স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ২৩ অক্টোবর: কিউবার বারাকোয়ার শহরের কাছ দিয়ে এক মাত্রার শক্তির হারিকেন হিসেবে স্থলে উঠে আসার পর দেশটির পূর্বাঞ্চলের বেশিরভাগ এলাকাজুড়ে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে অস্কার। এর প্রভাবে ভূমিধস হয়েছে, নদীগুলোতে বন্যা দেখা দিয়েছে ও বহু স্থানে বৈদ্যুতিক তার ছিঁড়ে পড়েছে। এসব ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে অন্তত ছয়জনের।
ক্যারিবীয় দ্বীপ দেশটিতে ব্যাপক বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের পর মঙ্গলবার রাজধানী হাভানা ও আশপাশের প্রদেশগুলোতে বিদ্যুৎ ফিরতে শুরু করে। তবে অস্কারের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি অপরিবর্তিত বা কোথাও কোথাও আরও খারাপ হয়েছে। জরুরি ও বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মীরা সরবরাহ স্বাভাবিক করতে কাজ করে যাচ্ছেন।সোমবার ভোররাতে ভয়ানক এক হড়কা বানে গুয়ানতানামো প্রদেশের ছোট শহর সান আন্তোনিও দেল সুর প্রায় বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। এখানে এক শিশুসহ ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
বহু এলাকায় ২৫ সেন্টিমিটারেরও বেশি বৃষ্টি হয়েছে। এতে ফসলের জমিগুলো ডুবে গেছে, কলা বাগানের কলা গাছগুলো উপড়ে পড়েছে এবং ওই অঞ্চলের আকর্ষণীয় ফসল কফির উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।রয়টার্স জানায়, পানি বেড়ে নদী উত্তাল হয়ে ওঠায় এবং ভূমিধসে রাস্তা বন্ধ হয়ে থাকায় গুয়ানতামোর বহু এলাকা বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে। ফলে এই এলাকাগুলোতে বিদ্যুৎ গ্রিডের কর্মীদের কাজে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে আর বহু মানুষ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছেন।
মঙ্গলবার বিকালে কিউবার কর্তৃপক্ষ জানায়, শুক্রবার থেকে বেশ কয়েকবার বড় ধরনের ব্যর্থতার পর এদিন তারা সফলভাবে গ্রিডের সমস্যা সমাধান করতে সক্ষম হয়েছেন।হারিকেন অস্কার আসার আগেই শুক্রবার পুরো দেশটির জাতীয় বিদ্যুৎ গ্রিড ভেঙে পড়ে, এতে দ্বীপ দেশটির এক কোটি বাসিন্দার সবাই বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েন। তারপর থেকে বহু প্রচেষ্টা সত্ত্বেও সরবরাহ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করা যাচ্ছিল না।মঙ্গলবার কিউবার প্রায় ৭০ শতাংশ বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়। দেশটির এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, খুব শিগগিরই আরও কিছু বিদ্যুৎ কেন্দ্র গ্রিডে যোগ দেবে বলে আশা করছেন তারা, এতে বিদ্যুতের শতভাগ স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসবে।
কিউবার গ্রিড অপারেটরা জানিয়েছেন, হাভানার ৯০ শতাংশ বিদ্যুৎ গ্রাহক হারিকেন অস্কারের প্রভাব থেকে মোটামুটি মুক্ত আছেন। ক্রান্তীয় ঝড়টি রাজধানী পাশ দিয়ে এগিয়ে গেলেও সেখানে তেমন কোনো ক্ষয়িক্ষতি হয়নি।কিছুদিন ধরে কিউবার অধিকাংশ এলাকায় দিনে ১০ থেকে ২০ ঘণ্টা ধরে লোডশেডিং করা হচ্ছিল। এ পরিস্থিতির জন্য দেশটির সরকার দুর্বল হতে থাকা অবকাঠামো, জ্বালানি ঘাটতি ও বাড়তে থাকা চাহিদাকে দায়ী করেছে।