স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১৫ জুলাই : এদিকে উমাকান্ত স্কুলে শিক্ষক স্বল্পতা রয়েছে, আবার শিক্ষক বদলি করেছে। ফলে পঠন-পাঠন লাটে উঠেছে।শনিবার সকালে স্কুলের সামনেই রাস্তা অবরোধে বসে অভিভাবকরা। অভিভাবকদের অভিযোগ স্কুলে প্রাতঃ বিভাগে মাত্র ৯ জন শিক্ষক রয়েছে। এর মধ্যে একজন শিক্ষক বদলি হয়েছেন। আরো একজন শিক্ষক আগামী আগস্ট মাসে অবসরে যাবেন। ফলে স্কুলে নিয়মিত পঠন পাঠন হয় না। স্কুলে ছাত্রদের উপস্থিতি থাকলেও ক্লাসে শিক্ষক আসেন না। দুটি ক্লাসের ছাত্র-ছাত্রীদের একই সাথে ক্লাস করাতে হয় বলে অভিযোগ অভিভাবকদের।
দীর্ঘদিন ধরে এভাবে চলছে শহরের প্রধান বনেদি স্কুলের পঠন পাঠন। তাই অবশেষে অভিভাবকেরা রাস্তা অবরোধ করতে বাধ্য হয়। অভিভাবকদের আরো বক্তব্য স্কুলে পঠনপাঠন সঠিক দিশায় নিয়ে যেতে শিক্ষক-স্বল্পতা যাতে মেটানো হয়। কিন্তু একাংশ অভিভাবকের বক্তব্য অনেকটাই ভিন্ন। সেসব অভিভাবকরা জানান, ঝলক স্যার নাকি স্কুল থেকে বদলি হয়ে গেছেন। তাই ঝলক স্যারের বদলি মেনে নিতে পারছে না একাংশ অভিভাবক মহল। তবে এদিন ঝলক স্যারের পরিবর্তে অন্য শিক্ষক বদলি করে শিক্ষক স্বল্পতা মেটানোর দাবি করেননি সেসব হাতে গোনা অভিভাবকরা। তাদের একটাই বক্তব্য স্কুল থেকে ঝলক স্যারকে ধর্মনগর কদমতলা স্কুলে নিয়ে যাওয়া যাবে না। কিন্তু সরকারি নিয়ম নীতি অনুযায়ী বদলি হওয়াটা স্বাভাবিক। এর পরিবর্তে অন্য শিক্ষক স্কুলে আসবে সেটাও স্বাভাবিক। কিন্তু ঝলক স্যারকে কেন স্কুল থেকে বদলি করা যাবে না তা নিয়ে এদিন প্রশ্নের দানা বেধেছে অনেকের মনে। সুতরাং সরকারি নিয়ম-নীতি ওলটপালট করে দিতে চাইছে না সেসব অভিভাবকরা ? এর পেছনে কোন ষড়যন্ত্র রয়েছে কিনা তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। দীর্ঘক্ষণ চলে স্কুলের সামনে পথ অবরোধ। খবর পেয়ে ছুটে আসে পশ্চিম থানার পুলিশ। পুলিশ অভিভাবকদের শিক্ষা দপ্তরের নিয়ে যাবে বলে আশ্বাস দিয়ে অবরোধ প্রত্যাহার করাতে সক্ষম হয়। পরে অবরোধ প্রত্যাহার করে শিক্ষা ভবনের সামনে গিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে বিক্ষোভ দেখায় অভিভাবকেরা। ডেপুটেশন প্রদান করা হয় দপ্তরের অধিকর্তা চান্দনী চন্দ্রনের কাছে।
ডেপুটেশনের পর অভিভাবকরা সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন ঝলক স্যারই নাকি স্কুলের মধ্যে একজন ভালো শিক্ষক রয়েছেন। ঝলক স্যারকে ছাড়া স্কুল চলবে না। তিনিই একমাত্র ছাত্রদের শিক্ষা দেওয়ার মতো শিক্ষক। এই স্যার ছাড়া নাকি বাচ্চাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। শিক্ষা দপ্তরের অধিকর্তার সাথে কথা বলার পর তিনি আশ্বস্ত করেছেন আগামী ১০ দিন ঝলক স্যারকে স্কুলে রাখা হবে বলে আশ্বস্ত করেন। নাহলে শিক্ষামন্ত্রীর দ্বারস্থ হবে বলে জানান অভিভাবকরা।
কিন্তু স্কুলে ঝলক স্যারের পরিবর্তে অন্য স্যার দেওয়ার দাবি কেন করেনি অভিভাবকরা, তা নিয়ে শিক্ষা দপ্তরের সৃষ্টি হয়েছে গুঞ্জন। শুরু হয়েছে বিষয়গুলি খতিয়ে দেখার কাজ। কারণ শহরের স্কুলগুলিতে যুগ যুগ ধরে বহু শিক্ষক শিক্ষিকা দায়িত্ব পালন করার পর তারা সংগঠন করার দিকে এগিয়ে যায়। পাশাপাশি বাড়িঘরে চলে প্রাইভেট টিউশন। আর সেসব শিক্ষকের কাছে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াতে ছুটেন অভিভাবকেরা। আর এই ধরনের এই রাজত্ব বাম আমল থেকে রাজ্যে স্কুল গুলিতে প্রত্যক্ষ করা গেছে। আর এখন যখন সেসব শিক্ষক শিক্ষিকারা বাড়ির কাছে স্কুল থেকে সরকারি নিয়ম নীতি অনুযায়ী বদলি হন তখন বিভিন্ন কায়দায় ছাত্রছাত্রীদের এবং অভিভাবকদের উস্কে দিয়ে আন্দোলন প্রত্যক্ষ করা যায়। তবে এদিনের আন্দোলনের ঝলক শুধু ঝলক স্যারই।