স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক , ১৬জানুয়ারি:
আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে বাড়িতে ঢুকে সাবেক এক নারী এমপি এবং তার দেহরক্ষীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির পুলিশ।বিবিসি জানিয়েছে, তালেবান ২০২১ সালের অগাস্টে আফগানিস্তানের ক্ষমতায় ফেরার পর হাতে গোণা যে কজন নারী এমপি বিদেশে পাড়ি না জমিয়ে দেশে থেকে গিয়েছিলেন, ৩২ বছর বয়সী মুরসাল নবীজাদা তাদের একজন।রোববার রাতে তার বাড়িতে ওই হামলায় তার ভাই এবং আরেক নিরাপত্তারক্ষী আহত হয়েছেন। কাবুল পুলিশের মুখপাত্র খালিদ জাদরান বলছেন, নিরাপত্তা বাহিনী ‘গুরুত্ব দিয়ে’ এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।সাবেক সহকর্মীরা মুরসাল নবীজাদাকে ‘আফগানিস্তানের নির্ভীক চ্যাম্পিয়ন’ বলতেন, কারণ দেশ ছেড়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েও তিনি থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।তালেবান ক্ষমতায় ফেরার পর আবারও কঠোর নিয়মের বেড়াজালে কার্যত বন্দি করে ফেলা হয়েছে আফগান নারীদের। স্বাধীনভাবে পেশা নির্বাচন বা পড়ালেখা করার সুযোগ তাদের আর নেই।
আরেক সবেক এমপি মরিয়ম সোলাইমানখিল বলেছেন, নবীজাদা ছিলেন একজন দৃঢ়, স্পষ্টভাষী নারী, একজন ‘সত্যিকারের ছাপ রেখে যাওয়া’ মানুষ, যিনি বিপদের মুখেও নিজের বিশ্বাসের পক্ষে অটল ছিলেন।”আফগানিস্তান ছেড়ে যাওয়ার সুযোগ পাওয়ার পরও তা তিনি নেননি, বরং দেশে থেকে মানুষের পক্ষে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।”পূর্বাঞ্চলীয় নানগারার প্রদেশের মেয়ে মুরসাল নবীজাদা ২০১৮ সালে কাবুল থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তালেবান ক্ষমতা দখলের আগ পর্যন্ত তিনি দায়িত্বে ছিলেন।সে সময় প্রতিরক্ষা বিষয়ক পার্লামেন্টারি কমিশনের সদস্য এবং মানব সম্পদ উন্নয়ন ও গবেষণা ইনস্টিটিউটেও তিনি কাজ করেছেন।ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য হান্না নিউম্যান এই হত্যাকাণ্ডের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “আমি ব্যথিত, ক্ষুব্ধ। পুরো বিশ্বকে আমি এ খবর জানতে চাই।”তাকে হত্যা করা হয়েছে অন্ধকারে, কিন্তু তালেবান লিঙ্গ বৈষম্যের যে ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে, সেটা তো সবার সামনেই তৈরি করেছে তারা।”আফগানিস্তানের সাবেক পশ্চিমা-সমর্থিত সরকারের কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আবদুল্লাহ বলেছেন, নবীজাদার মৃত্যুতে তিনি শোকাহত। অপরাধীদের শাস্তি হবে, এটুকুই তার প্রত্যাশা।মুরসাল নবীজাদাকে ‘জনগণের প্রতিনিধি ও সত্যিকারের সেবক’ হিসাবে বর্ণনা করেন আবদুল্লাহ।