স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৪ সেপ্টেম্বর : বিতর্কিত মন্তব্য সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে বেকাদায় পড়লেন মন্ত্রী সুধাংশু দাস। বুধবার সকালে বিধানসভা অধিবেশনে রওনা হওয়ার সময় তাঁর গাড়ি সরকারি আবাসনের সামনে রুখে দেয় রাজ্যের যুব কংগ্রেস এবং এনএসইউআই -র কর্মীরা। কালো পতাকা দেখিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।
মন্ত্রী সুধাংশু দাসের প্রতি দাবি জানান তিনি যাতে মন্ত্রী সভা থেকে অবিলম্বে পদত্যাগ করেন। তারপর মন্ত্রী গাড়ি থেকে নেমে যুব কংগ্রেস এবং এন এস ইউ আই কর্মীদের সাথে কথা বলতে বাধ্য হন। কিন্তু বিভিন্ন প্রশ্নের ফসকে মন্ত্রী শেষ পর্যন্ত মেজাজ হারালেন। মন্ত্রীকে প্রথমে প্রদেশ যুব কংগ্রেসের সভাপতি নীলকমল সাহা প্রশ্ন করেন কেন তিনি এ ধরনের বিতর্কিত মন্তব্য সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে রাজ্যের পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা করছেন? তখন মন্ত্রী সুধাংশু দাস প্রশ্নের উত্তরে বলেন তাঁর এ ধরনের পোস্টের পর যুব কংগ্রেস সভাপতি নীলকমল সাহার গায়ে কিংবা রাজ্যে কোথাও আগুন লেগেছে কিনা? তখন পাল্টা যুব কংগ্রেস সভাপতি প্রশ্ন করেন আগুন না লাগলেও কেন তিনি এ ধরনের পোস্ট সামাজিক মাধ্যমে করেছেন? এর উত্তরে মন্ত্রী বলেন জম্বু কাশ্মীর এবং কেরল থেকে লক্ষ লক্ষ হিন্দুদের বাড়িঘর ছেড়ে অন্যথায় পালিয়ে যেতে হল? পাশাপাশি সলমান জোশী বলেছে হিন্দুরা উগ্রপন্থী এবং কলকাতার মেয়র ফারিদ হাকিম যখন একইভাবে হিন্দুদের নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন তখন কেন এর প্রতিবাদ জানায় নি কংগ্রেস? এর উত্তরে যুব কংগ্রেস সভাপতি বলেন, আমরা ত্রিপুরায় বসবাস করি, ত্রিপুরার কথা বলুন। সম্প্রতি আপনি যে পোস্ট সামাজিক মাধ্যমে করেছেন সেই বিষয়ে আপনার কাছে এসেছি।
কারণ আমরা এখানে ত্রিপুরায় শান্তির পরিবেশ বজায় রাখতে আপনার কাছে আবেদন করতে চাই। এবং জানতে চাই আপনার কাছে কি এমন কোন প্রমাণ রয়েছে যে রাজ্যে মুসলিমরা মুর্তি ভাঙ্গার ঘটনা সংগঠিত করেছে। পাল্টা মন্ত্রী বলেন কংগ্রেস দল হিন্দু বিরোধী। তখন যুব কংগ্রেস সভাপতি বলেন আপনি কি কংগ্রেসের ইতিহাস জানেন? যখন কংগ্রেস দেশের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করছিল তখন আরএসএস ব্রিটিশকে চিঠি লিখতো। যাইহোক আপনি যদি সঠিক হয়ে থাকেন তাহলে কেন পোস্ট পুনরায় সামাজিক মাধ্যম থেকে মুছে ফেলেছেন? তখন মন্ত্রী বলেন তাকে অভিভাবক পোস্ট মুছে ফেলার জন্য নির্দেশ দিয়েছে তাঁকে। তখন প্রদেশ যুব কংগ্রেস সভাপতি বলেন তাহলে আপনার দলের অভিভাবক অবশ্যই বুঝতে পেরেছেন আপনি উস্কানিমূলক মন্তব্য পোস্ট করেছেন।
রানিরবাজার এবং গন্ডাছড়ার ঘটনা পরিকল্পিত ভাবে করেছে দুষ্কৃতিকারীরা। পাল্টা মন্ত্রী বলেন আপনি কি জানেন ত্রিপুরা রাজ্যে কতজন রোহিঙ্গা বাংলাদেশি ঢুকেছে? প্রদেশ যুব কংগ্রেস সভাপতি পাল্টা বলেন সরকার আপনারা চালাচ্ছেন। আপনারা বর্ডার সিকিউরিটি আরো বেশি কঠোর করুন। শেষ পর্যন্ত মন্ত্রী মেজাজ হারিয়ে বলেন কংগ্রেস দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আপনারা যে আন্দোলন সংগঠিত করেছেন তাকে স্বাগত জানানো হলো। যুব কংগ্রেস সভাপতির সাথে বাক যুদ্ধের পর মন্ত্রী সুধাংশু দাস পুনঃরায় গাড়িতে উঠে বিধানসভার উদ্দেশ্যে চলে যান। যুব কংগ্রেস সভাপতি নিল কমল সাহা সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জানান রাজ্যের পরিস্থিতিকে অশান্ত করার চেষ্টা করছে বিজেপি। সম্প্রতি মন্ত্রী সুধাংশু দাস সামাজিক মাধ্যমে উস্কানি মূলক বক্তব্য পোস্ট করেছেন। কোন কিছু না জেনে তিনি একটা অংশের মানুষের দিকে তোপ দাগেন। তাই এইদিন মন্ত্রী সুধাংশু দাসকে যুব কংগ্রেস ও এনএসইউআই-র পক্ষ থেকে কালো পতাকা দেখানো হয়েছে। এবং মন্ত্রী সুধাংশু দাসের পদত্যাগের দাবি জানানো হয়েছে। এইদিনের বিক্ষোভ কর্মসূচীতে যুব কংগ্রেসের সভাপতি ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন প্রদেশ এনএসইউআই-র সভাপতি সহ যুব কংগ্রেস ও এনএসইউআই-র কর্মী সমর্থকরা।