স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক,২০ জুলাই: নিউ জিল্যান্ডের অকল্যান্ডে ফিফা আয়োজিত নারী ফুটবল বিশ্বকাপ টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচের কয়েক ঘণ্টা আগে এক বন্দুকধারী গুলিতে অন্তত দুইজন নিহত হয়েছেন।বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকালে দেশটির সবচেয়ে বড় এ শহরের কেন্দ্রস্থলের বাণিজ্যিক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। গোলাগুলিতে বন্দুকধারীরও মৃত্যু হয়েছে এবং পুলিশ কর্মকর্তাসহ আরও ছয়জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।নিউ জিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ক্রিস হিপকিন্স জানিয়েছেন, এই ঘটনাকে সন্ত্রাসী হামলা বলে বিবেচনা করা হচ্ছে না। বিশ্বকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট পরিকল্পনা অনুযায়ীই শুরু হবে।অকল্যান্ডের কুইন স্ট্রিটের এ ঘটনায় পুলিশ হুমকি প্রশমিত করেছে এবং আর কোনো ঝুঁকি নেই বলে জনগণকে আশ্বস্ত করা হচ্ছে, বলেছেন তিনি।এ হামলার ঘটনায় কোনো রাজনৈতিক বা আদর্শিক উদ্দেশ্য শনাক্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন হিপকিন্স।
তিনি আরও জানান, বন্দুকধারী একটি শটগান ব্যবহার করে হামলাটি চালিয়েছে।হিপকিন্স নিউ জিল্যান্ড পুলিশের ‘সাহসী’ নারী ও পুরুষ সদস্যদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “তারা অন্যদের প্রাণ রক্ষার জন্য বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে গুলির মধ্যে সেখানে হাজির হয়েছে।“এই ধরনের পরিস্থিতিতে অন্যদের জীবন বাঁচাতে যারা নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দ্রুত এগিয়ে যায় এবং পদক্ষেপ নেয় তারাই তো বীর।”এবারের নবম নারী ফুটবল বিশ্বকাপের সহআয়োজক হয়েছে নিউ জিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া। এই টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী খেলা উপলক্ষ্যে অকল্যান্ড হাজার হাজার পর্যটক ও আন্তর্জাতিক খেলোয়ারকে স্বাগত জানিয়েছে বলে খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের। অকল্যান্ডের পুলিশ কমিশনার অ্যান্ড্রু কস্টার জানিয়েছেন, বন্দুকধারীর সঙ্গে গোলাগুলিতে এক পুলিশ কর্মকর্তাও আহত হয়েছেন।এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, যেখানে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে বন্দুকধারী সেখানকারই কর্মী। তার পরিচয় আনুষ্ঠানিকভাবে শনাক্ত করা হয়নি কিন্তু পুরুষ এই ব্যক্তির বয়স ২৪ বছর বলে ধারণা করা হচ্ছে।পুলিশ জানিয়েছে, এক নির্মাণস্থলে এক ব্যক্তি আগ্নেয়াস্ত্র থেকে গুলি ছুড়ছে এবং বন্দুকধারী একটি নিমার্ণাধীন ভবনের ভেতরে বারবার অবস্থান পরিবর্তন করে গুলি ছুড়ছে বলে খবর পান তারা।এক পর্যায়ে ওই ব্যক্তি ভবনের লিফটের জন্য নির্ধারিত ফোকরে অবস্থান নেয়। এখানে পুলিশের সঙ্গে তার গুলি বিনিময় হয়। এর কিছুক্ষণ পর তাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।
এ ঘটনার আগে এই বন্দুকধারী বেশ কিছুদিন গৃহবন্দি ছিল কিন্তু এই নির্মাণস্থলে কাজ করার জন্য তাকে ছাড় দেওয়া হয়েছিল।কস্টার বলেছেন, “প্রাথমিকভাবে পারিবারিক সহিংতার ইতিহাসের জন্য এই ব্যক্তি পরিচিত ছিল। এই ব্যক্তি এমন কিছু করতে পারে এমন কোনো কিছু ধারণা করা যায়নি।”এ ঘটনার পর অকল্যান্ডের কেন্দ্রীয় বাণিজ্যিক এলাকায় প্রচুর অস্ত্রধারী পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এলাকাটির কাছেই ওয়াটারফ্রন্ট ও ফান পার্ক। অকল্যান্ডের মেয়র ওয়েন ব্রাউন জানিয়েছেন, ফিফার কর্মী ও ফুটবল টিমগুলোর সবাই নিরাপদ ও সুরক্ষিত আছেন। টুইটারে ব্রাউন বলেছেন, “আমাদের সুন্দর শহরে কখনো এ ধরনের কিছু ঘটেছে বলে মনে করতে পারছি না। আজ সকালের এই ঘটনা সকল অকল্যান্ডবাসীর জন্য বেদনার এবং কষ্টদায়ক, কারণ এ ধরনের ঘটনায় আমরা অভ্যস্ত নই।” নিউ জিল্যান্ড, নরওয়ে, ইতালি, যুক্তরাষ্ট্র, ভিয়েতনাম ও পর্তুগালের ফুটবল দল এখন অকল্যান্ডে আছে বলে জানা গেছে। নগরীর ইডেন পার্ক স্টেডিয়ামে নিউ জিল্যান্ড ও নরওয়ের খেলার মধ্য দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু হবে। এ ঘটনায় নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর শোক প্রকাশ করেছে ফিফা। নিউ জিল্যান্ডের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাদের নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থাটি।