স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ১৯ জুন: সৌদি আরবের মক্কায় হজ চলাকালে তীব্র গরমে অন্তত ৫৫০ জন হজ যাত্রীর মৃত্যু হয়েছে বলে প্রকাশিত সংবাদ ও একটি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাতে জানা গেছে।মঙ্গলবার ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে কূটনীতিকরা জানিয়েছেন, মক্কার নির্মম প্রকৃতির মধ্যে অতিরিক্ত গরমে তাপজনিত বিভিন্ন অসুস্থতায় তাদের মৃত্যু হয়েছে।রয়টার্স জানায়, দুই আরব কূটনীতিককে উদ্ধৃত করে এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যাদের মৃত্যু হয়েছে তাদের মধ্যে ৩২৩ জন মিশরীয় নাগরিক।রয়টার্স তাৎক্ষণিকভাবে এসব সংখ্যা যাচাই করতে পারেনি বলে জানিয়েছে।ওই কূটনীতিকদের মধ্যে একজন বলেছেন, “তাদের সবাই (মিশরীয়) তীব্র গরমে মারা গেছেন।”
তিনি জানান, শুধু একজন ভিড়ের চাপে পিষ্ট হয়ে আহত হওয়ার পর মারা গেছেন। মক্কার আল-মুয়েইজেম এলাকার হাসপাতালের মর্গ থেকে মৃতের মোট সংখ্যা জানা গেছে। মক্কার অন্যতম বৃহত্তম এই মর্গ ৫৫০টি মৃতদেহ পাওয়ার কথা জানিয়েছে।মৃতদের মধ্যে অন্তত ৬০ জন জর্ডানি হজযাত্রী আছেন। এর আগে জর্ডান তাদের ৪১ জন হজ যাত্রী মারা গেছেন বলে জানিয়েছিল।ফরাসি বার্তা সংস্থাটির হিসাব অনুযায়ী, শেষ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৫৭৭ জনে দাঁড়িয়েছে; এরা বিভিন্ন দেশের নাগরিক।তিউনিসিয়ার বার্তা সংস্থা তুনিস আফ্রিক প্রেস মঙ্গলবার জানিয়েছে, হজ চলার সময় ৩৫ জন তিউনিসীয় নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, তাদের মধ্যে অধিকাংশের মৃত্যু হয়েছে তীব্র গরমে। আরও অনেক নিখোঁজ রয়েছেন, পরিবারের সদস্যরা তাদের খোঁজে সৌদি আরবের হাসপাতালগুলো সন্ধান চালাচ্ছেন।মঙ্গলবার জর্ডানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, তারা ৪১ জন জর্ডানি হজ যাত্রীর লাশ দাফন করার অনুমতি দিয়েছে।মঙ্গলবার ইন্দোনেশিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যে দেখা গেছে, হজের সময় দেশটির ১৪৪ জন নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। তবে এদের কারও মৃত্যু হিট স্ট্রোকে হয়েছে কি না, মন্ত্রণালয়টির তথ্যে তা নির্দিষ্ট করে জানানো হয়নি।মঙ্গলবার ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা আইআরআইএনএন জানিয়েছে, হজের সময় ১১ জন ইরানির মৃত্যু হয়েছে এবং ২৪ জন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
সোমবার সেনেগালের একটি বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, হজ চলাকালে তাদের দেশের তিন নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে।হজের সময় বিপর্যয়কর বিভিন্ন ঘটনায় বহু মানুষ মারা যাওয়ার ইতিহাস আছে। এর মধ্যে ভিড়ের চাপে পিষ্ট হয়ে ও তাঁবুতে আগুন লাগার মতো ঘটনাও আছে। কিন্তু অধিকাংশ সময় তীব্র তাপমাত্রাই প্রধান চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। এবারের হজ শুরু হয়েছিল ১৪ জুন, শুক্রবার।সৌদি আরবের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন জানায়, সোমবার মক্কার বড় মসজিদে ছায়ার মধ্যে তাপমাত্রা ছিল ৫১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।২০১৯ সালে জিওফিজিক্যাল রিসার্চ লেটার্সের এক গবেষণা ফলাফলে বলা হয়েছিল, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে উষর সৌদি আরবে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে, এর ফলে হজযাত্রীরা ‘ক্রমবর্ধমান বিপদের’ মুখোমুখি হবেন।