা হয়েছে। আর শন টারনেলকে রাখা হয়েছে ইয়াঙ্গুনের ইনসেইন কারাগারে।“জান্তা সরকার রাজনৈতিক বন্দিদেরকে জিম্মি হিসাবে ব্যবহার করে” বলে রোববার রয়টার্সকে জানিয়েছেন এএপিপি-র এক মুখপাত্র।
রোববার কারাগারের সামনে বন্দি স্বজনদের নাম প্ল্যাকার্ডে লিখে অপেক্ষায় আছে পরিবারগুলো। ৮ মাস আগে গ্রেপ্তার হওয়া সন্তানের জন্য ইনসেইন কারাগারের সামনে অপেক্ষায় থাকা এক মা বলেন, তার সন্তান তাকে এপ্রিলে সাধারণ ক্ষমায় ছাড়া পাওয়ার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছিল।কারাগাটির সামনে আরও এক মা অপেক্ষা করছেন সন্তানের জন্য। জান্তার বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলনের কারণে জুনে গ্রেপ্তার হয় তার সন্তান।এর আগেও বিভিন্ন সময়ে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর সন্তানের মুক্তির আশায় কারাগারের সামনে অপেক্ষা করেছেন তিনি। এই মা বলেন, “আমার মনে হয় ওকে আজ ছেড়ে দেবে।”