Saturday, July 27, 2024
বাড়িবিশ্ব সংবাদইয়েমেনে হুতিদের বিরুদ্ধে হামলা যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেনের

ইয়েমেনে হুতিদের বিরুদ্ধে হামলা যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেনের

স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ১২ জানুয়ারি: ইয়েমেনের ক্ষমতাসীন হুতি গোষ্ঠীর সামরিক লক্ষ্যস্থলগুলোতে বিমান ও সাগর থেকে হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন। লোহিত সাগরে চলাচলরত জাহাজগুলোর ওপর হুতিদের হামলার জবাবে এসব আক্রমণ চালানো হয়েছে।এটি ওই অঞ্চলজুড়ে ফিলিস্তিনি ছিটমহল গাজায় চলা ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের নাটকীয় একটি প্রসারণ।ইয়েমেন থেকে প্রত্যক্ষদর্শীরা দেশজুড়ে বিস্ফোরণের কথা নিশ্চিত করেছেন বলে রয়টার্স জানিয়েছে।বৃহস্পতিবার রাতে এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সতর্ক করে বলেছেন, প্রয়োজনে তিনি আরও পদক্ষেপ নিতে দ্বিধা করবেন না। বাইডেন বলেছেন, “লক্ষ্যস্থলে চালানো এসব হামলা পরিষ্কার একটি বার্তা যে যুক্তরাষ্ট্র ও আমাদের অংশীদাররা শত্রুদের আমাদের সেনাদের ওপর হামলা বা জলপথগুলোর স্বাধীনতা বিপন্ন করতে দেবে না।” নেদারল্যান্ডস, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও বাহরাইন এ মিশনের অংশ হিসেবে অভিযানে সমর্থন যুগিয়েছে বলে বাইডেন জানিয়েছেন।

ব্রিটেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, “প্রাথমিক ইঙ্গিতগুলো হচ্ছে (হামলায়) বাণিজ্যিক জাহাজগুলোর প্রতি হুতিদের হুমকির সক্ষমতা একটি ধাক্কা খেয়েছে।”অস্ত্রোপচারের জটিলতা নিয়ে হাসপাতালে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন এক বিবৃতিতে বলেছেন, হুতিদের ড্রোন, ব্যালিস্টিক ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র, উপকূলীয় রাডার ও বিমান নজরদারি সক্ষমতাসহ বিভিন্ন লক্ষ্যে আঘাত হানা হয়েছে।একজন হুতি কর্মকর্তা রাজধানী সানার পাশাপাশি সাআদা, ধামার শহরসহ হোদেইদাহ প্রদেশে ‘বিমান আক্রমণ’ চালানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন। এসব হামলাকে ‘আমেরিকান-জায়নবাদী-ব্রিটিশ আগ্রাসন’ বলে অভিহিত করেছেন তিনি।প্রত্যক্ষদর্শীরা রয়টার্সকে জানান, সানা বিমানবন্দর সংলগ্ন একটি সামরিক ঘাঁটি, তাইজ বিমানবন্দর সংলগ্ন একটি সামরিক এলাকা, হোদেইদাহে হুতিদের নৌ ঘাঁটি এবং হাজ্জাহ প্রদেশের সামরিক স্থাপনাগুলোতে হামলা হয়েছে।  

অক্টোবরে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত মধ্যপ্রাচ্যে এ যুদ্ধ বিস্তৃত হওয়ার অন্যতম সবচেয়ে নাটকীয় প্রদর্শনী ইয়েমেনে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেনের এ হামলা। যদিও যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, উত্তেজনা বাড়ানোর কোনো উদ্দেশ্য নেই তাদের।এক মার্কিন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, জঙ্গি বিমান, জাহাজ ও ডুবোজাহাজের দিয়ে হামলাগুলো চালানো হয়েছে। তিনি জানান, এক ডজনেরও বেশি স্থানে আঘাত হানা হয়েছে, হুতিদের সামরিক সক্ষমতা দুর্বল করার লক্ষ্য নিয়ে হামলাগুলো চালানো হয়েছে, এগুলো শুধুমাত্র প্রতীকী ছিল না।যুক্তরাষ্ট্রের আরেক ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তা বলেছেন, “শুরু থেকেই এবং প্রেসিডেন্টের দিকে থেকেও হামলাগুলোর লক্ষ্য খুব পরিষ্কার ছিল। সাগরে চলাচলরত বাণিজ্যিক ও সামরিক জাহাজগুলোতে হুতিদের হামলা চালানোর সক্ষমতা দূর করাই এর উদ্দেশ্য ছিল।”

হুতিরা দাবি করেছে, গাজায় ফিলিস্তিনিদের প্রতি একাত্মতা জানিয়ে এবং ইসরায়েলের হামলার প্রতিবাদে তারা লোহিত সাগরে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্কিত জাহাজগুলোতে হামলা চালাচ্ছে।এর আগে মঙ্গলবার রাতে লোহিত সাগরের দক্ষিণাঞ্চলে হুতিদের ছোড়া ২১টি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র গুলি করে ধ্বংস করার কথা জানিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নৌবাহিনী। হামলা প্রতিহত করার পর যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য ইঙ্গিত দিয়েছিল, তারা হুতিদের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নিতে পারে।হুতিদের এসব হামলা বন্ধ করার জন্য জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক পক্ষগুলোও আহ্বান জানিয়েছিল। হামলা বন্ধ না করলে হুতিরা এর পরিণতি ভোগ করবে বলে হুঁশিয়ার করেছিল যুক্তরাষ্ট্র।  গৃহযুদ্ধে কয়েকভাগে বিভক্ত হয়ে থাকা ইয়েমেনের রাজধানী সানাসহ অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলে ইরান সমর্থিত হুতিদের নিয়ন্ত্রণে আছে।গাজায় তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা ইসরায়েলের অবিরাম হামলায় এ পর্যন্ত ২৩ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য