স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক,২৯ মার্চ: প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ও তার অজনপ্রিয় পেনশন সংস্কার বিলের বিরুদ্ধে প্যারিসে বিক্ষোভকারীদের ময়লার বাক্সে আগুন ও প্রজেক্টাইল ছোড়ার পাল্টায় পুলিশও লাঠিচার্জ করেছে, ছুড়েছে কাঁদুনে গ্যাস।মঙ্গলবার রেন, বোহদ্যু, টুলুসের মতো একাধিক শহরের সমাবেশ থেকেও সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে, নঁতে শহরে একটি ব্যাংকের শাখায় এবং বেশ কয়েকটি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়।বার্তা সংস্থা রয়টার্স লিখেছে, পেনশন বিল নিয়ে জনঅসন্তোষ ম্যাঁক্রোবিরোধী বিস্তৃত মনোভাব বিকশিত করলেও গত সপ্তাহের তুলনায় মঙ্গলবার ফ্রান্সজুড়ে তুলনামূলক কম সংঘর্ষ হয়েছে, বেশিরভাগ সমাবেশই মোটাদাগে শান্তিপূর্ণ ছিল।তবে বিএফএম টিভির লাইভ ফুটেজে প্যারিসে সংঘর্ষে পুলিশের লাঠিচার্জের পর এক ব্যক্তিকে মাটিতে নিথর অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা গেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একই ধরনের ফুটেজ ভাইরাল হয়ে গেছে। ওই ব্যক্তির স্বাস্থ্য পরিস্থিতি নিয়ে পরে মন্তব্য চাইলেও পুলিশ তাতে সাড়া দেয়নি।এর আগে মঙ্গলবার ফ্রান্সের সরকার ফের পেনশন বিল স্থগিত ও পুনর্বিবেচনায় শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নগুলোর দাবি প্রত্যাখ্যান করে।
যে পেনশন সংস্কার বিল নিয়ে এত হাঙ্গামা সেই বিলটি পাস হয়ে আইনে কার্যকর হলে ফ্রান্সে অবসরের বয়স দুই বছর বেড়ে ৬৪ হবে।ক্ষিপ্ত শ্রমিক নেতারা বলেছেন, সরকারকে অবশ্যই সংকট থেকে বের হওয়ার পথ খুঁজে বের করতে হবে।আর সরকার বলছে, তারা অন্য অনেক বিষয় নিয়ে ইউনিয়নগুলোর সঙ্গে ‘কথা বলার চেয়েও বেশি কিছু করতে’ আগ্রহী, কিন্তু পেনশন বিল নিয়ে কোনো নড়চড় হবে না। প্রধানমন্ত্রী এলিজাবেথ বোর্ন আগামী সোম ও মঙ্গলবার ইউনিয়নগুলোর প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠকের প্রস্তাব দিয়েছেন।জানুয়ারির মাঝামাঝি থেকে হওয়া একের পর এক ধর্মঘট, সমাবেশ ও প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে লাখ লাখ মানুষ এই পেনশন সংস্কার বিলের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান ব্যক্ত করেছে। দেশজুড়ে আগামী ৬ এপ্রিল পরবর্তী দফা বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নগুলো।বিশেষ ক্ষমতা ব্যবহার করে পার্লামেন্টে ভোট ছাড়াই সরকার বিলটি পাসের বন্দোবস্ত করায় বিক্ষোভ জোরাল হয়ে ওঠে।মঙ্গলবার প্যারিসে এক বিক্ষোভকারীর হাতে থাকা ব্যানারে ফ্রান্সের এখনকার মেজাজ উঠে এসেছে।
“ফ্রান্স ক্রুদ্ধ,” বলা হয়েছে ওই ব্যানারে।“বিলটি ম্যাক্রোঁর নানান নীতি নিয়ে ক্ষোভে অনুঘটকের ভূমিকা পালন করেছে,” বলেছেন চাকরিপ্রার্থীদের জন্য প্রতিষ্ঠিত পোল এমপ্লয়ি কার্যালয়ে কাজ করা ৩১ বছর বয়সী ফ্যানি শ্যারিয়ের।প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারে পেনশন সংস্কারের অঙ্গীকার করা ম্যাক্রোঁ বলেছেন, দেশের অর্থনৈতিক ভারসাম্য বজার রাখতে এই সংস্কার জরুরি হয়ে পড়েছিল। বিরোধী দল ও শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নগুলো বলছে, অর্থনৈতিক ভারসাম্য বজায় রাখার অন্য পথও আছে। “আমরা একটি উপায় প্রস্তাব করেছি। কিন্তু আমাদের ফের চুপ করিয়ে দেওয়া হচ্ছে, যা অসহনীয়,” প্যারিসের সমাবেশে সাংবাদিকদের বলেছেন সিএফডিটি ইউনিয়নের প্রধান লরেন বের্জে।