স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২৭ ডিসেম্বর : ব্রাজিলের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য বাহিয়ায় কয়েক সপ্তাহের ভারি বৃষ্টিপাতের পর দেখা দেওয়া বন্যার মধ্যে দু’টি বাঁধ ধসে পড়েছে।এতে ওই অঞ্চলের স্ফীত হয়ে থাকা নদীগুলোতে প্লাবন দেখা দিয়েছে বলে রোববার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় শনিবার রাতে বাহিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর ভিত্তোরিয়া দ্য কুঙ্কিয়িস্তার কাছে বেহুগা নদীর ইগুয়া বাঁধ ভেঙে পড়ে। এতে কর্তৃপক্ষ ওই অঞ্চলের, বিশেষ করে ছোট শহর ইতাম্বির বাসিন্দাদের সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়। রোববার সকালে এর ১০০ কিলোমিটার উত্তরে জুসিয়াপিতে বাড়তে থাকা পানির চাপে দ্বিতীয় আরেকটি বাঁধ ভেঙে পড়ে। এরপর ওই এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার জন্য সতর্ক করা হয়।রয়টার্স জানিয়েছে, বাঁধ ভেঙে পড়ায় সেতু ও রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। দমকল কর্মীরা উপকূলীয় ইতারবুনা শহরের কেন্দ্রস্থলে বন্যার ডুবে থাকা বাড়িগুলো থেকে আটকা পড়া বাসিন্দাদের উদ্ধার করেছেন।
উদ্ধারকারীরা বন্যায় ডুবে থাকা রাস্তাগুলো দিয়ে রবারের ডিঙ্গি নৌকা চালিয়ে আটকা পড়া পরিবারগুলোর কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন বা তাদের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছেন।স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ইতারবুনার ভেতর দিয়ে চলে যাওয়া কাশোয়েইরা নদী ৫০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে উঁচু দিয়ে বইছে। ভিত্তোরিয়া দ্য কুঙ্কিয়িস্তার মেয়র শেইলা লেমোস জানিয়েছেন, ধসে যাওয়া ইগুয়া বাঁধের নিকটবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।নগরীর ওয়েবসাইটে করা এক পোস্টে লেমোস জানান, বন্যার কারণে ব্রাজিলের উত্তরপূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চলের মধ্যবর্তী প্রধান ট্রাক রুট বিআর-১১৮ মহাসড়ক বিচ্ছিন্ন হওয়ার হুমকিতে পড়েছে।
বাহিয়ার গভর্নর হুই কাস্ত্রো জানিয়েছেন, বৃষ্টির কারণে অন্তত চার লাখ লোক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অন্তত দুই মাস ধরে চলা ভারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এতে দেখা দেওয়া বন্যার মধ্যে জরুরি পরিস্থিতির মুখে ৬৭টি শহরের কয়েক হাজার বাসিন্দাকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “পানি এক থেকে দুই মিটার আবার কোথাও কোথাও তিন মিটার পর্যন্ত উঠেছে, এ কারণে কয়েক হাজার মানুষ তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে সরে যেতে বাধ্য হয়েছেন।” দমকল বাহিনীর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নভেম্বরের প্রথমদিক থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টিজনিত কারণে বাহিয়াতে এ পর্যন্ত ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।রাজ্যটির রাজধানী সালভাদোরে আবহাওয়া কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ডিসেম্বরে গড়ের চেয়ে ছয় গুণ বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে।