স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ১৯ অক্টোবর: গাজার উত্তরাঞ্চলে একটি শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ২১ নারীসহ অন্তত ৩৩ জন নিহত হয়েছেন। শুক্রবার এই হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে জানায় হামাস কর্তৃপক্ষ।সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, কয়েক সপ্তাহ ধরে ঘনবসতিপূর্ণ শিবিরটি ঘিরে রাখা ইসরায়েলের পক্ষ থেকে জাবালিয়ায় হামলার বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।গত বুধবার হামাসের জেষ্ঠ নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারের হত্যাকাণ্ড গাজায় যুদ্ধ বন্ধের আশা জাগিয়েছিল। পশ্চিমা নেতারাসহ অনেকেই আশা করছিলেন, হামাস নেতা নিহত হওয়ার মধ্য দিয়ে হয়ত গাজায় যুদ্ধ অবসানের পথ খুলবে।
তবে হামাসের এক উপনেতা বলেছেন, হামাস এখন আরও শক্তিশালী হবে।অন্যদিকে জার্মানির বার্লিনে এক সাক্ষাৎকারে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, “লেবাননে যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা থাকলেও এই মুহূর্তে গাজায় যুদ্ধবিরতি আরও কঠিন হবে।”গাজার হামাস পরিচালিত সরকারি গণমাধ্যমের এক বিবৃতি অনুসারে, শুক্রবারের বিমান হামলায় ৮৫ জনেরও বেশি লোক আহত হয়েছে। তাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর।বিবিসি লিখেছে, বিমান হামলায় ভবন ধসে এখনও অনেক চাপা পড়ে থাকার শঙ্কা করছে কর্তৃপক্ষ। ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ায় নিহতের সংখ্যা ৫০ জনে পৌঁছাতে পারে বলে ধারণা তাদের।
স্থানীয় সূত্রের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, উত্তর গাজা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এই অঞ্চলে টেলিযোগাযোগ এবং ইন্টারনেট পরিষেবা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। যদিও এই তথ্যটি স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি বিবিসি।সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, আল-আওদা হাসপাতালের আঙিনায় সাদা কাফনে মোড়ানো লাশগুলো পড়ে আছে।হাসপাতালের পরিচালক বলেন, “অ্যাম্বুলেন্স কর্মীরা এখনও জাবালিয়া থেকে শহীদ ও আহতদের উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। আমাদের হাসপাতালের ওয়ার্ডগুলো পুরোপুরি পূর্ণ হয়ে গেছে এবং অনেক আহত ব্যক্তি মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন।”
রয়টার্স গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, শুক্রবার সর্বশেষ হামলার আগে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৩৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই জাবালিয়ায়।এদিকে প্রায় চার লাখ মানুষ দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে সামান্য খাবার ও পানি নিয়ে শিবিরের ভেতরে আটকা পড়ে আছে।জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা দপ্তরের প্রধান জর্জিওস পেত্রোপোলোস বিবিসির নিউজআওয়ার প্রোগ্রামকে বলেন, জাবালিয়ার পরিবারগুলো খুব খারাপ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।দক্ষিণ গাজার রাফাহ থেকে তিনি বলেন, “সেখানকার বেসামরিক নাগরিকদের জন্য পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ ও বিপজ্জনক তা আমরা খুব আন্দাজও করতে পারছিনা।”
ইসরায়েলি মন্ত্রী আমিচাই চিকলি বিবিসিকে বলেছেন, গাজার উত্তরাঞ্চলের জাবালিয়াসহ কিছু অংশ অবরোধ করে রেখেছে ইসরায়েল।এদিকে হামাস নেতা সিনওয়ারের মৃত্যুর পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজায় যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছেন। বলেছেন, যুদ্ধ এখনও শেষ হয়নি। জিম্মিরা মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চলবে।বৃহস্পতিবার সিনওয়ারের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর এক ভিডিও বিবৃতিতে নেতানিয়াহু বলেন, “আজ অশুভ শক্তিকে বিনাশ করেছি ঠিকই, কিন্তু আমাদের কাজ এখনও শেষ হয়নি।