স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক,২৯ মার্চ: সীমান্তের কাছে নেটোর সদস্য দেশগুলোর সমরশক্তি বৃদ্ধি এবং নিষেধাজ্ঞাসহ বছর বছর ধরে চলে আসা পশ্চিমা চাপ মোকাবেলার লক্ষ্যেই বেলারুশে রুশ কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে মিনস্ক।এর মাধ্যমে মঙ্গলবার তারা তাদের ভূখণ্ডে রাশিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র স্থাপনের বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করেছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।শনিবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিতির পুতিন বেলারুশে কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েন এবং পারমাণবিক অস্ত্রশস্ত্র সংরক্ষণে সক্ষম স্থাপনা নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছিলেন। এর দুই দিন পর বেলারুশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতেও একই কথা জানানো হল।কখন মোতায়েন করা হবে, বা এই সম্বন্ধে পুতিন আর বিস্তারিত কিছু না বললেও, তার ঘোষণায় ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর সীমান্তের বাইরে প্রথম মস্কোর পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েনের পথ সুগম হল।বেলারুশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কোর সরকারকে উৎখাতের লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্রদের তুমুল চাপ মোকাবেলায় রাশিয়ার পারমাণবিক বোমা তাদের সুরক্ষা দেবে।“গত আড়াই বছর ধরে বেলারুশ প্রজাতন্ত্রকে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও এদের নেটো মিত্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশগুলোর কাছ থেকে নজিরবিহীন রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও তথ্যগত চাপের মুখোমুখি হতে হচ্ছে,” বলেছে বেলারুশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
তারা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর ‘সরাসরি ও বর্বর হস্তক্ষেপের’ও অভিযোগ এনেছে। প্রায় তিন দশক ধরে রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ এই দেশটি লৌহমুষ্টিতে শাসন করছেন সাবেক সোভিয়েত সমবায় প্রধান লুকাশেঙ্কো।“এসব পরিস্থিতিতে, এবং এসব কারণে জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত বৈধ উদ্বেগ ও ঝুঁকি থেকে বেলারুশ তার নিজের সুরক্ষা ও প্রতিরক্ষা সক্ষমতা জোরদারের মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া দেখাতে বাধ্য হচ্ছে,” বিবৃতিতে বলেছে মন্ত্রণালয়টি।বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউক্রেইনে মস্কো তাদের ভাষায় ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরু করার পর পশ্চিমা দেশগুলোকে ক্রেমলিন পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে যত সংকেত দিয়েছে, বেলারুশে কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েনের ঘোষণা তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।পারমাণবিক অস্ত্রবিরোধী আন্দোলনকারীরা বলছেন, এই পদক্ষেপ যুদ্ধক্ষেত্রে স্বল্প পাল্লার কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের সম্ভাবনা বাড়াবে, যদিও সামরিক দিক থেকে এর তেমন কোনো গুরুত্ব থাকবে না।পুতিন বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপজুড়ে অনেক পারমাণবিক ওয়ারহেড মোতায়েন করেছে, সেগুলোর ওপর তাদের নিয়ন্ত্রণও বজায় রয়েছে। রাশিয়ার পদক্ষেপ অনেকটা সেরকমই।মিনস্ক বলেছে, রুশ পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েন আন্তর্জাতিক (পারমাণবিক অস্ত্র) সম্প্রসারণবিরোধী চুক্তিগুলো লংঘন করবে না; বেলারুশে মোতায়েন হলেও এসব অস্ত্রের ওপর মিনস্কের নিয়ন্ত্রণ থাকবে না।