স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক,১৮ জানুয়ারি:
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির উপদেষ্টা ওলেকসি আরেস্তোভিচ নিজের বিতর্কিত এক বক্তব্যকে ঘিরে সমালোচনার মুখে পদত্যাগের প্রস্তাব দিয়েছেন। ওই মন্তব্যকে ‘মৌলিক ভুল’ উল্লেখ করে এর জন্য ইউক্রেনের জনগণের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন তিনি। খবর বিবিসির।গত শনিবার ইউক্রেনের দিনিপ্রো এলাকার একটি অ্যাপার্টমেন্ট ভবনে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়। এর কয়েক ঘণ্টা পর আরেস্তোভিচ বলেছিলেন, ইউক্রেনীয় বিমানবাহিনী ক্ষেপণাস্ত্রটিকে ভূপাতিত করার পরই এটি ওই ভবনের ওপর পড়েছে বলে মনে হচ্ছে। পরে ইউক্রেন কর্তৃপক্ষ বলেছে, রাশিয়ার তৈরি কেএইচ-২২ ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ভবনটিকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল। এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করার সক্ষমতা তাদের নেই।ক্ষেপণাস্ত্রটিকে ইউক্রেনীয় বাহিনী ভূপাতিত করেছে বলার পর ইউক্রেনীয়দের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার মধ্যে পড়েছেন আরেস্তোভিচ। কেউ কেউ বলছেন, এ কর্মকর্তা রুশ প্রচারণাকারীদের অবস্থানকে জোরালো করেছেন। আবার ইউক্রেনের পার্লামেন্ট সদস্যদের কেউ কেউ একটি পিটিশনে স্বাক্ষর করেছেন। ওই পিটিশনে আরেস্তোভিচকে সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে বরখাস্ত করার দাবি জানানো হয়েছে।আরেস্তোভিচ এর জন্য ক্ষমা চেয়েছেন। এক টেলিগ্রাম পোস্টে তিনি লিখেছেন—হতাহত ব্যক্তিদের স্বজন, দিনিপ্রোর বাসিন্দাসহ যারা আবাসিক ভবনে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা সম্পর্কে আমার করা ভুল মন্তব্যটি নিয়ে দুঃখ পেয়েছেন, তাদের সবার কাছে আমি আন্তরিকভাবে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। পরে নিজের পদত্যাগের ইচ্ছার কথা জানিয়ে একটি চিঠিও পোস্ট করেছেন আরেস্তোভিচ। সেখানে নিজের ওই বক্তব্যকে ‘মৌলিক ভুল’ বলে উল্লেখ করেন তিনি।
আরেস্তোভিচের পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়ে ভলোদিমির জেলেনস্কি এখনো কোনো মন্তব্য করেননি।সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আরেস্তোভিচ বেশ পরিচিত মুখ। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধসংক্রান্ত বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে নিজের ইউটিউব চ্যানেলে প্রতিদিনই হালনাগাদ তথ্য দেন আর আলোচনা করেন তিনি। চ্যানেলটিতে ১৬ লাখের বেশি সাবস্ক্রাইবার আছে। তাঁর ভিডিওগুলো দুই লাখের বেশি ভিউ হয়ে থাকে। এসব অনুষ্ঠানে তিনি রুশ ভাষায় কথা বলে থাকেন।আরেস্তোভিচের বক্তব্যকে ব্যবহার করে রুশ কর্মকর্তারাও ওই হামলার জন্য কিয়েভকে দায়ী করছেন।ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, আবাসিক ভবনে রাশিয়া হামলা চালায় না। ইউক্রেনের বিমানবাহিনীর কারণেই এমনটা হয়েছে।ইউক্রেনের কর্মকর্তারা বলছেন, শনিবারের ওই হামলায় এখন পর্যন্ত ৪৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। বেশ কয়েকজন নিখোঁজ। তবে তাদের জীবিত উদ্ধার করতে পারার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।কিয়েভ, খারকিভ ও ওদেসাতেও শনিবার হামলা হয়েছে। ইউক্রেনের সামরিক ও জ্বালানি অবকাঠামোকে এ হামলার লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।