স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ৩০ আগস্ট: পোলিও টিকাদান কর্মসূচি বাস্তবায়নে গাজা উপত্যকায় তিন দিনের ‘মানবিক যুদ্ধবিরতিতে’ সম্মতি দিয়েছে ইসরায়েল।জাতিসংঘের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এ তথ্য দিয়েছে।জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ’র যোগাযোগ পরিচালক জুলিয়েট তৌমার বরাত দিয়ে রয়টার্স জানায়, রোববার থেকে তিন দিনব্যাপী পোলিও টিকাদান কর্মসূচি শুরু হবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা রিক পিপারকর্ন বলেন, গাজা উপত্যকাজুড়ে প্রায় ৬ লাখ ৪০ হাজার শিশুকে পোলিও টিকা দেওয়া হবে।গাজার মধ্য, দক্ষিণ এবং উত্তর অংশে তিনটি পৃথক পর্যায়ে চালু করা হবে টিকাদান কর্মসূচি।এজন্য প্রতিদিন সকাল ছয়টা থেকে বেলা তিনটা পর্যন্ত যুদ্ধ বন্ধ রাখার লক্ষ্যে চুক্তি করা হয়েছে।সম্প্রতি গাজায় গত ২৫ বছরে এই প্রথম ১০ মাস বয়সী এক শিশুর শরীরে পোলিওর উপসর্গ দেখেন চিকিৎসকরা। জর্ডানের রাজধানী আম্মানে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর রোগটি ধরা পড়ে।
তাই পোলিও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার শংকায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার চাপে টিকাদান কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।ডাব্লিউএইচও জানায়, নভেল ওরাল পোলিও ভ্যাকসিন টাইপ ২ (এনওপিভি২) এর প্রায় ১.২৬ মিলিয়ন ডোজ ইতিমধ্যে গাজায় রয়েছে, শিগগিরই অতিরিক্ত ৪০০,০০০ ডোজ পৌঁছাবে।ডাব্লিউএইচও, ইউনিসেফ, ইউএনআরডব্লিউএ’র সহযোগিতায় ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় টিকাদান কর্মসূচি চালাবে।
এজন্য ইতোমধ্যে দুই হাজারের বেশি স্বাস্থ্য ও কমিউনিটি আউটরিচ কর্মীকে টিকা দেওয়ার প্রশিক্ষণ দিয়ে প্রস্তুত করা হয়েছে।পোলিও ভাইরাস অত্যন্ত সংক্রামক এবং দূষিত জলের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এটি প্রধানত পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের প্রভাবিত করে।ডব্লিউএইচও বলছে, যুদ্ধ শুরুর আগে গাজায় টিকানদানের হার ছিল সর্বোচ্চ অবস্থায়। এর মধ্যে ২০২২ পোলিও টিকা দেওয়ার হার ছিল ৯৯ শতাংশ, যা গতবছর ৮৯ শতাংশে নেমে আসে।
গত জুলাইয়ে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছিল, তারা তাদের সেনাদের এই রোগের টিকা দেওয়া শুরু করেছে।এদিকে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস পোলিও টিকাদানের জন্য ইসরায়েলের মানবিক যুদ্ধবিরতিকে স্বাগত জানিয়েছে।হামাসের কর্মকর্তা বাসেম নাঈম বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, “আমরা গাজা উপত্যকায় সাড়ে ছয় লাখেরও বেশি ফিলিস্তিনি শিশুকে সেবা ও সুরক্ষা দিতে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে সঙ্গে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।”
তবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, তিন দিনের এই বিরতি ‘যুদ্ধবিরতি নয়’।জাতিসংঘে যুক্তরাজ্যের স্থায়ী প্রতিনিধি জেমস কারিউকি বলেছেন, এই কর্মসূচিটি এখন কার্যকর হওয়া দরকার। তবে সবাইকে এই টিকা দিতে হলে ৩ দিনের যুদ্ধবিরতি যথেষ্ট নয়।“যখন ক্যাম্পেইন শুরু হবে এবং হাজার হাজার অরক্ষিত ও সঙ্গীহীন শিশু টিকাদান কেন্দ্রগুলোতে জড়ো হবে, তখন তাদের সবাইকে অবশ্যই সুরক্ষিত রাখতে হবে।”