স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ২৮ জুন: আফ্রিকার দেশ মালিতে দশককাল ধরে চালানো শান্তিরক্ষা মিশন চলতি মাসের ৩০ তারিখেই শেষ করে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে জাতিসংঘ।এরপর ছয় মাসের ভেতর দেশটি থেকে মিশনের সব সদস্যকে প্রত্যাহারেরও ভাবনা আছে তাদের।মালির জাতিসংঘ মিশন নিয়ে ফ্রান্সের একটি খসড়া প্রস্তাবে এসব বলা হয়েছে; প্রস্তাবটি দেখেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।১৩ হাজার সদস্যের শক্তিশালী মিনুসমা মিশন নিয়ে জাতিসংঘ এবং মালির সামরিক জান্তার মধ্যে কয়েক বছর ধরেই প্রবল উত্তেজনা চলছিল। এ মাসে মালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুলায়ে দিয়োপ শান্তিরক্ষীদের ‘যত দ্রুত সম্ভব’ সরিয়ে নিতে আনুষ্ঠানিক অনুরোধ জানান।২০২১ সালে মালি রাশিয়ার ভাড়াটে বাহিনী ওয়াগনারের সঙ্গে মিত্রতা করার পর থেকেই সেখানে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনকে একের পর এক বিধিনিষেধের খাড়ায় পড়তে হচ্ছিল; তার মধ্যে হুট করেই এখন মিশনটি বন্ধও করে দিতে হচ্ছে।
জঙ্গিদের হাত থেকে বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষায় মিনুসমা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছিল। মিশনটি প্রত্যাহার করা হলে দেশটির পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে পড়তে পারে বলে শঙ্কা বিশ্লেষকদের।জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীরা চলে গেলে মালির তুলনামূলক দুর্বল সেনাবাহিনী আর ওয়াগনারের এক হাজার সৈন্যকে আফ্রিকার দেশটির উত্তর ও মধ্যস্থলের বিস্তৃত মরুভূমি দখলে রাখা জঙ্গিদের মুখোমুখি হতে হবে।কয়েকদিন আগেই রাশিয়ায় ক্ষণস্থায়ী একটি বিদ্রোহে জড়িয়ে পড়া ওয়াগনারের ভবিষ্যৎ নিয়েও নানান জল্পনা-কল্পনা আছে। তবে বাহিনীটির প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোজিন বলেছেন, ওয়াগনারকে বেলারুশের বাইরে কার্যক্রম চালানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে।ফ্রান্সের খসড়া প্রস্তাব অনুযায়ী, সৈন্য স্থানান্তর ঠিকঠাকভাবে করতে জাতিসংঘের কর্মীরা চলতি বছরের শেষ পর্যন্ত মালিতে থাকবেন, তবে এই সময়ে তাদের কার্যক্রম আগের তুলনায় অনেক সীমিত থাকবে। তারা এমনকী মালির সেনাদেরও তেমন কোনো সহায়তা দেবেন না।
প্রস্তাবটি উত্থাপনের আগেও এর ভেতর থাকা শব্দ বদলে যেতে পারে; তবে তেমন সম্ভাবনা খুব একটা নেই বলে দুটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে।এ প্রস্তাব নিয়ে বৃহস্পতিবার ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদে ভোটাভুটি হওয়ার কথা। প্রস্তাবটি অনুমোদিত হতে অন্তত ৯ সদস্যের ভোট লাগবে। রাশিয়া, চীন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের যে কেউ ভিটো দিলেও প্রস্তাবটি বাতিল হয়ে যাবে।এ প্রসঙ্গে মিনুসমার মুখপাত্র কিছু বলতে রাজি হননি। মালির কর্তৃপক্ষের মন্তব্য চাওয়া হলেও তাদের কাছ থেকে সাড়া পাওয়া যায়নি।জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর এক মুখপাত্র বলেছেন, নিরাপত্তা পরিষদের সিদ্ধান্তের ওপর ভিত্তি করে জাতিসংঘ মালির কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মিনুসমা প্রত্যাহার নিয়ে কাজ করতে প্রস্তুত।এ নিয়ে ভেতরে ভেতরে আলোচনাও চলছে, বলেছেন তিনি।