স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ২৩ অক্টোবর: লেবানন থেকে হিজবুল্লার ছোড়া একটি ড্রোনের বিস্ফোরণে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সেসারিয়ার বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, জানিয়েছে ইসরায়েলি গণমাধ্যম।শনিবার স্থানীয় সময় সকালে ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চলীয় সমুদ্রতীরবর্তী শহর সেসারিয়ায় নেতানিয়াহুর বাড়িতে ড্রোনটি আঘাত হানে।
ওই সময় ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, ড্রোনটি সেসারিয়ায় আঘাত হেনেছে আর তা নেতানিয়াহুর বাড়ি লক্ষ্য করে ছোড়া হয়েছিল। কিন্তু ড্রোনটি সরাসরি নেতানিয়াহুর বাড়িতে আঘাত হেনেছে কি না, তা পরিষ্কার করে জানায়নি।দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) বলেছিল, লেবানন থেকে ছোড়া ওই ড্রোন ‘একটি ভবনে আঘাত হেনেছে’।টাইমস অব ইসরায়েল জানায়, মঙ্গলবার ইসরায়েলের সামরিক সেন্সর কর্তৃপক্ষ ঘটনাটি নিয়ে খবর প্রকাশের অনুমতি দেয়। ড্রোনের আঘাতে বাড়িটির একটি জানালা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এমন একটি ছবি এর আগে প্রকাশ করতে দেয়নি তারা।
বিস্ফোরণে নেতানিয়াহুর বাড়ির বেডরুমের জানালার কাঁচ ফেটে যায়, কিন্তু পুরোপুরি ভেঙে পড়েনি। বিস্ফোরণের আঁচ ঘরের ভেতর পৌঁছায়নি। বুলেটপ্রুফ কাঁচ ও অন্যান্য সুরক্ষা ব্যবস্থার জন্য এমনটি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।একটি ভিডিওতে ওই ড্রোনের বিস্ফোরণে ভবনের বাইরের দিকে হওয়া ক্ষয়ক্ষতির চিহ্ন দেখা গেছে। ভবনের পাশে লাইন দিয়ে সাজানো গাছগুলোর মাথা উড়ে গিয়ে সামনের উঠানে ও কাছের সুইমিংপুলে পড়েছে। সেখানে কিছু কাঁচের টুকরাও ছিল বলে জানিয়েছে দেশটির গণমাধ্যম।
এ হামলার ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি। নেতানিয়াহু ও তার স্ত্রী ঘটনার সময় এই বাড়িটিতে ছিলেন না।মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে দিয়ে এ ঘটনার ‘পুরোপুরি, সম্পূর্ণ ও একচেটিয়া দায়’ স্বীকার করেছে হিজবুল্লাহ। ‘নেতানিয়াহুকে লক্ষ্য করেই’ হামলাটি চালানো হয়েছিল বলে দাবি করেছে তারা। বিবৃতিতে ‘পুরোপুরি, সম্পূর্ণ ও একচেটিয়া’ দায় স্বীকারের মাধ্যম এ ঘটনার সঙ্গে ইরানের কোনো সম্পর্ক নেই, হিজবুল্লাহ এমন ইঙ্গিত দিয়েছে বলে ধারণা ইসরায়েলি পক্ষের।হামলার পরপরই ইরান এক বিবৃতি দিয়ে এ ঘটনার সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই বলে দাবি করেছিল।হামলার পর শনিবার নেতানিয়াহু এ ঘটনার জন্য ‘ইরানের প্রতিনিধিদের’ দায়ী করেন। ইসরায়েলে আঘাত হানা প্রত্যেককে ‘চরম মূল্য দিতে হবে’ বলে হুঁশিয়ার করেন তিনি।
সৌদি আরবের আল-হাদাৎ নিউজ নেটওয়ার্ক অনামা সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে, এ ঘটনা নিয়ে ইসরায়েলি তদন্তে দেখা গেছে বৈরুতের ইরানি দূতাবাসের কর্মকর্তারাও এই হামলার সঙ্গে জড়িত ছিলেন।শনিবার আইডিএফ জানিয়েছিল, ওই ঘটনার সময় লেবানন থেকে ইসরায়েলে হামলার উদ্দেশ্যে তিনটি ড্রোন ছোড়া হয়েছিল, এর মধ্যে দু’টিকে তারা গুলি করে ধ্বংস করেছিল।
আইডিএফ আরও জানায়, তারা ঘটনাটি খতিয়ে দেখছে। ইসরায়েলের বিমান হামলার সতর্ক ব্যবস্থার বেশ কয়েকটি ব্যর্থতার মধ্যে এটি একটি বলে মনে করা হচ্ছে।ড্রোন হামলা ও বিস্ফোরণের আগে সেসারিয়ায় সতর্কতামূলক কোনো সাইরেন বাজেনি। সামাজিক মাধ্যমে আসা ফুটেজে আকাশে অ্যাটাক হেলিকপ্টার দেখা গেলেও সেটি আরও উত্তর দিকে একটি ড্রোনকে ধ্বংস করার চেষ্টায় ছিল এমন ধারণা পাওয়া গেছে বলে টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে।