স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা, ৫ ডিসেম্বর: সমুদ্র পথে রপ্তানি করা রাশিয়ার তেলের মূল্য বেঁধে দেওয়ার জি৭, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এবং অস্ট্রেলিয়া সিদ্ধান্ত সোমবার থেকে কার্যকর শুরু হয়েছে।এ পদক্ষেপের মাধ্যমে পশ্চিমা দেশগুলো তেল রপ্তানি থেকে রাশিয়ার আয় কমিয়ে দেশটির অর্থনীতিকে দুর্বল করে ইউক্রেইন যুদ্ধে মস্কোর অর্থের যোগান কমাতে চাইছে। এদিকে রাশিয়া বলেছে, পশ্চিমাদের বেঁধে দেয়া তেলের দাম ‘মানবে না’ তারা আর এর জন্য উৎপাদন কমাতে হলে তাই করবে।ইইউয়ের সর্বসম্মতিতে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী অর্থনীতির সাত দেশের সংগঠন জি৭ ও অস্ট্রেলিয়া শুক্রবার সমুদ্র পথে রপ্তানি করা রাশিয়ার তেলের মূল্য ব্যারেল প্রতি ৬০ ডলার নির্ধারণ করে দেয়। রাশিয়া বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম তেল রপ্তানিকারী দেশ।রোববার রাশিয়ার উপপ্রধানমন্ত্রী আলেকজান্দার নোভাক বলেছেন, পশ্চিমা দেশগুলোর এই পদক্ষেপ স্থূল হস্তক্ষেপ এবং অবাধ বাণিজ্য নীতির বিরোধী।“কী মাত্রা ঠিক করা হয়েছে তা অগ্রাহ্য করে তেলের দাম বেঁধে দেওয়ার এ পদক্ষেপে বাধা দেওয়ার পন্থা নির্ধারণে কাজ করছি আমরা। এ ধরনের হস্তক্ষেপ ফের বাজারকে অস্থিতিশীল করবে,” বলেছেন রাশিয়ার তেল, গ্যাস, পারমাণবিক শক্তি ও কয়লা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা মন্ত্রী নোভাক।তিনি বলেন, “আমরা সেই দেশগুলোর কাছেই তেল ও পেট্রলিয়াম পণ্য বিক্রি করবো যারা বাজার পরিস্থিতি অনুযায়ী আমাদের সঙ্গে কাজ করবে, এতে আমাদের উৎপাদন যদি কিছুটা কমাতে হয় কমাবো।”জি৭ এর চুক্তিতে রাশিয়ার তেল জি৭ ও ইইউয়ের ট্যাংকার, ইন্সুরেন্স কোম্পানি ও ঋণ প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে পাঠানোর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, তবে সেক্ষেত্রে ওই তেল অবশ্যই বেঁধে দেওয়া মূল্য প্রতি ব্যারেল ৬০ ডলার বা এর কমে কিনতে হবে।
অক্টোবরে মার্কিন কর্মকর্তারা ও শিল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছিলেন, বেঁধে দেওয়া মূল্যের আওতা এড়িয়ে রাশিয়া তাদের অধিকাংশ তেল সমুদ্রপথে পাঠানোর জন্য যথেষ্ট পরিমাণ ট্যাংকারের ব্যবস্থা করতে পারবে। তাদের এ বক্তব্যে যুদ্ধকালীন রাশিয়ার আয় কমানোর পশ্চিমাদের সবচেয়ে উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনার সীমাবদ্ধতা প্রকাশ পেয়েছে বলে মত বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়ার তেলের মূল্য এই স্তরে (৬০ ডলার) বেঁধে দিয়ে বিশ্ব দুর্বলতা প্রকাশ করেছে। জেলেনস্কির বক্তব্য অনুযায়ী, তেলের মূল্য ৬০ ডলারে বেঁধে দেওয়ার এই পদক্ষেপ রাশিয়াকে যুদ্ধ থেকে বিরত রাখতে তেমন একটা কাজে দেবে না। পশ্চিমাদের এই সিদ্ধান্তকে ‘গুরুতর’ বলে উল্লেখ করা উচিত নয় বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেইনে আক্রমণ শুরু করার পর রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা ব্যাপক অথনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে; পাশাপাশি ইউক্রেইনের সরকারকে সহায়তা করতে শত শত কোটি ডলার সহায়তা পাঠিয়েছে।