স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ১৫ মার্চ : দুবছর পেরিয়েও জারি রয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। হানাহানি, মৃত্যুমিছিল সব কিছুই অব্যাহত। কিন্তু কিয়েভে লড়াই চালিয়েই থেমে থাকবেন না রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এই যুদ্ধের আঁচ ছড়িয়ে পড়বে ইউরোপেও। যার পরিণতি হবে ভয়ংকর। রাশিয়াকে প্রতিপক্ষ হিসাবে গণ্য করে এমনই আশঙ্কা প্রকাশ করলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। তাই দুর্বল না হয়ে শান্তির জন্য ইউরোপের দেশগুলোকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকার ডাক দিলেন তিনি।
গত মাসেই ইউক্রেনে ন্যাটোভুক্ত ইউরোপীয় দেশগুলোর সেনা পাঠানোর বিষয়ে একটি প্রস্তাব দিয়েছিলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট। যা আমেরিকা, জার্মানি, ব্রিটেন এবং অন্য সদস্য দেশগুলো প্রত্যাখ্যান করেছিল। পাশাপাশি যুদ্ধ আবহে কিয়েভের সঙ্গে প্যারিসের একটি নিরাপত্তা চুক্তি নিয়ে ভোটাভুটি হয় ফ্রান্সের পার্লামেন্টে। যেখানে বিরোধীদলের একাংশ এই চুক্তির বিপক্ষে ভোট দেয়। এই প্রেক্ষিতে ম্যাক্রোঁ বলেন, “রাশিয়াকে আমাদের প্রতিপক্ষ হিসাবে দেখা উচিত। দুবছর ধরে ইউক্রেন যুদ্ধ চলছে। কিন্তু পুতিন শুধু কিয়েভেই থেমে থাকবেন না। তিনি এই লড়াইয়ে জয় পেলে ইউরোপের বিশ্বাসযোগ্যতা শূন্যে নেমে যাবে।”
ইউক্রেনকে সমর্থন জানিয়ে যুদ্ধে জড়ানোতে প্রবল আপত্তি রয়েছে ফ্রান্সের বিরোধীদলগুলোর। এই প্রসঙ্গে ম্যাক্রোঁ বলেন, “বিরোধী নেতাদের বক্তব্যে আমার প্রবল আপত্তি রয়েছে। ইউক্রেনের সমর্থন থেকে সরে আসা কিংবা বিপক্ষে ভোট দেওয়া মানে শান্তিকে বেছে নেওয়া নয়। নিজেদের পরাজয়কে বেছে নেওয়া। এই দুটোর মধ্যে যথেষ্ট পার্থক্য রয়েছে। তিনি আরও বলেন, “যদি ইউরোপে এই যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ে তার জন্য রাশিয়াকে দায়ী থাকবে না। কিন্তু আজ যদি আমরা ঠিক করে ফেলি যে আমরা কোনও জবাব দেব না তাহলে সেটা আমাদের পরাজয় মেনে নেওয়া হবে। যা আমি কোনওদিন চাই না।”
মস্কোর সঙ্গে প্যারিসের সংঘাত নিয়ে ফরাসি প্রেসিডেন্ট বলেন, “রাশিয়ার সঙ্গে ফ্রান্স কখনও সংঘাতে যেতে চায় না। তাই আমরা মস্কোকে শত্রু বলতে চাই না। প্রতিপক্ষ হিসাবে দেখতে চাই। কিন্তু পুতিন পরমাণু যুদ্ধ নিয়ে যা হুমকি দিচ্ছেন তা ঠিক নয়।” কয়েকদিন আগেই রুশ প্রেসিডেন্ট ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে আমেরিকা-সহ পশ্চিমা বিশ্বকে পরমাণু যুদ্ধ নিয়ে হুঙ্কার দিয়েছিলেন।
উল্লেখ্য, দুবছর পেরিয়ে গেলেও থামার নাম নেই রাশিয়া-ইউক্রেন রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ। এখনও এই যুদ্ধের কোনও রফাসূত্র পাওয়া যায়নি। জারি রয়েছে হানাহানি, মৃত্যু মিছিল। যুদ্ধের ময়দানে একে ওপরকে একচুল জমি ছাড়তে নারাজ দুদেশই। চলতি বছরে জানুয়ারিতেই রাশিয়ায় ‘নিষিদ্ধ’ ক্লাস্টার বোমা ফেলেছিল ইউক্রেন।