স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৩০ মার্চ। আফগানিস্তানের তালেবান সরকার মেয়েদের হাই স্কুল খুলেই আবার বন্ধের নির্দেশ দেওয়ার পর বিশ্ব ব্যাংক দেশটিতে ৬০ কোটি ডলারের ৪ টি প্রকল্পের কাজ আটকে দিয়েছে।
সাধারণ মানুষের জীবিকা, কৃষি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে আফগানিস্তানে রিকনস্ট্রাকশন ট্রাস্ট ফান্ডের (এআরটিএফ) আওতায় জাতিসংঘ সংস্থার মাধ্যমে এই চারটি প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা ছিল বিশ্ব ব্যাংকের।তবে ব্যাংক এসব প্রকল্পে মেয়ে ও নারীদের সম্পৃক্ত হওয়া এবং পুরুষদের সমান সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করারও শর্ত দিয়েছিল। মেয়েদের স্কুলে যাওয়ার ওপর তালেবানের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেই ব্যাংক এই শর্ত বেঁধে দেয়।ফলে এখন সেই শর্ত পূরণ না হওয়ায় বিশ্ব ব্যাংক প্রকল্পগুলো আটকে দিয়েছে। তালেবান কয়েক মাসের নিষেধাজ্ঞার পর গত সপ্তাহে মেয়েদের স্কুল খুলে দেওয়ার কয়েকঘন্টা পরই আবার তা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত জানায়।তালেবান সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, মেয়েদের জন্য ইসলামি আইন অনুযায়ী ইউনিফর্মের বিষয়ে সিদ্ধান্তগ্রহণ এবং স্কুল পুনরায় চালুর একটি পরিকল্পনা তৈরি না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। তালেবানের এই নির্দেশের পরই এ নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সমালোচনা শুরু হয়।
এর মধ্যেই বিশ্ব ব্যাংক জানাল, “চারটি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য এআরটিএফ দাতাদের কাছে উপস্থাপন করা হবে তখনই যখন বিশ্বব্যাংক এবং আন্তর্জাতিক অংশীদাররা পরিস্থিতি সম্পর্কে আরও ভালভাবে অবগত হতে পারবে এবং একইসঙ্গে প্রকল্পগুলোর লক্ষ্য পূরণ হবে এমন আস্থা থাকবে।” তবে সেটি কখন হবে তা তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট হয়নি।আফগান তালেবান সরকারের মেয়েদের স্কুল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তের কারণে গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রও দেশটির অর্থনৈতিক সংকট নিয়ে কাতারের রাজধানী দোহায় বৈঠকের পরিকল্পনা বাতিল করে।তালেবান এর আগে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তানের ক্ষমতায় থাকাকালে মেয়েদের আনুষ্ঠানিক শিক্ষা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল।
এবার তালেবান ফের আফগানিস্তানের ক্ষমতায় আসার পর তাদের সরকারকে স্বীকৃতি দিতে হলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যেসব দাবি করেছে বা শর্ত জুড়ে দিয়েছে, তার মধ্যে স্কুল-কলেজে মেয়েদের পড়ার অনুমতি দেওয়া অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।তালেবান অবশ্য এবার গোঁড়া থেকেই বলে আসছে, তারা ইসলামি আইন ও স্থানীয় রীতিনীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নারী অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।কিন্তু দেশটির অনেক এলাকার নারীরাই কট্টরপন্থি এই গোষ্ঠীটি ক্ষমতায় আসার পর তাদের দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডে বাধা এবং চাকরি ছাড়তে বাধ্য করার অভিযোগ করে আসছেন।