স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৩১ ডিসেম্বর। মহামারীর দাপট মোকাবেলায় দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে বলবৎ থাকা রাত্রিকালীন কারফিউর নিয়ম তুলে দিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার কর্মকর্তারা বলেছেন, তাদের দেশ সম্ভবত কোভিড-১৯ সংক্রমণের চতুর্থ ঢেউয়ের চূড়া পেরিয়ে গেছে।
দেশটির সরকারের দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করা ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট তুলনামূলক বেশি সংক্রামক হলেও সংক্রমণের অন্যান্য ঢেউয়ের তুলনায় এবার হাসপাতালে ভর্তি কম দেখা গেছে। তবে মৃত্যুর পরিমাণ সামান্য বেশি ছিল, বলছে তারা।
দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম শনাক্ত ওমিক্রন বিশ্বের কোথাও কোথাও এত দ্রুত ছড়াচ্ছে যে পরিস্থিতি মোকাবেলায় অনেক দেশকেই বিধিনিষেধের আওতা বাড়াতে হচ্ছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও সম্প্রতি সতর্ক করে বলেছে, ডেল্টা এবং ওমিক্রণের কারণে সৃষ্ট কোভিড ‘সুনামি’ বিভিন্ন দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে চাপে ফেলতে পারে।
অন্যদিকে মন্ত্রিসভার বিশেষ এক বৈঠকের পর দেওয়া বিবৃতিতে দক্ষিণ আফ্রিকা তাদের প্রায় সব প্রদেশেই আক্রান্ত রোগী ও হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা কমেছে বলে জানিয়েছে।
২৫ ডিসেম্বর শেষ হওয়া সপ্তাহে দেশটিতে নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে ৮৯ হাজার ৭৮১ জন; আগের সপ্তাহেও এই সংখ্যা ছিল ১ লাখ ২৭ হাজার ৭৫৩ জন।
রোগী সংখ্যা কমায় দক্ষিণ আফ্রিকা যেসব নিয়ম ছেঁটে ফেলেছে তার মধ্যে মধ্যরাত থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত চলাফেরায় বিধিনিষেধও আছে। স্বাভাবিক সময়ে লাইসেন্সবিধি অনুযায়ী দোকানপাট যতক্ষণ মদ বিক্রি করতে পারতো, এখন থেকে তাও করা যাবে, রাত ১১টায় দোকান বন্ধ করতে হবে না।
গত বছর মার্চের শেষদিকে জাতীয় দুর্যোগকালীন পরিস্থিতি ঘোষিত হওয়ার পর থেকেই দেশটিতে নানান মাত্রায় রাত্রিকালীন কারফিউ বলবৎ ছিল।
বিধিনিষেধ শিথিল হলেও দেশটি জনসাধারণকে টিকা নিতে এবং বাধ্যতামূলক মাস্ক পরাসহ জনস্বাস্থ্য সংক্রান্ত নির্দেশনাগুলো মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছে।
সামাজিক দূরত্বের নিয়ম মানার সুযোগ করে দিতে চার দেয়ালের ভেতর যে কোনো আয়োজনে সর্বোচ্চ এক হাজার এবং চার দেয়ালের বাইরে সর্বোচ্চ দু্ই হাজার কিংবা ভেন্যুগুলোর ধারণক্ষমতার সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশের বেশি জমায়েতের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা বহাল আছে।
ন্যাশনাল করোনাভাইরাস কমান্ড কাউন্সিল (এনসিসিসি) পরিস্থিতির ওপর কড়া নজর রাখবে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী বা হাসপাতালে রোগী ভর্তি বাড়লে নতুন সিদ্ধান্ত দেবে, বলেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার কর্মকর্তারা।দেশটিতে এখন পর্যন্ত প্রায় ৩৫ লাখ কোভিড রোগী শনাক্ত হয়েছে; মহামারী দেশটির ৯০ হাজারের বেশি লোকের প্রাণও কেড়ে নিয়েছে।