স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ১০ জুলাই: যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনে পশ্চিমা সামরিক জোট নেটোর সম্মেলনে জোরালো বক্তব্য রেখে মিত্র দেশগুলোর নেতাদের স্বাগত জানিয়েছেন দেশটির বর্ষীয়ান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বী ডনাল্ড ট্রাম্পের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে পারবেন, এ বিষয়ে তিনি বিদেশি মিত্র ও দেশে তার সমর্থকদের আশ্বাস্ত করার চেষ্টা করতে এমন বক্তব্য দিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।মঙ্গলবার সম্মেলনের উদ্বোধনী সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বাইডেন দৃঢ় মনোভাব প্রকাশ করেছেন। রাশিয়া ও ইউক্রেইনের যুদ্ধ নিয়ে ‘সঙ্কটজনক মুহূর্তে’ নেটো সামরিক জোট ‘আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে আরও শক্তিশালী হয়েছে’ বলে দাবি করেছেন তিনি।
‘স্বৈরাচারীরা’ বৈশ্বিক ভারসাম্য উল্টে দিতে পারে বলে সতর্ক করেছেন আর ইউক্রেইনের জন্য আরও সামরিক সহায়তায় ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও জার্মানি, ইতালি, নেদারল্যান্ডস ও রোমানিয়ার নেতারা ইউক্রেইনের বিপর্যন্ত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে সংহত করতে প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র ব্যাটারি ও অন্যান্য পদ্ধতি দান করছে বলে জানান তিনি।স্থানীয় সময় মঙ্গলবার বিকালে টেলিপ্রম্পটার থেকে পড়ে করা মন্তব্যে বাইডেন বলেন, “ইউক্রেইন একটি মুক্ত ও স্বাধীন দেশ থাকা অবস্থায়ই যুদ্ধ শেষ হবে। রাশিয়া জয়ী হবে না, হবে ইউক্রেইন।”বিবিসি জানিয়েছে, প্রায় ১৩ মিনিট ধরে দেওয়া এ বক্তব্যে পরিষ্কার কণ্ঠে কথা বলেন বাইডেন; এটি গত মাসে ট্রাম্পের সঙ্গে বিতর্কে তার কণ্ঠ থেকে যে মিনমিনে স্বর বের হয়েছিল তার বিপরীত ছিল।
বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে বাইডেন নেটোর মহাসচিব ইয়েন্স স্তোলতেনবার্গকে মঞ্চে ডেকে নেন আর তাকে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম’ পুরস্কার দেন।নেটোর এবারের সম্মেলনের ভেন্যুতেই কয়েক দশক আগে এ সামরিক জোট গঠনের চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়েছিল, নিজের বক্তব্যে বাইডেন তা উল্লেখ করেন।এদিকে মার্কিন কংগ্রেসের ডেমোক্র্যাট সদস্যরা দলের নেতৃত্ব নিয়ে বাইডেনের সঙ্গে বিতর্ক করতে গোপনে তার সঙ্গে দেখা করেন আর ওই বৈঠকের পরিবেশ ‘বিমর্ষ’ ছিল বলে এক আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা জানিয়েছে।
মঙ্গলবার পরের দিকে প্রকাশ্যে বাইডেনকে ফের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করার জন্য আহ্বান জানান নিউ জার্সির ডেমোক্র্যাট প্রতিনিধি মাইকি শেরিল; এর মধ্যে দিয়ে এমন আহ্বান জানানো সপ্তম ডেমোক্র্যাট প্রতিনিধি হলেন তিনি।বাইডেনের সঙ্গে দেখা করা বিদেশি কূটনীতিকরাও বাইডেনের ভবিষ্যতের বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন।অনামা এক ইউরোপিয়ান দূত বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, “ওই বিতর্কের পর তিনি কীভাবে ফিরে আসবেন তা বুঝতে পারছি না আমরা। যুক্তরাষ্ট্র ও নেটোর প্রধান হিসেবে তিনি আরও চার বছর থাকবেন এমনটা কল্পনা করতে পারছি না আমি।”
এসবের উত্তরে বাইডেনের টিম দেখানোর চেষ্টা করছে ৮১ বছর বয়সী এই নেতা এখনও প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্বপালনের মতো যথেষ্ট সবল আছেন।দুই বছর আগে রাশিয়া ইউক্রেইনে আক্রমণ শুরু করার পর থেকে নেটোর যে সম্প্রসারণ হয়েছে তার জন্য বাইডেনের নেতৃত্বকে কৃতিত্ব দিচ্ছে হোয়াইট হাউজ। এই সময়ে সুইডেন ও ফিনল্যান্ড নতুন করে নেটো জোটের অংশীদার হয়েছে। এতে নেটো সামরিক জোটের মোট সদস্য সংখ্যা বেড়ে ৩২ এ দাঁড়িয়েছে।মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ফ্লোরিডায় নিজের গলফ ক্লাবে এক নির্বাচনী সমাবেশে ফের নেটোর সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্প (৭৮) ।