স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। ১৪ ডিসেম্বর: চলতি বছরের অগাস্টে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে মার্কিন ড্রোন হামলায় শিশুসহ ১০ বেসামরিক নিহতের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সৈন্য বা কর্মকর্তাকে জবাবদিহি করা হবে না বলে জানিয়েছে পেন্টাগন।
তালেবান আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র সেসময় দেশটি থেকে তার সেনা ও সহযোগীদের সরিয়ে নিচ্ছিল, এর মধ্যেই ওই ড্রোন হামলাটি চালানো হয়।হামলায় ত্রাণ সংস্থার এক কর্মী ও ৭ শিশুসহ তার পরিবারের আরও ৯ সদস্য নিহত হয়।মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ডের জেনারেল কেনেথ ম্যাককেনজি পরে ওই হামলাকে ‘মর্মান্তিক ভুল’ বলে অ্যাখ্যা দিয়েছিলেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।২৯ অগাস্ট যে গাড়ি লক্ষ্য করে ড্রোন হামলাটি চালানো হয়, সেটি মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) স্থানীয় শাখা আইএস-কের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে সেসময় ধারণা করেছিল মার্কিন গোয়েন্দারা।
গত মাসে প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ পর্যায়ের এক অভ্যন্তরীণ পর্যালোচনায় বলা হয়, কোনো আইন ভঙ্গ না হওয়ায় এবং কোনো অসদাচরণ বা অবহেলার প্রমাণ না পাওয়ায় ড্রোন হামলায় শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার দরকার নেই।সোমবার মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন ওই পর্যালোচনা প্রতিবেদনটি অনুমোদন করেন বলে বেশ কয়েকটি মার্কিন গণমাধ্যম জানিয়েছে।এদিন পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কারবি সাংবাদিকদের জানান, ড্রোন হামলার ওই ঘটনা নিয়ে পর্যালোচনায় ঊর্ধ্বতন কমান্ডাররা প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে যে একাধিক সুপারিশ করেছেন তার মধ্যে ঘটনার জন্য শাস্তি কিংবা সংশ্লিষ্টদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার কথা নেই।
অগাস্টে ওই ড্রোন হামলার কয়েকদিন আগেই কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে আত্মঘাতী বোমা হামলায় ১৩ মার্কিন সেনাসহ ১৮৩ জন নিহত হয়েছিল।আরও হামলা হতে পারে এই গোয়েন্দা তথ্যের উপর ভিত্তি করে মার্কিন বাহিনী ২৯ অগাস্ট ড্রোন হামলাটি চালায়, যা ত্রাণ সংস্থার দীর্ঘদিনের কর্মী জেমারি আহমাদি ও আরও ৯ জনের প্রাণ কেড়ে নেয়। ড্রোনটি যখন আঘাত হানে, তখন আহমাদির গাড়িটি বাড়ির উঠানেই ছিল, কাবুল বিমানবন্দর থেকে যার দূরত্ব ছিল ৩ কিলোমিটারের মতো।মার্কিন কর্মকর্তারা পরে জানান, আহমাদির গাড়িটিকে আইএস-কে সংশ্লিষ্ট একটি আঙ্গিনায় দেখা গিয়েছিল, এবং ২৯ অগাস্ট গাড়িটি যে যে পথ ব্যবহার করেছে তার সঙ্গে আইএস-কের পরবর্তী হামলার পরিকল্পনা সংক্রান্ত গোয়েন্দাদের তথ্যের মিল পাওয়া গিয়েছিল।
ড্রোন হামলার পরপরই সেখানে আরেকটি বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায়, যা মার্কিন কর্মকর্তাদের ‘গাড়িটিতে বিস্ফোরক ছিল’ এ ধারণাকে পোক্ত করে।তবে পরে তদন্তে জানা যায়, আহমাদির গাড়িতে কোনো বিস্ফোরক ছিল না। দ্বিতীয় বিস্ফোরণটি বাড়ির উঠানে থাকা প্রোপেন ট্যাংকের কারণে হয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।