স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ২১ অক্টোবর : দিল্লির সিআরপিএফ স্কুলে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় নেপথ্যে রয়েছে খলিস্তান সংগঠন! সোশাল মিডিয়া প্ল্যার্টফর্ম টেলিগ্রামে রবিবারের বিস্ফোরণের ঘটনার দায় নিল এক খলিস্তানপন্থী সংগঠন। পাশাপাশি হুঁশিয়ারি দেওয়া হল ভারতীয় ‘এজেন্ট’দের। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর এই মামলায় খলিস্তানি যোগ নিয়ে তদন্তে নামল দিল্লি পুলিশ।
রবিবার সকালে ব্যাপক বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে ওঠে দিল্লির রোহিণীর প্রশান্ত বিহার এলাকা। সেখানে সিআরপিএফ স্কুলের সামনে ফাটে বোমা। বিস্ফোরণের পর বিকট এক গন্ধে ভরে যায় এলাকা। নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল। বিস্ফোরণে আশেপাশের বেশকিছু দোকান ও গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও, এই ঘটনায় হতাহতের কোনও খবর পাওয়া যায়নি। বিস্ফোরণের পরই ঘটনার তদন্তে নামে এনআইএ ও ফরেনসিক বিভাগ। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, আইইডি বিস্ফোরক ব্যবহার করা এই বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।কঠিন এবং তরল পদার্থের মধ্যে উচ্চচাপ সৃষ্টি করে গ্যাসে পরিণত করা হয়। বিস্ফোরণের পর সেই গ্যাস দ্রুতগতিতে চার দিকে ছড়িয়ে পড়ে। আর তার জেরে শক্তিশালী একটি কম্পন অনুভূত হয়। যা আশপাশের এলাকায় শব্দের চেয়ে দ্রুত গতিতে পৌঁছয়। রাজধানীর বুকে চাঞ্চল্যকর এই ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই ব্যাপক আতঙ্ক সৃষ্টি হয়।
এর পর সন্ধে নাগাদ এই বিস্ফোরণের দায় নেয় ‘জাস্টিস লিগ ইন্ডিয়া’ নামে এক খলিস্তানি সংগঠন। দিল্লি পুলিশের তরফে জানা গিয়েছে, সোশাল মিডিয়ায় এই সংক্রান্ত একটি পোস্ট তদন্তকারীদের নজরে এসেছে। যেখানে খলিস্তানি সংগঠনের তরফে দাবি করা হয়েছে, ‘যদি ভারতের এজেন্ট ও তাঁদের মাথারা ভেবে থাকে কয়েকজন গুন্ডাকে ভাড়া করে তারা খলিস্তানপন্থীদের নিশানা করবে ও আমাদের কণ্ঠরোধ করবে, তবে তারা মুর্খের স্বর্গে বাস করছে। ওরা কল্পনাও করতে পারে না আমরা ওদের কত কাছে দাঁড়িয়ে রয়েছি। এবং যে কোনও সময়ে হামলা চালাতে সক্ষম।’ এই পোস্টের নিচে লেখা ছিল ‘খলিস্তান জিন্দাবাদ।’ পাশাপাশি বিস্ফোরণের এক ভিডিও টেলিগ্রামে প্রকাশ করা হয়।
উল্লেখ্য, কানাডার মাটিতে খলিস্তানি নেতা হরদীপ সিং নিজ্জর খুনে ভারত সরকারকে দায়ী করেছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। যদিও সেই ঘটনার দায় পুরোপুরি অস্বীকার করেছে ভারত। পালটা বলা হয়েছে, বার বার অনুরোধ করা সত্ত্বেও কানাডা সরকার নিজ্জর হত্যাকাণ্ডে ভারতের জড়িত থাকার কোনও প্রমাণ পেশ করেনি। অন্যদিকে, আমেরিকার এফবিআই-এর তরফে দাবি করেছে, ভারতে ‘নিষিদ্ধ’ সংগঠন ‘শিখ ফর জাস্টিস’-এর নেতা গুরপতবন্ত সিং পন্নুনকে হত্যার চেষ্টার ষড়যন্ত্রে যুক্ত প্রাক্তন ‘র’ এজেন্ট বিকাশ যাদব এবং তাঁর সঙ্গী নিখিল গুপ্ত। বিকাশকে মোস্ট ওয়ান্টেড ঘোষণা করেছে আমেরিকা। এ অভিযোগও ঝেড়ে ফেলেছে ভারত সরকার। একের পর এক এই ঘটনার জেরে দিল্লি বিস্ফোরণ ঘটিয়ে খলিস্তানিরা ভারত সরকারকে বার্তা দিল বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।