Saturday, February 15, 2025
বাড়িবিশ্ব সংবাদপুতিন জিনিয়াস, বুদ্ধিমান: ট্রাম্প

পুতিন জিনিয়াস, বুদ্ধিমান: ট্রাম্প

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২৩ ফেব্রুয়ারি। ইউক্রেইনের দুটি অঞ্চলের স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দিয়ে ভ্লাদিমির পুতিনের সেখানে রুশ সেনা পাঠানোর ঘোষণাকে ‘জিনিয়াস’ অ্যাখ্যা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প।

যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ভূমিকার বিরোধিতায় নেমে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের পক্ষ নিতে তার ২৪ ঘণ্টার বেশি সময়ও লাগেনি বলে জানিয়েছে মার্কিন গণমাধ্যমগুলো।সাবেক এই প্রেসিডেন্ট প্রায়ই তার প্রতিপক্ষের নামে রাষ্ট্রদ্রোহের ‘মিথ্যা’ অভিযোগ আনতেন, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম শত্রু হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করে যাওয়া বিদেশি এক নেতার পক্ষে তার এ তড়িঘড়ি অবস্থান পশ্চিমা দেশগুলোকেও স্তম্ভিত করে দিয়েছে বলে সিএনএনের এক নিবন্ধে বলা হয়েছে।“এক জায়গায় ছিলাম গতকাল, সেখানে একটি টিভি স্ক্রিন ছিল, আমি বলেছিলাম ‘এটা জিনিয়াস।’ পুতিন ইউক্রেইনের একটি বড় অংশকে, ইউক্রেইনের, পুতিন একে স্বাধীন ঘোষণা করলেন। ওহ, খুবই চমৎকার,” ট্রাম্প ‘দ্য ক্লে ট্রাভিস অ্যান্ড বাক সেক্সটন শো’তে এমনটাই বলেন।

সাবেক এই মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, “পুতিন এখন বলছেন, ‘এটা স্বাধীন।’ ইউক্রেইনের বিশাল অংশ। আমি বললাম, “কত স্মার্ট এটা?’ তিনি সেখানে সেনা পাঠাবেন, শান্তি রক্ষা করবেন। তাদের শক্তিশালী শান্তিরক্ষা বাহিনী। এটা আমরা দক্ষিণ সীমান্তে ব্যবহার করতে পারতাম। সেটা হতো আমার দেখা সবচেয়ে শক্তিশালী শান্তিরক্ষা বাহিনী।“এখানে একজন আছেন তিনি (পুতিন) খুবই বুদ্ধিমান। আমি তাকে ভালো করেই চিনি। খুব, খুব ভালো করে চিনি।”

মঙ্গলবার রক্ষণশীলদের এক রেডিওর অনুষ্ঠানে দেওয়া ট্রাম্পের এ বক্তব্যকে ক্রেমলিন স্বাগত জানিয়েছে। একই সঙ্গে তা রাশিয়ার বিরুদ্ধে দাঁড়ানো মার্কিন মিত্রদের দুশ্চিন্তাও বাড়িয়ে দিয়েছে; ট্রাম্প যদি ফের যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় আসে, তাহলে নেটোর ভবিষ্যৎ কেমন হবে- এ শঙ্কা নিশ্চয়ই সামনের দিনেও তাদের তাড়া করে ফিরবে।

সমালোচকরা বলছেন, সাবেক এই প্রেসিডেন্ট এমন এক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিকে খাটো করেছেন যখন বর্তমান প্রেসিডেন্ট হাজার হাজার মানুষ মারা পড়তে পারে এমন একটি যুদ্ধ ঠেকাতে ও স্নায়ুযুদ্ধ পরবর্তী শান্তি নষ্টের হুমকি মোকাবেলায় চেষ্টা করছেন।

ট্রাম্প যাকে ‘শান্তি রক্ষা’ কার্যক্রম বলছেন, বাইডেন সেটাকে বলেছেন ‘রাশিয়ার আগ্রাসনের শুরু।’

রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের মতো মার্কিন রিপাবলিকানরাও তাদের দেশের বর্তমান প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে দুর্বল মনে করে; সেই রিপাবলিকানদের মধ্যে যারা সাবেক প্রেসিডেন্টের অনুগ্রহ পেতে চান, তাদেরকে যে ‘যুক্তরাষ্ট্রের শত্রুর পক্ষেও’ অবস্থান নিতে হবে, চলতি বছরের মধ্যবর্তী নির্বাচনের আগে ট্রাম্প সম্ভবত সেই বার্তাও দিলেন।

পূর্ব ইউক্রেইনে রুশ সেনা পাঠানোর বিষয়ে তার যে সমর্থন আছে, পুতিন যেন তা জানে, তার জন্য খুব বেশি সময় নেননি তিনি। ইউক্রেইনের পরিস্থিতি নিয়ে তার মন্তব্য যে বিশ্বজুড়েই আলোচনার ঝড় তুলবে, সাবেক এই মার্কিন প্রেসিডেন্ট তাও জানতেন।অবশ্য ট্রাম্প যে পুতিনের প্রশংসাই করবেন, তা খুব একটা আশ্চর্যের নয়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট থাকাকালেও তিনি রুশ প্রেসিডেন্টের গুণগানই গেয়েছেন। মস্কো ২০১৬ সালের নির্বাচনে তাকে জেতাতে হস্তক্ষেপ করেছিল বলে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ভাষ্যকে পায়ে দলে তিনি হেলসিংকি সম্মেলনে পুতিনের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন।তবে মঙ্গলবার তার দেওয়া এমন বক্তব্যের পেছনে ক্ষমতায় থাকার শেষদিকে ইউক্রেইনের সঙ্গে তার সম্পর্কের টানাপোড়েনের রেশও থাকতে পারে।ট্রাম্প নিজেও ইউক্রেইনের গণতন্ত্র নিয়ে টিটকারি মেরেছিলেন। সর্বশেষ মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ডেমোক্র্যাট প্রতিপক্ষ বাইডেনের নামে তদন্ত করতে ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভ্লদিমির জেলেনস্কিকে চাপও দিয়েছিলেন তিনি। ক্ষমতার ওই অপব্যবহারের কারণেই ট্রাম্প প্রথমবার অভিশংসিত হয়েছিলেন; যিনি এক মেয়াদে দুইবার অভিশংসিত হয়ে ইতিহাস গড়েছিলেন।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য