স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২৬ ফেব্রুয়ারি। রাশিয়ার সর্বাত্মক আক্রমণের তৃতীয় দিনে ইউক্রেইনের বিভিন্ন এলাকায় দেশটির সামরিক বাহিনী এগোতে থাকা রুশ বাহিনীকে বাধা দিয়ে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র ও গোলার্বষণের মুখে দেশটির বাসিন্দারা নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে বাঙ্কার, ভূগর্ভস্থ মেট্রো স্টেশনসহ বিভিন্ন স্থানে চলে যেতে বাধ্য হচ্ছে।
শনিবার স্থানীয় সময় ভোরে ইউক্রেইনের রাজধানী অনেক বাসিন্দাই যখন ঘুমিয়ে ছিল তখন একটা ক্ষেপণাস্ত্র বা রকেট কিয়েভের একটা আবাসিক ভবনে আঘাত হানে।সিএনএন জানিয়েছে, ভিডিও ও বিভিন্ন ছবিতে ওই অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের ১০ তলারও উপরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির চিহ্ন দেখা গেছে, বাইরের দেয়ালগুলি পুরোপুরি ধসে গিয়েছে। তবে ওই ভবনে হামলার কারণ ও এতে হওয়া হতাহতের বিষয়ে কিছু জানা যায়নি।এদিন সকালে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সতর্ক করে ফেইসবুকে বলে, “আমাদের শহরের রাস্তাগুলোতে লড়াই চলছে।”
মন্ত্রণালয়টি শহরের বাসিন্দাদের শান্ত থাকার, ঘরের ভেতরে লুকিয়ে থাকার ও আত্মরক্ষামূলক অবস্থানে থাকার পরামর্শ দেয়। বিমান হামলার সাইরেন শুনতে পেলে দ্রুত নিকটবর্তী আশ্রয় কেন্দ্রে চলে যাওয়ার পরামর্শও দিয়েছে তারা।
শনিবার ভোররাত ২টা থেকে ৪টা পর্যন্ত কিয়েভে ও এর আশপাশে মুহুর্মুহু বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। ভোরের আগে গুলির শব্দ শুরু হওয়ার আগে কিছুটা সময় সবকিছু শান্ত ছিল।ভোররাতে যে শব্দগুলো শোনা গেছে তার মধ্যে একটি রুশ ট্যাঙ্ক ধ্বংস হওয়ার শব্দও ছিল বলে ইউক্রেইনীয় সামরিক বাহিনী দাবি করেছে।ইউক্রেইনের রিজার্ভ সেনা ও বেসামরিকদের মধ্যে হাজার হাজার অস্ত্র বিরতণ করা হয়েছে। টেলিভিশনে মলোটোভ ককটেল বানানোর প্রক্রিয়া বর্ণনা করা হচ্ছে। দেশটির পার্লামেন্ট সদস্যরাও জানিয়েছেন, তারা লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিতে বন্দুক তুলে নিয়ে গুলি ছোড়া অভ্যাস করছেন।
শুক্রবার রাতে ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি তার প্রশাসনের নেতৃস্থানীয় কর্মকর্তাদের নিয়ে কিয়েভের রাস্তায় দাঁড়িয়ে দেশ রক্ষার প্রত্যয় জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “এখানে আমরা সবাই আমাদের স্বাধীনতাকে রক্ষা করছি।”শনিবার সকালে কিয়েভ থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণে ভাসিলকিভ শহরের মেয়র জানান, শহটিরতে তীব্র লড়াইয়ের পর ইউক্রেইনীয় পক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শুক্রবার কিয়েভের বহু বাসিন্দা শহরটি ছেড়ে পালিয়ে পশ্চিম দিকে চলে গেছেন। বৃহস্পতিবার রাশিয়ার আক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকেই অনেক বাসিন্দা শহরটি ছাড়তে শুরু করে।জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাই কমিশনারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ৪৮ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে ৫০ হাজারেরও বেশি ইউক্রেইনীয় শরণার্থী দেশ ছেড়েছে। তাদের অধিকাংশই পোল্যান্ড ও মলদোভায় চলে গেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।