স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ১৩ নভেম্বর: আর্জেন্টিনার শীর্ষ লিগে ইউটিউব তারকাকে মাঠে নামানোর ব্যাপারটি শুধু আলোচনা-সমালোচনায় সীমাবদ্ধ থাকছে না। এই ঘটনার পেছনে অনৈতিক কোনো উদ্দেশ্য বা অবৈধ বাজির ব্যাপার আছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে দা আর্জেন্টাইন জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট।পাবলিক প্রসিকিউটরের কার্যালয় থেকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ওই ইউটিউব তারকা ও তাকে মাঠে নামানো ক্লাবের কোচ ক্রিস্তিয়ান ফাবিয়ানি কোনো অবৈধ প্ল্যাটফর্মে জয়াড়িদের আকৃষ্ট করতে চেয়েছেন কি না, তা তদন্ত করে দেখা হবে।
এছাড়াও আর্জেন্টাইন ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনও (এএফএ) এই ঘটনা নিয়ে ‘এথিকস ট্রাইবুনাল’-এর মাধ্যমে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেছে। আর্জেন্টাইন ফুটবলের ‘ভাবমূর্তি ও বিশুদ্ধতা ক্ষতিগ্রস্থ’ হয়েছে বিবেচনা করে ব্যাপারটি খতিয়ে দেখছে তারা।স্থানীয় ক্রীড়া দৈনিক ওলেকে এএফএ সভাপতি ক্লাউদিও তাপিয়া বলেন, “যখন আমরা কোনো কিছু পছন্দ করি না, তখন তা শুধরে দিতে হবে আমাদের।”এই ঘটনায় ক্লাব দেপোর্তিভো রিয়েস্ত্রার সঙ্গে যোগাযোগ করে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। তবে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানায় ক্লাবটি।আর্জেন্টিনার শীর্ষ ফুটবল লিগে সোমবার আলোচিত এই ঘটনা ঘটে। ইভান রাউল বুয়াখেরুক ফের্নান্দেস, যিনি সামাজিক মাধ্যমে পরিচিত ‘Spreen’ নামে, তাকে স্ট্রাইকার হিসেবে সেরা একাদশে নামানো হয় পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে থাকা দল ভেলে সারফিলের বিপক্ষে।
এক মিনিটও অবশ্য মাঠে রাখা হয়নি তাকে। ৫০ সেকেন্ডেই তুলে নেওয়া হয় তাকে। তবে এই ঘটনা তোলপাড় তোলে আর্জেন্টাইন ফুটবলে।প্রথাবিরোধী ও চমকপ্রদ প্রচারণা কৌশলের জন্য আর্জেন্টাইন ফুটবলে পরিচিতি আছে দেপোর্তিভো রিয়েস্ত্রার। পেশাদার ফুটবলে কোনো অভিজ্ঞতা না থাকলেও ওই ইনফ্লুয়েন্সারকে মাস দুয়েক আগে চুক্তিবদ্ধ করে ক্লাবটি এবং আর্জেন্টাইন ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনে তাকে নিবন্ধন করানো হয়।এটিকে ক্লাবের প্রচারণার অংশ হিসেবেই দেখা হচ্ছিল। ২৪ বছর বয়সী ফের্নান্দেস আর্জেন্টিনায় তুমুল জনপ্রিয় ইনফ্লুয়েন্সার। ইউটিউবে তার সাবস্ক্রাইবার প্রায় ৮০ লাখ, ইনস্টাগ্রামে অনুসারী ৫০ লাখের বেশি। এছাড়া আমেরিকান ভিডিও লাইভ-স্ট্রিমিং সাইট টুইচ-এ তার অনুসারী ১ কোটির কাছাকাছি।তাকে মাঠে নামানোর পর তুমুল সমালোচনার মুখে রিয়েস্ত্রা ক্লাবের কর্তারা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, এটা প্রচারণারই অংশ এবং ক্লাবের মূল স্পন্সর খোঁজার চেষ্টার একটি প্রক্রিয়া।
তবে সমালোচনার ঝড় তাতে থামেনি। আর্জেন্টিনার ফুটবলের জন্য এটিকে লজ্জাজনক ও অপমানজনক বলে মন্তব্য করা হয়। অনেকেই বলেন, প্রতিপক্ষের প্রতি অসম্মান করার কথা। আর্জেন্টিনার সাবেক অধিনায়ক হুয়ান সেবাস্তিয়ান বেরন, যিনি এখন এস্তুদিয়ান্তে দে লা প্লাতা ক্লাবের চেয়ারম্যান, তিনি সামাজিক মাধ্যমে লিখেন, “ফুটবল ও ফুটবলারদের প্রতি চূড়ান্ত অসম্মানজনক।”সমালোচনার তীব্রতা দেখে রিয়েস্ত্রা ক্লাব পরে বিবৃতি দিয়ে দুঃখপ্রকাশ করে।“দুর্ভাগ্যজনকভাবে, এ বিপণন উদ্যোগটি প্রচুর নেতিবাচক মতামতের জন্ম দিয়েছে। যারা এই ঘটনায় আহত হয়েছে, তাদের কাছে আন্তরিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করছি আমরা। ভেলে সারফিল বা আর্জেন্টাইন ফুটবলকে অসম্মান করার ইচ্ছে আমাদের কোনোভাবেই ছিল না।”তবে খুব সহজেই ক্লাবটি পার পাচ্ছে না বলেই মনে হচ্ছে এখন।