স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৯ ফেব্রুয়ারি। কোভিড-১৯ মহামারী রুখতে আরোপ করা বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে নিউ জিল্যান্ডে টানা দ্বিতীয় দিনের মত বিক্ষোভ চলছে। বিক্ষোভকারীরা দেশটির পার্লামেন্টের সামনে অবস্থান নিয়েছে।
বিবিসি জানায়, কানাডায় কোভিড টিকা বিরোধী বিক্ষোভ দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে নিউ জিল্যান্ডের নাগরিকরাও মঙ্গলবার থেকে বাধ্যতামূলক টিকা গ্রহণ এবং কোভিড সংক্রমণ রুখতে আরোপ করা নানা বিধি বিরোধী বিক্ষোভ শুরু করেছে।বিক্ষোভকারীরা তাদের আন্দোলনের নাম দিয়েছেন ‘কনভয় ফর ফ্রিডম’ (স্বাধীনতার জন্য কাফেলা)। মঙ্গলবার তারা রাজধানী ওয়েলিংটনের সড়ক অবরোধ করে।বুধবার অবশ্য বিক্ষোভকারীদের সংখ্যা কমে আসে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, বিক্ষোভকারীরা পার্লামেন্টের সামনে অবস্থান নিলে বিশৃঙ্খলা এড়াতে সেখানে একশ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
বিক্ষোভকারীরা নিজেদের দাবি নিয়ে পার্লামেন্টের সামনে অবস্থান নিলেও নিউ জিল্যান্ডের এমপি’রা তাদের পুরোপুরি উপেক্ষা করেছেন। যেটা সাধারণত নিউ জিল্যান্ডে দেখা যায় না। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, একজন এমপিও বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে দেখা করেননি।প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা অ’ডুর্ন মঙ্গলবার বিক্ষোভের বিষয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘আমরা বাইরে যা দেখছি সেটাকে কোনওভাবে যদি অধিকাংশের মতের প্রতিনিধিত্বকারী বলা হয় তবে সেটা ভুল হবে বলেই আমি মনে করি।নিউ জিল্যান্ডের বেশিরভাগ মানুষ অন্যদের নিরাপদ রাখতে তাদের পক্ষে যতটা সম্ভব ততটা করেন।”
কোভিড-১৯ মহামারী রুখতে গত প্রায় দুই বছর ধরে নিউ জিল্যান্ডে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা আছে। কঠোর লকডাউন এবং আন্তর্জাতিকভাবে সীমান্ত বন্ধ করে দেয়ার ফলে দেশটিতে খুব কম মানুষ কোভিডে সংক্রমিত হয়েছেন। মৃত্যুও অনেক কম।৫০ লাখ মানুষের দেশ নিউ জিল্যান্ডে এখন পর্যন্ত ১৮ হাজার মানুষের কোভিড শনাক্ত হয়েছে, মারা গেছেন ৫৩ জন। দেশটি এক সময় স্থানীয়ভাব কোভিড সংক্রমণ শূন্যে নামিয়ে এনেছিল।কিন্তু ওমিক্রন ধরনের কারণে সারা বিশ্বের মত নিউ জিল্যান্ডেও করোনাভাইরাস সংক্রমণ বাড়ছে। বুধবার দেশটিতে দুইশ’র বেশি নতুন রোগী শনাক্ত হয়।
কোভিড সংক্রমিত হলে বা আক্রান্ত কারও সংস্পর্শে এলে অন্তত ১০ দিনের আইসোলেশন এবং টিকা বাধ্যতামূলক করাসহ আরও কয়েকটি বিধি পালন নিয়ে জনমনে ক্ষোভে দেখা দিয়েছে।যার ফলে গত কয়েক মাসে অ’ডুর্ন সরকারের বিরুদ্ধে জনগণের অসন্তোষ বেড়েছে। বিক্ষোভও বাড়ছে।বিক্ষোভ নিয়ে অবশ্য বিন্দুমাত্র বিচলিত নন প্রধানমন্ত্রী অ’ডুর্ন। বুধবার তিনি বলেন, বিক্ষোভকারীরা স্বাধীনভাবেই তাদের বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে পারবেন।“তবে এটাও মনে রাখবেন, নিউ জিল্যান্ডের বেশিরভাগ মানুষ সরকারের নির্দেশনা মেনে চলেছেন বলেই তারা আজ বিক্ষোভ করতে পারছেন।”নিউ জিল্যান্ডে ৭৭ শতাংশ মানুষ টিকার দুই ডোজই গ্রহণ করেছেন।দীর্ঘদিন বন্ধ রাখার পর নিউ জিল্যান্ড সরকার গত সপ্তাহে তাদের সীমান্ত পুনরায় খুলে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। তবে সেটা শুধুমাত্র দেশটির নাগরিকদের জন্য। সীমান্ত খুলে দেওয়ায় নানা দেশে আটকে পড়া দেশটির নাগরিকরা এ মাসের শেষ দিয়ে সহজে নিউ জিল্যান্ড যেতে পারবেন।কিন্তু আন্তর্জাতিক পর্যটকদের এখনই ঢুকতে দেওয়া হবে না। তাদের অন্তত আগামী অক্টোবর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে জড়িতরা অবশ্যই এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছেন।