স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক,২৭ জুন: রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে বিদ্রোহীদের সঙ্গে লড়াইয়ে নিহত পাইলটদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে।এতে এই প্রথম নিশ্চিত হলো বিদ্রোহী মিলিশিয়া বাহিনী ওয়াগনার গ্রুপ শনিবার মস্কোর দিকে এগিয়ে যাওয়ার সময় লড়াইয়ে রাশিয়ার বৈমানিকরা নিহত হয়েছেন।সোমবার জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে পুতিন প্রথমবারের মতো মিলিশিয়া বাহিনীর প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোজিনের নেতৃত্বে হওয়া ওই বিদ্রোহ নিয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য করলেন।লড়াইয়ে ওয়াগনার বাহিনী রাশিয়ার বিমান ভূপাতিত করেছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসা এমন প্রতিবেদনগুলোও পুতিনের ভাষণের মাধ্যমে নিশ্চিত হয়েছে; জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।পুতিন বলেছেন, “নিহত বীর পাইলটদের সাহস ও আত্মত্যাগ রাশিয়াকে শোচনীয় বিধ্বংসী পরিণতি থেকে রক্ষা করেছে।”বিদ্রোহীরা রাশিয়ার অস্তিত্বকে হুমকির মুখে ফেলেছিল এবং এর পেছনে যারা আছে তাদের শাস্তি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।তবে বিদ্রোহীদের সঙ্গে লড়াইয়ে কতোজন পাইলট নিহত হয়েছেন এবং কতোগুলো বিমান ভূপাতিত হয়েছে, এ বিষয়ে সরকারি কোনো ভাষ্য পাওয়া যায়নি।রাইবারসহ রাশিয়ার সামরিক তৎপরতা পর্যবেক্ষণ করা কিছু রুশ টেলিগ্রাম চ্যানেল শনিবার জানিয়েছিল, দিনব্যাপী চলা ওই বিদ্রোহের সময় রাশিয়ার ১৩ জন পাইলট নিহত হয়েছেন।
আর তিনটি এমআই-৮ এমটিপিআর ইলেকট্রনিক ওয়্যারফেয়ার হেলিকপ্টার এবং ক্রুসহ একটি ১১-১৮ বিমান ভূপাতিত হয়েছে বলে রাইবার জানিয়েছে।রয়টার্স এসব প্রতিবেদন স্বতন্ত্রভাবে যাচাই করতে পারেনি। কী পরিস্থিতিতে আকাশযানগুলোকে গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে এবং পাইলটরা নিহত হয়েছেন, তাও পরিষ্কার হয়নি।পুতিন বলেছেন, বিদ্রোহ চলাকালে ‘আমার সরাসরি নির্দেশে রক্তপাত এড়াতে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল’।শনিবার বেশ কয়েকঘণ্টার তীব্র উত্তেজনার পর বেলারুশের প্রেসিডেণ্টের মধ্যস্থতায় বিদ্রোহ প্রশমিত হয়। দিনের শেষভাগে ওয়াগনার প্রধান বিদ্রোহে ক্ষ্যান্ত দেন এবং সেনাদের ঘাঁটিতে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেন। তিনি নিজেও প্রতিবেশী বেলারুশে চলে যেতে সম্মত হন।ভাষণে পুতিন বলেন, “সময় দরকার, অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে যারা ভুল করেছে তাদের নিজেদের জ্ঞান ফিরে আসার, তাদের কর্মকাণ্ড সমাজ দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে এটি উপলব্ধি করার এবং যে অ্যাডভেঞ্চারে তারা জড়িয়ে পড়েছিল তা যে রাশিয়া ও আমাদের রাষ্ট্রের জন্য শোচনীয় ও ধ্বংসাত্মক পরিণতি বয়ে নিয়ে আসতো তা বোঝার সুযোগ দেওয়া দরকার।”
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, ওয়াগনার বাহিনীগুলোকে বেলারুশে চলে যাওয়ার, রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে চুক্তি করার অথবা পরিবারের কাছে ফিরে যেতে অনুমতি দেওয়ার যে প্রতিশ্রুতি শনিবার দিয়েছেন তা রাখবেন তিনি।‘ভ্রাতৃঘাতী সংঘাত’ এড়াতে ওয়াগনারের যে যোদ্ধারা ও কমান্ডাররা সরে দাঁড়িয়েছিলেন পুতিন তাদের ধন্যবাদ দিয়ে বলেছেন, ওয়াগনার সদস্যদের বড় একটি অংশ দেশপ্রেমিক। তবে ভাষণে তিনি প্রিগোজিনের নাম নেননি।সোমবার রাতে পুতিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগুসহ রাশিয়ার নিরাপত্তা বিভাগগুলোর প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বলে ক্রেমলিনের এক মুখপাত্রকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে আইএফএক্স।ওয়াগনারের প্রধান প্রিগোজিন তার প্রেস সার্ভিসের টেলিগ্রাম চ্যানেলে ১১ মিনিটের একটি অডিও বার্তা পোস্ট করেছেন। এতে তিনি কোথায় আছেন বা যে চুক্তির অধীনে তিনি মস্কোর দিকে যাত্রা থামিয়েছেন, তা নিয়ে তেমন কিছু বলেননি।তিনি বলেছেন, তারা দক্ষিণাঞ্চল থেকে মস্কোর দিকে প্রায় ৮০০ কিলোমিটারের মতো অগ্রসর হওয়ার পর হেলিকপ্টার এসে তাদের ওপর হামলা চালায়, তখন তার যোদ্ধারা বাধ্য হয়ে সেগুলো গুলি করে ভূপাতিত করে।